অস্ট্রেলিয়ার সাফল্যের মাথা ট্রাভিস হেড
বিশকাপের প্রথম দুই ম্যাচে হেরে ছন্নছাড়াই মনে হচ্ছিল অস্ট্রেলিয়াকে। এরপর টানা তিন ম্যাচ হেরে নিজেদের ফিরে পেলেও কী যেন একটা অভাব থেকেই যাচ্ছিল। উদ্বোধনী জুটিটা যে জমছিল না কোনোভাবেই। এক পাকিস্তান ম্যাচ ছাড়া মার্শ-ওয়ার্নার উদ্বোধনী জুটি ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি অজিদের।
পারবেনই বা কীভাবে! ওয়ার্নারের আসল সঙ্গী ট্রাভিস হেডকে যে প্রথম পাঁচ ম্যাচে পায়নি অজিরা। চোটে পড়লেও তাকে বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকে বাদ দেয়নি অস্ট্রেলিয়া। কারণ ফিরে এসে হেড কী করতে পারেন তা জানা ছিল তাদের। আর হেড দেখালেনও কেন তাকে শুরুর দিকে না পেলেও স্কোয়াডে রাখা হয়েছে।
ফিরে এসে প্রথম ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তুলে নেন বিধ্বংসী সেঞ্চুরি। ৬৭ বলে ১০৯ রান করে জানিয়ে দেন, খেলার বাইরে থাকলেও ধার এতটুকু কমেনি তার ব্যাটে। এরপর সেমি-ফাইনালে টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। কলকাতার ইডেন গার্ডেনে ২১৩ রানের লক্ষ্যও দুর্বিষহ মনে হচ্ছিল ধীরগতির পিচের জন্য।
সেই পিচে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের ভিত গড়ে দেন হেডই। তার মূল কাজ ব্যাটিং, সেখানে ৪৮ বলে ৬২ রান তো করেছেনই, বল হাতেও গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট নেন তিনি। আর এই দুর্দান্ত পারফর্ম করে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন এই বাঁহাতি ওপেনার। এরপর ফাইনালে আজ যা করলেন, তা অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসেই আর জায়গা অমর করে দিয়েছে। অজিদের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ শিরোপা বলতে গেলে একা হাতে এনে দিয়েছেন হেডই। ফিল্ডিংয়ে রান বাঁচিয়েছেন বেশ কয়েকটি, ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা ভয়ংকর হয়ে ওঠা শুরু করেছেন, ঠিক তখনই অসাধারণ এক ক্যাচে ফিরিয়েছেন তাকে।
ব্যাটিংয়ে ২৪১ রানের মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার তিন ব্যাটসম্যান ফিরে যান ৪৭ রানের মধ্যেই। যে শঙ্কা ঘিরে ধরেছিল অজিদেরকে, মার্নাস লাবুসেনকে নিয়ে তা উড়িয়ে দেন হেড। ১২০ বলে ১৩৭ রান করে তিনি যখন আউট হন, অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য তখন দরকার দুই রান।
শুধু বিশ্বকাপই নয়, ২০২৩ সাল জুড়েই অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত সব সাফল্যে হেড ছিলেন অন্যতম মুখ্য ভূমিকায়। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে হারানোর ম্যাচেও ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হয়েছিলেন হেড। প্রথম ইনিংসে খেলেছিলেন ১৬৩ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। এরপর ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যাশেজ ধরে রাখতেও অজিদের সাহায্য করেছেন হেড, আর এবার তো ভারতের মাটিতে তাদেরই দর্শকদের চুপ করিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করলেন অস্ট্রেলিয়াকে।
বিশ্বকাপ ফাইনালে সেঞ্চুরি করা তৃতীয় অজি হেড, তার আগে সেঞ্চুরি করেছেন রিকি পন্টিং এবং অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। ক্লাইভ লয়েড, ভিভ রিচার্ডস, অরবিন্দ ডি সিলভা ও মাহেলা জয়াবর্ধনের পাশেও বসেছেন হেড।