ড্রাইভার সংকটে টোকিও থেকে ওসাকা পর্যন্ত ‘কনভেয়র বেল্ট রোড’ নির্মাণের পরিকল্পনা জাপানের
টোকিও থেকে ওসাকা পর্যন্ত দ্রুতগতির বুলেট ট্রেন চালুর ছয় দশক পর এবার কার্গো পরিবহনেও বিপ্লব আনতে যাচ্ছে জাপান। 'কনভেয়র বেল্ট রোড' নামে একটি স্বয়ংক্রিয় পরিবহন ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা করছে দেশটি, যা রাজধানী টোকিও থেকে ওসাকা পর্যন্ত ৫১৫ কিলোমিটার পথ জুড়ে পণ্য পরিবহন করবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান ডেলিভারি চাহিদা মেটানো এবং শ্রমশক্তির ঘাটতি মোকাবিলা করার আশা করা হচ্ছে। পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউরি এন্ডো বলেছেন, এই সড়কব্যবস্থা পরিবেশবান্ধব এবং পণ্য পরিবহনের জন্য আলাদা লেন তৈরি করা হবে। এটি একটি চালকবিহীন ও ২৪ ঘণ্টার স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম।
এ সড়ক কার্বন নিঃসরণ কমাতেও সাহায্য করবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
ক্রমবর্ধমান ডেলিভারি পরিষেবার চাহিদা মোকাবিলার অংশ হিসেবেই এ উদ্যোগ নিয়েছে জাপান। বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে এটি ডেলিভারি ড্রাইভার সংকট কমানোর পাশাপাশি শ্রমশক্তির অভাব মেটাতেও সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জাপান সরকার প্রকাশিত একটি কম্পিউটার গ্রাফিক ভিডিওতে দেখা যায়, প্রতিটি বড় প্যালেটের মাধ্যমে এক টন পর্যন্ত মালামাল পরিবহন করা যাবে। এসব প্যালেট রাস্তার মাঝখানের লেনে চলবে, যেখানে দু'পাশে থাকবে গাড়ির জন্য পথ। মালামাল লোড এবং আনলোডের জন্য থাকবে স্বয়ংক্রিয় ফর্কলিফট। এছাড়া, বিমানবন্দর, রেলস্টেশন এবং বিভিন্ন বন্দর এই লেনের সাথে সংযুক্ত থাকবে।
২০২৭ বা ২০২৮ সালের দিকে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হতে পারে এবং পুরো প্রকল্প চালু হতে সময় লাগবে ২০৩০ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত। এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, টোকিও থেকে ওসাকা পর্যন্ত এই সড়ক নির্মাণে প্রায় ৩ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ইয়েন খরচ হতে পারে।
বর্তমানে জাপানের ৯০ শতাংশ কার্গো পরিবহন ট্রাকের মাধ্যমে হয়, এবং চালকের অভাব ক্রমশ বাড়ছে। নতুন শ্রম আইন চালকদের ওভারটাইম সীমিত করার ফলে এই সংকট আরও তীব্র হয়েছে। নতুন এই সড়ক প্রতিদিন ২৫ হাজার ট্রাক চালকের সমান কাজ করতে পারবে বলে অনুমান।