বুয়েন্স এইরেসে জনস্রোত, হেলিকপ্টার দিয়ে সরিয়ে নিতে হলো মেসিদের
৩৬ বছর পর দল হয়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। এই দিনটির জন্য চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় ছিলেন তারা। তাই অবশেষে যখন সেটির দেখা তারা পেলেন, আনন্দের বাঁধ ভেঙ্গে যাবে তা অনুমেয়ই ছিল। কিন্তু তাই বলে, জনস্রোতের কারণে খেলোয়াড়রা নিজেদের উদযাপন সম্পন্ন করার আগেই তাদের চলে যেতে হবে, এমনটা নিশ্চয়ই কল্পনা করেনি কেউ।
আর সেটিই ঘটেছে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের উৎসব র্যালিতে। আগের রাতে দেশে ফিরেছিলেন মেসি-স্কালোনিরা। মাঝরাত হওয়া সত্ত্বেও আর্জেন্টাইনদের উপস্থিতির কমতি ছিল না। লাখো জনগণের উপস্থিতিতে ট্রফি নিয়ে ছাদখোলা বাসে চড়ে ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত বুয়েন্স এইরেসের রাস্তায় ঘুরে বেড়ান মার্তিনেস-দি মারিয়ারা। তবে আসল উৎসব জমিয়ে রাখা ছিল সকালের জন্য।
সূর্যের আলো উঁকি দেওয়ার সাথে সাথেই বুয়েন্স এইরেসের রাস্তায় জড়ো হতে থাকেন আর্জেন্টাইনরা। সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় সবকিছু বন্ধ করে উদযাপনে যোগ দিতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসতে থাকেন তারা। সময় গড়ানোর সাথেসাথে সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে।
এক পর্যায়ে বুয়েন্স এইরেসের রাস্তা মানুষের বন্যায় ভেসে যাচ্ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, একইসময়ে একসাথে প্রায় ৪০ লাখ আর্জেন্টাইন উপস্থিত ছিলেন তাদের নায়কদের বরণ করে নিতে খেলোয়াড়দের বহনকারী ছাদখোলা বাসের পেছন পেছন দৌড়াতে থাকেন সবাই।
এই উৎসবমুখর পরিবেশ হয়তো অবিশ্বাস্যই লাগছিল মেসি-আলভারেজদের কাছে। যদি উপভোগ করছিলেন তারা, দেশের মানুষকে অসীম আনন্দের সাগরে ভাসিয়েছেন যে নায়কেরা, তাদের জন্য ভালোবাসার কমতি ছিল না আর্জেন্টাইনদের।
তবে সেই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি খেলোয়াড়দের জন্য। ছাদখোলা বাসের উপর বিভিন্ন জায়গা থেকে লাফিয়ে পড়ার চেষ্টা করছিলেন অনেকেই। খেলোয়াড় এবং সমর্থক, উভয়ের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে হেলিকপ্টার যোগে দলের সবাইকে সরিয়ে নেওয়া হয় সেখান থেকে।
হেলিকপ্টার থেকেই জনগণের উল্লাস দেখেন তারা, ধীরে ধীরে উৎসবের স্থান থেকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় মেসিদের। তবে বিশ্বকাপ জয়ের মুহূর্তের মতো এই দিনটিও যে নিজেদের মনের গভীরে গেঁথে যাবে তাদের, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।