অপ্রতিরোধ্য এমবাপ্পে, পোল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে শেষ আটে ফ্রান্স
কিলিয়ান এমবাপ্পের জাদুতে পোল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠে গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। কাতারের আল থুমামা স্টেডিয়ামে পোলিশদেরকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ফ্রান্স।
অলিভিয়ের জিরুর রেকর্ড ভাঙার দিনে আলো ছড়িয়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। শেষ ষোলোর ম্যাচে পোল্যান্ডকে সহজেই হারিয়ে নেদারল্যান্ডস এবং আর্জেন্টিনার পর তৃতীয় দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
১৯৮৬ বিশ্বকাপের পর এটিই ছিল পোল্যান্ডের প্রথম নক-আউট ম্যাচ, উজ্জীবিত হয়ে বর্তমান ফ্রান্সের পরীক্ষা নেবে কী বরং বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সামনে দাঁড়াতেই পারলেন না রবার্ট লেভানডোভস্কিরা।
ফ্রান্সের ম্যাচ জয়ের নায়ক কিলিয়ান এমবাপ্পে এবং অলিভিয়ের জিরু। ম্যাচের প্রথম গোল করে থিয়েরি অঁরিকে ছাপিয়ে ফ্রান্সের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন জিরু। প্রথম গোলে সহায়তা করা এমবাপ্পে নিজে করেছেন দু'টি গোল, যার সবকটিই চোখ ধাঁধানো।
ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ফ্রান্সের তোপের সামনে টিকতে পারেনি পোল্যান্ড। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের মতো খেলেই পোলিশদের উড়িয়ে দিয়েছে দিদিয়ের দেশমের শিষ্যরা। যদি প্রথম গোল পেতে ফ্রান্সকে অপেক্ষা করতে হয় ৪৪ মিনিট পর্যন্ত।
এমবাপ্পের পাস থেকে বুদ্ধিদীপ্ত ফিনিশে ফ্রান্সকে এগিয়ে দেন অলিভিয়ের জিরু, যার মাধ্যমে অঁরির রেকর্ড ছাড়িয়ে যান তিনি। প্রথমার্ধে পোলিশদের বলার মতো আক্রমণ ছিল কেবল একটি, ৩৫ মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে লেভানডোভস্কির শট গোললাইন থেকে ফেরান রাফায়েল ভারানে।
দ্বিতীয়ার্ধে যেন আরো ক্ষুধার্ত হয়ে উঠে ফ্রান্স। আক্রমণের তোড়ে ভেসে যায় পোলিশদের রক্ষণ, যদিও এবারও গোল পেতে ৭২ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় তাদের, পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা কিলিয়ান এমবাপ্পে উসমান ডেম্বেলের পাস থেকে ডান পায়ের তীব্র জোরালো শটে শেজনিকে পরাস্ত করেন।
কাতার বিশ্বকাপে এটি ছিল এমবাপ্পের ৪র্থ গোল, যার ফলে গোল্ডেন বুট জেতার লড়াইয়ের এখন তিনি সবার উপরে।
ম্যাচের ৯০ মিনিটে আবারো গোল করে ফ্রান্স, আবারো নিজের ঝলক দেখান এমবাপ্পে, বক্সের ভেতর থেকে দুর্দান্ত শটে শেজনিকে ৩য় বারের মতো ভূপাতিত করেন তিনি। ৫ গোল নিয়ে কাতার বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে গেলেন তিনি।
ম্যাচের শেষ মিনিটে ভিএআরের কল্যাণে পেনাল্টি পায় পোল্যান্ড, লেভানডোভস্কির শট প্রথমে ঠেকিয়ে দেন ফ্রান্স অধিনায়ক এবং গোলরক্ষক লরিস, কিন্তু শট নেওয়ার আগেই তিনি নিজের লাইন ছেড়ে বেরিয়ে আসায় আবারও পেনাল্টি নেওয়ার সুযোগ পান লেভানডোভস্কি। এবার সান্ত্বনাসূচক গোল করে হারের ব্যবধান কমান তিনি।
এই দুই গোলের ফলে বিশ্বকাপে মোট ৯ গোল হয়ে গেল কিলিয়ান এমবাপ্পের। ১৯ বছর বয়সে রাশিয়া বিশ্বকাপে করেছিলেন ৪ গোল, এবার শেষ ষোলো পেরোতেই করে ফেলেছেন ৫ টি। বিশ্বকাপ ইতিহাসে মিরোস্লাভ ক্লোসার সর্বোচ্চ ১৬ গোলের রেকর্ড যে এখনই হুমকির মুখে সেটি না বললেও চলছে।
শেষ আটে ফ্রান্স মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড এবং সেনেগালের ম্যাচের মধ্যকার জয়ী দলের বিপক্ষে।