দাপট দেখালো কানাডা, জিতলো বেলজিয়াম
ম্যাচের পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে ফলাফল অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। ম্যাচ শুরুর বাঁশি থেকে শেষ পর্যন্ত; পুরোটা সময় দাপট দেখালো কানাডা। একের পর এক আক্রমণে বেলজিয়ামের রক্ষণভাগ কাঁপিয়ে দিলো উত্তর আমেরিকার দেশটি। কিন্তু ফিনিশিংয়ের ব্যর্থতায় জালের ঠিকানা মিললো না। এমনকি পেনাল্টি পেয়েও গোল আদায় করতে পারলো না তারা। পেনাল্টি বাঁচিয়ে বেলজিয়ানদের নায়ক হলেন গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। কানাডার দাপট সামলে গোছালো আক্রমণে কাঙ্খিত জয় তুলে নিয়েছে বেলজিয়াম।
আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে কানাডাকে ১-০ গোলে হারিয়ে কাতার বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে বেলজিয়াম। পুরোটা সময় কানাডার আক্রমণ সামলাতে ব্যস্ত থাকা বেলজিয়ামের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন মিচি বাতসুয়াই। প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে তার করা গোলের ব্যবধান ধরে রেখে হাসিমুখে মাঠ ছাড়ে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বর দলটি।
শক্তি-সামর্থ্যে কানাডার চেয়ে অনেক এগিয়ে বেলজিয়াম, র্যাঙ্কিংয়েও অনেক তফাৎ। কানাডার চেয়ে ৩৯ ধাপ এগিয়ে তারা, কিন্তু ম্যাচে দেখা গেছে উল্টোটা। কাগজে-কলমের পার্থক্যকে দূরে সরিয়ে রেখে গতবারের সেমি-ফাইনালিস্টদের শাসন করে গেছে কানাডা। বল দখলের লড়াইয়ে বেলজিয়াম এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে সেরা দলের নাম কানাডা। গোলমুখে ২২টি শট নেয় তারা, ৩টি ছিল লক্ষ্যে। সেখানে বেলজিয়াম শট নেয় ৯টি, যার ৩টি ছিল লক্ষ্যে।
ম্যাচের দশম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো কানাডা। ডি-বক্সে হাত দিয়ে বল ছুঁয়ে হলুদ কার্ড দেখেন বেলজিয়ান মিডফিল্ডার ইয়ানিক কারাসকো, পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু কানাডার আলফুস ডেভিসের নেওয়া দুর্বল শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন বেলজিক গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। শুরুর চাপ কাটিয়ে ২২তম মিনিটে দারুণ একটি আক্রমণ সাজায় বেলজিয়াম। বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে ইডেন হ্যাজার্ড ডি-বক্সে বল বাড়ান ইউরি তিলেমান্সকে। তার পাস থেকে শট নেন বাতসুয়াই, কর্নারের বিনিময়ে বাঁচে কানাডা।
মনে হয়েছিল খেলায় ফিরেছে বেলজিয়াম। আদতে তা নয়, উল্লেখযোগ্য ওই এক আক্রমণেই তা সীমাবদ্ধ থাকে। কানাডার আক্রমণ সামলাতেই সময় পেরিয়ে যায় তাদের। প্রথমার্ধে কানাডা ৪৪ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশে ১৪টি শট নেয় কানাডা। বিপরীতে বেলজিয়ামের শট ছিল মাত্র ৪টি। যদিও এর মাঝেই আসল কাজটি সেরে নেয় তারা। ৪৪তম মিনিটে মাঝমাঠের অনেক আগে থেকে উঁচু করে থ্রু বল বাড়ান টবি আল্ডারভাইরেল্ড, আর প্রতিপক্ষের দুজনকে ফাঁকি দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে বল জালে জড়ান বাতসুয়াই।
পিছিয়ে পরে কানাডার আক্রমণের ধার যেন আরও বাড়ে। দুই মিনিট পরই দুর্দান্ত আক্রমণ সাজায় তারা। কিন্তু নিজেদের ভুলেই সমতায় ফেরা হয়নি তাদের। সতীর্থের ক্রস ছয় গজ বক্সের বাইরে অবিশ্বাস্যভাবে উড়িয়ে মারেন তাহোন বিউকানান। বিরতির পরও দাপট দেখিয়ে খেলতে থাকে কানাডা। ৪৮তম মিনিটে দারুণ পজিশনে বল পেয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হেড করেন ফরোয়ার্ড জোনাথন ডেভিড। ৬৬ ও ৬৮তম মিনিটে দুটি পাল্টা আক্রমণ করে বেলজিয়াম; কিন্তু অসাধারণ দুটি ট্যাকলে তাদেরকে শট নিতেই দেয়নি কানাডা। এই দুই আক্রমণ রুখে আবারও দাপট দেখাতে শুরু করে কানাডা। কিন্তু বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বারের মতো অংশ নেওয়া দলটির কোনো চেষ্টাই কাজে আসেনি, মেলেনি গোলের দেখা।