বোলারদের নিয়ে ব্যাটিংয়ের ক্লাস বিসিবির
মাঝে আর একদিন, এরপর শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের মধ্যকার একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি। মিরপুরে অনুষ্ঠেয় এই ম্যাচের জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে দুই দল। স্বাভাবিক অনুশীলন তো চলছেই, শেষের দিকের ব্যাটসম্যান নিয়েও বিশেষভাবে কাজ করছেন বাংলাদেশের কোচরা।
বিশেষ এই ক্লাসের ছাত্র মূলত বোলাররা। বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ইনডোরে ব্যাট হাতেই বেশি সময় কেটেছে আবু জায়েদ রাহি, এবাদত হোসেন, নাঈম হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদদের।
মিরাজ অলরাউন্ডার হওয়ায় তাকে নিয়ে কোচদের সেভাবে কাজ করতে দেখা যায়নি। বাকিদের পেছনে বেশি সময় ব্যয় করেছেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, ব্যাটিং পরামর্শক নেইল ম্যাকেঞ্জি এবং স্পিন পরামর্শক ড্যানিয়েল ভেট্টরি।
শেষের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে মাঝেমধ্যে কাজ কতে দেখা যায় বাংলাদেশের কোচদের। কিন্তু এবার প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের মতো মাঝারি দল হওয়ার পরও অতি সতর্ক বাংলাদেশ। এই সতর্কতার মূল কারণ পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে বাংলাদেশের ছন্নছাড়া ব্যাটিং। ইনিংস ব্যবধানে হার মানা ওই ম্যাচে আমাদের ব্যাটসম্যানরা রান তুলতে রীতিমতো হাবুডুবু খেয়েছেন। তবু শেষ রক্ষা হয়নি, হতশ্রী ব্যাটিংয়ে মেনে নিতে হয় বড় হার।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাই বোলারদের কাছ থেকেও ব্যাটসম্যানের সার্ভিস চায় বাংলাদেশ দল, হোক সেটা সামান্য। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা থেকে মিরপুর স্টেডিয়ামে অনুশীলন শুরু করে বাংলাদেশ দল। কিছুটা সময় ওয়ার্ম আপ, ফুটবল খেলে এবাদত হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসান গ্লাভস-প্যাট পরে হাঁটা দেন ইনডোরের দিকে।
তাদের সাথে সাথে ইনডোরে যান রাসেল ডমিঙ্গো ও ম্যাকেঞ্জিও। তখনও মিরপুরের মূল মাঠে দাঁড়িয়ে ভেট্টরি। কিছুক্ষণ পর এই নিউজিল্যান্ডের এই কিংবদন্তি স্পিনারও ইনডোরে গিয়ে হাজির হন। তিনটি নেটে পালাক্রমে ব্যাটিং করতে থাকেন এবাদত, রাহি, মিরাজ ও নাঈম।
ডমিঙ্গো সেভাবে নজর না দিলেও নেটের পাশেই দাঁড়িয়ে বল ফেরানো, বল ছেড়ে দেওয়ার রাস্তা দেখিয়ে দিচ্ছিলেন ম্যাকেঞ্জি ও ভেট্টরি। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ব্যাটিং করেন এই চার বোলার। তাদের শেষ হলে মুস্তাফিজ ও তাসকিন নেট সেশনে অংশ নেন। এই দুই পেসারও অনেকটা সময় ব্যাটিং করেন।
নেটে ব্যাটিং শেষে ইনডোর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন একজন পেসার। ব্যাটিং সেশন কেমন হলো প্রশ্ন করতেই কিছুটা সময়ের জন্য থামলেন তিনি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে অনেকটা মজার ছলেই বললেন, ‘দেখি এবার আমরা কিছু করতে পারি কি না।’
তার মজা করে বলা এই একটি বাক্য অবশ্য অনেক কিছু বলে দেয়। বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ যে দুর্দশার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, যেন সেটাই মনে করিয়ে দিতে চাইলেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টে ব্যাট হাতে উল্টো পথে হাঁটা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা পাকিস্তানে সফরেও ব্যর্থতার বৃত্তে ছিলেন।
বোলারদের ব্যাটিং অনুশীলন করানোর মাঝেও লিটন দাসকে নিয়ে বিশেষ মনোযোগী ছিলেন নেইল ম্যাকেঞ্জি। যদিও এটা সব সময়ের অতি চেনা দৃশ্য। নেটে লিটন ব্যাটিং করলে সেদিকেই নজর থাকে প্রোটিয়া এই কোচের। এদিনও ব্যতিক্রম হয়নি।
কয়েকটা বল খেলার পরই এগিয়ে গিয়ে কিংবা কাছে ডেকে লিটনের বডি মুভমেন্ট, ব্যাট চালানোর ধরন নিয়ে কথা বলছিলেন ম্যাকেঞ্জি। তাদের এই রসায়ন যে বেশ পুরনো, সেটা আলোচনার ধরন দেখেই বোঝা যাচ্ছিল।
বোলারদের ব্যাটিং অনুশীলনের দিনে নেটে ঘাম ঝরিয়েছেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। ছিলেন মুশফিকুর রহিমও। পাকিস্তান সফর থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নভেম্বরের পর জাতীয় দলের অনুশীলনে যোগ দিলেন।