অনিন্দ্য সুন্দর লিটন, দারুণ সাকিবে বাংলাদেশের লড়াকু সংগ্রহ
যেভাবে শুরু হয়েছিল, তাতে ভরকে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। সেখান থেকে হাল ধরলেন অনিন্দ্য সুন্দর ব্যাটিং করা লিটন কুমার দাস। পরে যোগ দিয়ে একই সুরে গাইলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। এ দুজনের চোখ ধাঁধানো ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াইয়ের পুঁজি পেল বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলে ওভালে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ৬ উইকেটে ১৭৩ রান তুলেছে বাংলাদেশ। যা টি-টোয়েন্টিতে বাবর আজমদের বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। টানা তিন ম্যাচ হেরে ফাইনালে খেলার লড়াই থেকে ছিটকে যাওয়া বাংলাদেশ আরও বড় সংগ্রহ পেতে পারতো। কিন্তু দুই ওপেনারের মন্থর ব্যাটিং ও বাজে শুরুর কারণে সেটা সম্ভব হয়নি।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে চরম হতাশার শুরু হয় বাংলাদেশের। পাকিস্তানের পেসার নাসিম শাহর করা প্রথম ওভার থেকে কোনো রান তুলতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। এক রান আসে ওয়াইড থেকে। দীর্ঘদিন পরে দলে ফেরা সৌম্য সরকার প্রথম বলেই ৩ রান নিলেও হতাশ করে সাজঘরে ফেরেন। ৪ বলে ৪ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান বাজে শটে ক্যাচ তুলে আউট হন।
শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ সৌম্যকে হারিয়ে আরও বিপদে পড়ে। ৩ ওভারে মাত্র ১০ রান তোলে তারা। চতুর্থ ওভারে গিয়ে অবস্থার পরিবর্তন আসে। মোহাম্মদ ওয়াসিমের করা প্রথম বলেই চার মারেন লিটন। তবে এই শটটি খেলার সময়ে উরুতে টান পড়ে তার, মাঠে হাজির হন ফিজিও। অবশ্য চিকিৎসা নিয়ে আবার ব্যাটিং শুরু করেন লিটন। এই ওভারে আরও একটি চারসহ মোট ১০ রান তোলেন তিনি।
৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২০। একেবারেই ধীর শুরু করা শান্ত পঞ্চম ওভারে গিয়ে চড়াও হন। নবম বলে প্রথম রান নেওয়া বাংলাদেশ ওপেনার হাসনাইনকে চার মেরে শুরু করেন। পরের বলে এক রান নিয়ে লিটনকে স্ট্রাইক দিলে ঝড় তোলেন তিনি। টানা দুই চার মারেন লিটন। এই ওভারের শেষ বলে জীবন পান লিটন। ২২ রানে তিনি ক্যাচ তুললেও পয়েন্টে দাঁড়ানো শান মাসুদ তা তালুবন্দী করতে পারেননি।
পাওয়ার প্লের ৬ ওভার থেকে ৪১ রান পায় বাংলাদেশ। শান্তর বিদায়ের পর দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন লিটন ও সাকিব। অষ্টম ওভারে মোহাম্মদ নওয়াজের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে ১৭ রান তুলে নেন তারা। দারুণ ব্যাটিংয়ে তৃতীয় উইকেটে ৫৫ বলে ৮৮ রান যোগ করেন লিটন-সাকিব। তাদের দারুণ ব্যাটিংয়ে ১২.১ ওভারে ১০০ পূর্ণ হয় বাংলাদেশের। এর মধ্যে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন। ৩১ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৫০ পূর্ণ করেন তিনি।
দলীয় ১২৯ রানে লিটন বিদায় নেন। ফেরার আগে ৪২ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৯ রানের চোখ ধাঁধানো এক ইনিংস খেলেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে এটাই তার সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। লিটনের বিদায়ের পর সাকিবের ব্যাটেই এগিয়েছে বাংলাদেশ। দারুণ সব শটে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বাদশ হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৪২ বলে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৮ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন। আফিফ হোসেন ধ্রুব ১১ রান করেন। পাকিস্তানের নাসিম শাহ ও মোহাম্মদ ওয়াসিম ২টি করে উইকেট নেন।