‘শুধু সাকিবকে দোষ দিয়ে লাভ নেই, আরও ১০ জন খেলে’
বিশ্বকাপে ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী হয়ে আছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। প্রথম ম্যাচে জেতার পর টানা ছয় ম্যাচে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছে বাংলাদেশ। দলগত ব্যর্থতা হলেও সবচেয়ে বেশি দায় দেওয়া হচ্ছে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে নিয়ে সমালোচনার শেষ নেই। তবে বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন বলছেন, দলের ব্যর্থতার দায় শুধু সাকিবের নয়।
বিসিবির এই পরিচালকের মতে, বিশ্বকাপে সাকিবই কেবল খারাপ পারফরম্যান্স করেননি; পুরো দলই ব্যর্থ। তাই ব্যর্থতার দায় দলের প্রতিটা ক্রিকেটারের। এমনকি কোচিং স্টাফদেরও দায় দেখছেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
মাঠ ও মাঠের বাইরে অনেক বিতর্কেই অতীতে সাকিবের নাম জড়িয়েছে। সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে তাকে ঘিরে। আবার সবকিছুই আড়াল পড়ে গেছে তার মাঠের পারফরম্যান্সে। কিন্তু এবার দলের মতো সাকিবও ব্যর্থ। ছয় ম্যাচে তার রান মোটে ১০৪। বল হাতে উইকেট নিয়েছেন ৭টি। দলের সঙ্গে সাকিবও অনুজ্জ্বল, তাই আলোচনায় উঠে আসছে মাঠের বাইরের ব্যাপারগুলো।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের আগে হঠাৎ-ই দেশে ফেরেন সাকিব। শৈশবের কোচ নাজমুল আবেদী ফাহিমের সঙ্গে ব্যাটিং অনুশীলন করলেও মিরপুরে মাঠ ছাড়ার সময় 'ভুয়া, ভুয়া' বলা হয় তাকে উদ্দেশ্য করে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হারের ম্যাচেও দুয়োধ্বনি শুনতে হয় বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারকে।
এসব আলোচনা তো আছেই, সঙ্গে যোগ করা হচ্ছে বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে সাকিবের দেওয়া বিতর্কিত সেই সাক্ষাৎকারও। যেখানে তিনি ঢালাওভাবে সমালোচনা করেন বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকে নিজের নাম সরিয়ে নেওয়া তামিম ইকবালের। ওই সাক্ষাৎকার দলের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে, যার প্রভাব বিশ্বকাপ পারফরম্যান্সেও পড়েছে বলে অনেকের ধারণা।
ব্যাটে কিংবা বলে; সাকিবের পারফরম্যান্স থাকেই। এবারের বিশ্বকাপেই কেবল সেটা হয়নি। খালেদ মাহমুদ বলছেন, দলগত পারফরম্যান্স না আসার কারণেই এমন হয়েছে। শুক্রবার দিল্লিতে টিম হোটেলে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, 'সাকিব তো তার শতভাগের ১০ ভাগও নেই…। সে নিজেও বোঝে খুব ভালো। এই জন্যই হয়তো ঢাকায় গিয়েছিল ট্রেনিং করতে।'
'ওর মাথার মধ্যে ছিল কিংবা ও মরিয়া ছিল পারফর্ম করার জন্য। শুধু ওর পারফম্যান্স নয়, ও চায় দল জিতুক। ওর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, দল পারফর্ম করতে পারছে না, জিততে পারছে না। ২০১৯ বিশ্বকাপে দলকে যেভাবে এগিয়ে নিয়েছে, এবার অধিনায়ক হিসেবে সামনে থেকে পারফর্ম করতে না পারাও একটা কারণ হতে পারে।' যোগ করেন তিনি।
ব্যর্থতার দায় দলের সবাইকে দিয়ে খালেদ মাহমুদ বলেন, 'শুধু সাকিবকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। সাকিব একা খেলে না, আরও ১০ জন খেলে। অধিনায়ক তো অবশ্যই ভিন্ন ব্যাপার, আলাদা দায়িত্ব আছে। তবে খেলোয়াড় হিসেবে তো সবারই দায়িত্ব এক। সাকিব যখন ব্যাট করে, তখন তো আর সে অধিনায়ক নয়, সে একটা ব্যাটসম্যান। যখন বোলিং করে, তখন সে বোলার। তবে দিনশেষে সব ব্যাটসম্যান বা বোলারকেই সমান দায় নিতে হবে।'
'সাকিবের একার ব্যর্থতা নয়। হ্যাঁ, অধিনায়ক হিসেবে সমালোচনা নিতেই হবে। সেটা স্বাভাবিক। তবে সেটা সাকিবের একার নয়, আমাদের সবারই সেই সমালোচনা নিতে হবে। আমি যেমন দলের অংশ, আমারও হয়তো ব্যর্থতা আছে। আমি মনে করি, ব্যর্থতা আমাদের সবারই, আমরা করতে পারিনি।' বলেন সাবেক এই অধিনায়ক।