যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে হেরে গেল বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও হারল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নাজমুল হাসান শান্তর দল হেরেছে পাঁচ উইকেটের ব্যবধানে। বাংলাদেশকে হারিয়ে ইতিহাসই গড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই নিয়ে মাত্র দ্বিতীয়বার কোনো টেস্ট খেলা দলকে হারিয়েছে তারা। প্রথম দল আয়ারল্যান্ড হলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে জেতাই বেশি মনে রাখবেন যুক্তরাষ্ট্রের খেলোয়াড় ও সমর্থকরা।
বাংলাদেশের দেওয়া মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে একটা সময় ম্যাচ থেকে কিছুটা দূরেই ছিটকে যাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে কোরি এন্ডারসন ও হারমিত সিংয়ের মাত্র ২৮ বলে ৬২ রানের জুটিতে তিন বল হাতে রেখেই লক্ষ্য টপকে যায় স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের দেওয়া ১৫৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম তিন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রানে পৌঁছালেও বলের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছিলেন না। বাংলাদেশ উইকেট সেভাবে না ফেলতে পারলেও তাড়া করার রানরেট বাড়ছিল। কিন্তু রান না করতে পারার চাপে উইকেটও হারাতে শুরু করে স্বাগতিকরা।
২৭ রানে প্রথম, ৬৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানোর পর এক পর্যায়ে ৯৪ রান তুলতে পাঁচ উইকেট হারায় যুক্তরাষ্ট্র। তখনও জেতার জন্য ৩১ বলে ৫৯ রান প্রয়োজন ছিল তাদের। ২০ বলে যে সমীকরণ দাঁড়ায় ৫০ রানের।
সেই সমীকরণ ১৭ বলেই মিলিয়েছেন কোরি এন্ডারসন ও হারমিত সিং। বিশেষ করে হারমিত তাণ্ডব চালিয়েছেন, ১৩ বলে দুই চার ও তিন ছয়ে ৩৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। এন্ডারসনের ব্যাট থেকে এসেছে ২৫ বলে দুই ছয়ে ৩৪ রান। নিউজিল্যান্ডের জাতীয় দল ছেড়ে এসে যুক্তরাষ্ট্রকে ঐতিহাসিক এক জয় এনে দেওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখলেন এই অলরাউন্ডার।
বাংলাদেশের হয়ে মুস্তাফিজুর রহমান দুই উইকেট পেলেও দিয়েছেন ৪১ রান। একটি করে উইকেট পেয়েছেন রিশাদ ও শরিফুল।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের এদিনও ব্যাটিং ব্যর্থতা পিছু ছাড়েনি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে বড় কোনো দলীয় সংগ্রহ গড়তে ব্যর্থ হয় নাজমুল হাসান শান্তর দল। আজ যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে টস হেরে আগে ব্যাট করে মাত্র ১৫৩ রানের পুঁজি গড়ে বাংলাদেশ। টপ অর্ডার আবারও ভালো শুরু এনে দিতে পারেনি।
বাংলাদেশের সংগ্রহ যা হয়েছে সেটিও তাওহিদ হৃদয় আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কল্যাণে। বাকি ব্যাটসম্যানরা কেউই সাবলীল ছিলেন না। অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্তর বাজে ফর্ম অব্যাহত রয়েছে।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকার ৩৪ রানের জুটি গড়েন। সৌম্য কিছুটা চালিয়ে খেলার চেষ্টা করলেও লিটন বলপ্রতি রানও করতে পারেননি। ১৫ বলে ১৪ রান করে ফেরেন তিনি। সৌম্য দলীয় সংগ্রহকে একই জায়গায় রেখে বিদায় নেন ১৩ বলে ২০ রান করে।
এরপর অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্তর দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তিনি আবারও ব্যর্থ হয়েছেন। করেছেন ১১ বল খেলে মাত্র তিন রান। সাকিব আল হাসানও ১২ বল খেলে মাত্র ছয় রান করে বিদায় নেন।
৬৮ রানে চার উইকেট হারানো বাংলাদেশের ইনিংস কিছুটা মেরামত করেছেন তাওহিদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুজনে গড়েন ৬৭ রানের জুটি। হৃদয় ৪৭ বলে চারটি চার ও দুই ছয়ে করেছেন ৫৮ রান। মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে এসেছে ২২ বলে ৩১ রান।
যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে তিন ওভার বল করে মাত্র নয় রান দিয়ে দুটি উইকেট শিকার করেন স্টিভেন টেইলর। উল্লেখ্য, এটিই ছিল বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ।