শেষ মুহূর্তের গোলে পয়েন্ট হারাল আর্জেন্টিনা
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/06/09/messi_1.jpg)
শুরু আর শেষের মধ্যে থাকলো বিশাল পার্থক্য। যে ছন্দে ম্যাচের শুরু করলো আর্জেন্টিনা, শেষটায় তা থাকলো না। তাই আট মিনিটের মধ্যেই দুবার এগিয়ে গিয়েও লাভ হলো না। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান কমানো কলম্বিয়া শেষ মুহূর্তে গিয়ে করলো আরও একটি গোল। দারুণ শুরু করা আর্জেন্টিনা শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়লো ড্র নিয়ে।
ল্যাটিন অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের খেলায় বাংলাদেশ সময় বুধবার ভোরে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করেছে লিওনেল মেসির দল। আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করেন ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো ও লেয়ান্দ্রো পারাদেস। কলম্বিয়ার লুইস ফার্নান্দো মুরিয়েল ফ্রুতো পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান কমান। একেবারে শেষ মুহূর্তে মিগুয়েল বোর্হার গোলে সমতায় ফেলে স্বাগতিকরা।
কাতার বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ৬ ম্যাচের ৩টিতে জয় পাওয়া আর্জেন্টিনার এটি তৃতীয় ড্র। দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ানো কলম্বিয়া ৬ ম্যাচে ২টি জয় জয় পেয়েছে, দুটি ড্র ও দুটি ম্যাচে হেরেছে তারা।
বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে কলম্বিয়ার বিপক্ষে আর্জেন্টিনার দারুণ রেকর্ড। দেশটির বিপক্ষে শেষ ১৬ ম্যাচের মধ্যে আর্জেন্টিনার জয় ১০টিতে। এই রেকর্ডে আরও একটি জয় যোগ হতে পারতো। কিন্তু কলম্বিয়ার ঘরের মাঠে দারুণ শুরু করেও শেষ মুহূর্তে খেই হারানোয় তা হলো না।
ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাঁজতেই বল নিয়ে কলম্বিয়ার রক্ষণভাগে হানা দিতে শুরু করে লিওনেল মেসির দল। গোলের দেখা পেতে সময় লাগেনি। ৩ মিনিটেই এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ডি-বক্সের বেশ দূর থেকে দারুণ এক ফ্রি কিক নেন মিড ফিল্ডার রদ্রিগো ডি পল। ফ্রি কিকে হেড নিয়ে বল জালে জড়ান আর্জেন্টিনার হয়ে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা সেন্টার ব্যাক ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো।
দ্বিতীয় গোলের দেখা পেতেও সময় নেয়নি ডিয়েগো ম্যরাডোনার দেশ। এবার নায়ক লেনান্দ্রো পারাদেস। কলম্বিয়ার ডি-বক্সে বল নিয়ে জটলা পাকে। সেখান থেকে বল নিয়ে দুজনকে ফাঁকি দিয়ে বাঁ পায়ের শটে গোল আদায় করে নেন পিএসজির হয়ে খেলা এই মিড ফিল্ডার।
২ গোল হজম করে মরিয়া হয়ে ওঠে কলম্বিয়া। আক্রমণ সাজাতে শুরু করে ঘরের মাঠের দলটি। ১৩তম মিনিটে কর্নার পায় তারা। জুয়ান কোয়াদরাদোর নেওয়া কর্নার শটে হেড নেন কলম্বিয়ার সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার উইলিয়াম টেসিলো। কিন্তু আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেস সহজেই বল তালুবন্দী করেন।
২৩তম মিনিটে একাই একটি সম্ভাবনা তৈরি করেন পুরো ম্যাচে দারুণ খেলা জুয়ান কুয়াদরোদো। আর্জেন্টিনার সেন্ট্রাল মিড ফিল্ডার জিওভানি লো চেলসোর কাছ থেকে ছোঁ মেরে বল কেড়ে নিয়ে আর্জেন্টিনার ডি বক্সে ঢুকে ক্রস করেন কুয়াদরাদো। কর্নারের বিনিময়ে এ যাত্রায় বিপদমুক্ত হয় সফরকারীরা।
২৭তম মিনিটে বল বাড়ান লো চেলসো। বল নিয়ে কলম্বিয়ার ডি-বক্সে ঢুকে শট নেন পুরো ম্যাচে অসাধারণ ছন্দে খেলা আর্জেন্টিনার মিড ফিল্ডার লওতারো মার্টিনেস। তার শট ফিরিয়ে দেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ডেভিড অস্পিনা। ফিরে আসা বলে শট নেন ফরোয়ার্ড নিকোলাস গঞ্জালেস। কিন্তু তার শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৩৩তম মিনিটে গিয়ে বড় ক্ষতিটা হয় আর্জেন্টিনার। কলম্বিয়ার কর্নার শটের বল লাফিয়ে ধরতে গিয়ে ডেভিনসন সানেচেসের বাধা পান আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেস। অনেকক্ষণ মাঠেও চিকিৎসা দেওয়ার পর খেলার অবস্থায় ফেরা হয়নি অ্যাস্টন ভিলার এই গোলরক্ষকের, মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
৪২তম মিনিটে ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। ডি-বক্সের একটু বাইরে থেকে দারুণ শট নেন মেসি। আর্জেন্টাইন অধিনায়কের শট ফিরিয়ে দেন পুরো ম্যাচে বেশ কয়েকবার কলম্বিয়াকে বিপদ থেকে বাঁচানো গোলরক্ষক অস্পিনা। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে দারুণ সুযোগ পান কলম্বিয়ার স্ট্রাইকার ডুভান জাবাতা। কিন্তু তার নেওয়া শট অনেক উপর দিয়ে চলে যায়।
নতুন ছন্দে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করে কলম্বিয়া। চেষ্টার ফল মেলে ৪৯তম মিনিটে। এ সময় আর্জেন্টিনার ডি বক্সে মাতেয়াস উরিবে ওতামেন্টি ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিক থেকে গোল করেন ফার্নান্দো মুরিয়েল ফ্রুতো।
৫৭তম মিনিটে আবারও এগিয়ে যেতে পারতো আর্জেন্টিনা। ডি-বক্সের একটু বাইরে থেকে চমৎকার ফি কিক নেন মেসি। এবার অস্পিনা বাধায় গোলের দেখা পাননি মেসি। ৬৫তম মিনিটে মেসির পাস খুঁজে নেয় মার্টিনেসকে। দারুণ শট নিয়েও কাজ হয়নি। দেয়াল তুলে দাঁড়ানো অস্পিনা এবারও দলকে বিপদমুক্ত করেন। ৭৭ মিনিটেও মার্টিনেসের শট ফেরান অস্পিনা।
বারবার দলকে বাঁচিয়ে যেতে থাকেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক। ৮৪তম মিনিটে কলম্বিয়ার ডি-বক্সের মধ্য থেকে শট নেন মেসি। এবারও কলম্বিয়ার ত্রাতা সেই অস্পিনা। মনে হচ্ছিল ২-১ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা। কিন্তু যোগ করা সময়ে (৯৪ মিনিট) কুয়ারদাদোর বাড়ানো বলে হেড করে গোল করেন মিগুয়েল বোর্হা। এর মিনিট খানেক পরই শেষের বাঁশি বাজান রেফারি।