ব্যাটসম্যানদের কাছে পরিষ্কার কোনো বার্তা ছিল না, বলছেন মাশরাফি
বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে অপ্রত্যাশিত একটি সুযোগ এসেছিল, স্বপ্ন জেগেছিল প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমি-ফাইনাল খেলার। নিজেদের পারফরম্যান্সে নয়, অন্য দলের ব্যর্থতায় বাড়তি সুযোগ মিলেছিল। যেটাকে উপহারও বলা যায়। বড় ব্যবধানে হেরে গেলেও বাংলাদেশের হারানোর কিছু ছিল না। এমন ম্যাচে রক্ষণাত্মক মনোভাব নিয়ে ব্যাটিং করে প্রথমে শেষ চারের সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ, পরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচই হেরে যায় তারা।
১২.১ ওভারে ১১৬ রান তাড়া করলেই শেষ চারের টিকেট মিলবে, এমন ম্যাচে নিশ্চয়ই ব্যাটিং অর্ডার অন্য যেকোনো দিনের মতো থাকা উচিত নয়। মেরে খেলার সামর্থ্য বিচারে সাজানো উচিত ব্যাটিং অর্ডার। শারীরিক ভাষাতেও থাকা উচিত ভিন্নতা। কিন্তু আজও সেই পুরনো বাংলাদেশকেই দেখা গেছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারের পর তাই মাশরাফি বিন মুর্তজার মনে হয়েছে, ব্যাটিং বিভাগের কাছে দল থেকে পরিষ্কার কোনো বার্তা দেওয়া হয়নি।
লিটন কুমার দাস উইকেটে গিয়েই শট খেলা শুরু করেন, কিন্তু অন্য প্রান্ত থেকে ভিন্ন রকম সাড়া। এটা দেখে মাশরাফির মনে হয়েছে সেমি-ফাইনালে ওঠার জন্য নামেনি বাংলাদেশ। নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে সাবেক এই অধিনায়ক লিখেছেন, 'লিটনের ইনটেন্ট আর নন স্ট্রাইকারের নিরবতা দেখে বোঝা যায়, পরিষ্কার কোনো বার্তা ব্যাটিং ইউনিটের কাছে ছিলো না। আর যদি থেকেই থাকে তাহলে প্রতি এক বা দুই ওভার পরপর পরিবর্তন হয়েছে, শেষমেষ এমন যায়গায় দাঁড়িয়েছে যে, স্রেফ ম্যাচটা যেন জেতে।'
এমন মানসিকতায় চরম আপত্তি মাশরাফির। গ্রুপ পর্বে তিনটি ম্যাচ জিতে সুপার এইটে উঠে দুই ম্যাচে জয়হীন থাকা বাংলাদেশের হারানোর কিছু ছিল না বলে মনে করেন মাশরাফি। বাংলাদেশের অনেক জয়ে নেতৃত্ব দেওয়া অভিজ্ঞ এই পেসার লিখেছেন, ' আজকের হিসাবটা ছিলো শুধুই ১২.১। এর বাইরে কিছুই ভাবার সুযোগ ছিলো না। তাতে যদি ৫০ রানেও দল অল আউট হতো, অন্তত সবাই সেটা সহজভাবে নিতো।'
সুপার এইটে উঠলেও বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে বিশেষ কিছু ছিল না। বিশেষ করে ব্যাটসম্যানরা কঠিন সময় পার করেছেন। হাতেগোণা দুই-একজন ছাড়া সবাই ছিলেন রানখরায়। সর্বশেষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে এমন হার, তবু আশার কথাই মাশরাফির মুখে, 'এ ম্যাচ আর দশটা ম্যাচের মতো ছিলো না আমাদের জন্য, এটা ছিলো ইতিহাস গড়ার সমান। এরপরও অবশ্যই আশা দেখি বা দেখবো ইনশাআল্লাহ। হয়তো কোন একদিন….।'
বাংলাদেশকে হারিয়ে ইতিহাস লিখেছে আফগানিস্তান, প্রথমবারের মতো বিশ্ব আসরের সেমি ফাইনালে উঠেছেন রশিদ-নবীরা। সবখানে চলছে আফগানদের প্রশংসা। মাশরাফিও সেই দলের একজন, অভিনন্দন জানিয়ে তিনি লিখেছেন, 'অভিনন্দন আফগানদের। কী দারুণ তাদের শারীরিক ভাষা, শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাওয়া এবং শেষে তাদের সেলিব্রেশন। নিশ্চয়ই কাবুল এখন কাঁপছে।'