স্পেনের পর যে গল্প কেবল আর্জেন্টিনা লিখতে পারলো
ফুটবল বিশ্বকাপে অনেক বীরত্বগাথাই আছে। দাপুটে শুরুর পর শাসন করে বিশ্বকাপ জেতার নজির দেখেছে ফুটবল দুনিয়া। কিন্তু হারে শুরুর পর শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে দেখা? এমন গল্প খুব বেশি নেই। এতোদিন গল্পটা ছিল শুধু স্পেনের। এবার সেই গল্পটাই নিজেদের মতো করে লিখলো লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা।
কাতার বিশ্বকাপের রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে ট্রাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নের মুকুট জিতেছে আর্জেন্টিনা। দিয়েগো ম্যারাডোনার বিশ্বজয়ের ৩৬ বছর পর শিরোপার স্বাদ নিয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশটি। মেসির হাতে উঠেছে পরম আরাধ্যের সোনালী শিরোপা।
শিরোপা জয়ের পথচলায় স্পেনের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে ঘুরে দাঁড়ানোর মহাকাব্য লিখলো আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে স্প্যানিশদের পর আর্জেন্টিনাই একমাত্র দল, যারা বিশ্বকাপে হারে শুরু করে শিরোপা জিতলো। ২০১০ সালে হারে শুরু করে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতেছিলেন ইকার ক্যাসিয়াস, জাভি, ইনিয়েস্তা, ভিয়ারা।
আর্জেন্টিনার এবারের পথচলা ঠিক তেমনই। হট ফেবারিট হিসেবে কাতারে গিয়ে শুরুর ম্যাচেই সৌদি আরবের বিপক্ষে হেরে যায় আলবিসেলেস্তেরা। এক হারেই শেষ ষোলোর পথ কঠিন হয়ে ওঠে। পরের দুই প্রতিপক্ষ যে মেক্সিকো ও পোল্যান্ড। চাপের পাহাড় ছিলো মাথায়, কিন্তু খেই হারায়নি আর্জেন্টিনা।
মেক্সিকো ও পোল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে শেষ ষোলোয় ওঠে তারা। এই রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়া চ্যালেঞ্জ জানালেও জয় ছিনিয়ে নেয় আর্জেন্টিনাই, ২-১ গোলের জয়ে টিকেট কাটে কোয়ার্টার ফাইনালে। যেখানে দেখা হয় নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে। কমলাদের বিপক্ষে ঘাম ঝরানো জয় মেলে আর্জেন্টিনার। টাইব্রেকারে গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেসের বীরত্বে ৪-৩ গোলে জেতে তারা।
পরের বাধাটি ছিল আরও বড়। ব্রাজিলকে বিদায় করে সেমি-ফাইনালে ওঠা ক্রোয়েশিয়ার সামনে পড়ে আর্জেন্টিনা। দুর্দান্ত ফুটবল খেলা ক্রোয়াটদের নিয়ে চিন্তা থাকলেও ম্যাচে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। ৩-০ গোলের দাপুটে জয়ে ফাইনালে উঠে যায় আর্জেন্টিনা। যেখানে শেষ হাসি উঠলো মেসি-দি মারিয়াদের মুখেই।
১২ বছর আগে একই গল্প লিখেছিল স্পেন। ২০১০ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে যায় স্প্যানিশরা। শুরুতেই বিশ্বকাপ স্বপ্নের ধাক্কা লাগলেও পথ হারায়নি তারা। গ্রুপ পর্বের বাকি দুই ম্যাচে হন্ডুরাস ও চিলিকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় ওঠে স্পেন। '
এই রাউন্ডে পর্তুগাল বাধা হয়ে দাঁড়ালেও ১-০ গোলের জয় ছিনিয়ে নেয় স্পেন। কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের শিকার ছিল প্যারাগুয়ে, স্পেন জেতে ১-০ গোলে। সেমি-ফাইনালে জার্মানিও আটকাতে পারেনি স্পেনকে, জাভি-ইনিয়েস্তারা জেতে ১-০ গোলে। ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে ১-০ গোলে হারিয়ে বিজয় নিশান ওড়ায় স্পেন।