বাবর-রিজওয়ানের ‘ক্লাসে’ মনোযোগী শ্রোতা লিটন
বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তারা। একজন টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যানের র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে, আরেকজন তিন নম্বরে। বাকি দুই ফরম্যাটেও তারা তুলনীয়। তরুণ ব্যাটসম্যানদের কাছে মোহাম্মদ রিজওয়ান, বাবর আজমরা আদর্শ। উইকেটে নামলেই রানের ফোয়ারা বইয়ে দেওয়া পাকিস্তানের এই দুই ব্যাটসম্যানকে হয়তো অনুসরণ করেন লিটন কুমার দাসও। সেটা বোঝা গেল আজ ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের পর।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। দল হারলেও লিটন করেছেন অনিন্দ্য সুন্দর ব্যাটিং। বাংলাদেশের ডানহাতি এই ওপেনার ৪২ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৯ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন। বড় লক্ষ্য তাড়ায় পাকিস্তানকে জেতানোর নায়ক রিজওয়ানও ৫৬ বলে ৬৯ রান করেন। বাবর করেন ৪০ বলে ৫৫ রান। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান চলাকালীন এই তিনজনকে দেখা গেল এক জায়গায়।
দূর থেকে মনে হতে পারে আড্ডা দিচ্ছেন তারা। কিন্তু ব্যাপারটা শুধু আলাপচারিতাতে ছিল না। 'সিরিয়াস' আলোচনায় পরামর্শকের ভূমিকায় দেখা গেছে বাবর-রিজওয়ানকে। যেখানে লিটন ছিলেন মনোযোগী শ্রোতা। ব্যাটিংয়ের বিভিন্ন দিক, মানসিক শক্তি সঞ্চয়ের উপায়সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ ওপেনারকে পরামর্শ দিচ্ছিলেন তারা। কৌতূহলী লিটনও রাখছিলেন প্রশ্ন।
তিনজনের এই মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দী করে সামাজিকে যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের পেজে পোস্ট করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। ভিডিওতে দেখা যায় লিটনকে বাবর বলছেন, 'বাইরের কথা যতো কম শুনবে, নিজের বিশ্বাস ততো শক্ত থাকবে। কারণ, না চাইলেও নিজের মধ্যে একটা সন্দেহ-সংশয় চলেই আসে। নিজে ভালো খেলতে থাকলেও কেউ হয়তো কিছু একটা বলে দিল, তখন নিজের মধ্যে ভাবনা চলে আসে; সব ঠিক আছে তো!'
মানসিকভাবে দৃঢ় থাকার গুরুত্ব বুঝিয়ে রিজওয়ান লিটনকে বলেন, ''কখনো শূন্য হবে, ১০ রানে আউট হবে, সেঞ্চুরিও হবে। আমি একটা জিনিস বিশ্বাস করি, কঠোর পরিশ্রম ছাড়া কোনো কিছু সম্ভব নয়। হ্যাঁ, নিজ নিজ দলে কেউ ব্যতিক্রম কিছু করলে তার ফলও আলাদা হতে পারে। আবার কেউ থাকে সাকিবের মতো শক্ত মানসিকতার। তুমিও জানো, আমিও জানি এটি খেলার অংশ যে ক্যাচ ছুটবে, সেঞ্চুরি করবে, বড় খেলোয়াড় হয়ে যাবে। লিটন দাস বড় খেলোয়াড়, রিজওয়ানের ক্যাচ ছুটেছে, ম্যাচ জিতে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়ে গেছে। কিন্তু সেটি ক্যাচ হয়ে গেলে এসব কিছুই হতো না।'
এরপর রিজওয়ানের কাছে লিটন জানতে চান, রান পেলে মানসিক অবস্থা ভালোই থাকে। কিন্তু খারাপ সময়ে কীভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়? পাকিস্তান ওপেনার বলেন, 'নিজেকে একটি জিনিসের জন্য প্রস্তুত করে ফেলো। আমার জীবনে ১০টি ইনিংস এমন হবে, যেখানে আমি আটকে যাব। আবার ১০টি ইনিংস এমন হবে, যেখানে ১২ বলে ২০ লাগলেও আমি করে ফেলব। কিন্তু বড় খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে এমন হয় যে তারা এতো শান্ত থাকে যে ১০ ইনিংসের বদলে ৪টিতে ব্যর্থ হয়, বাকি ৬টিতে সফল হয়ে যায়।'