১৩ বছর বয়সেই আইপিএলে দল পাওয়া কে এই বৈভব সূর্যবংশী
শিরোনাম পড়েই চোখ কপালে উঠতে পারে এই ভেবে যে, ১৩ বছর বয়সী কেউ কীভাবে আইপিএলের মতো টুর্নামেন্টে দল পেতে পারেন! যদিও নামটা এতোদিনে পরিচিত হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন টুর্নামেন্ট মিলিয়ে এক মৌসুমে ৪৯টি সেঞ্চুরি করে আলোচনায় আসা সূর্যবংশীর নাম আইপিএলের মেগা নিলামের চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা পাওয়ার পরই হইচই পড়ে যায়। যা শেষ পর্যন্ত বিস্ময়ে রূপ নিয়ে থামলো। আইপিএলে দল পেয়ে গেলেন সূর্যবংশী। সে-ই এখন আসরটির ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার।
সৌদি আরবের জেদ্দায় মেগা নিলামের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে ১৩ বছর বয়সী এই কিশোরকে দলে নিয়েছে আইপিএলের একবারের চ্যাম্পিয়ন রাজস্থান রয়্যালস। সূর্যবংশীকে দলে নিতে রাজস্থানকে খরচা করতে হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ রুপি। যদিও তার ভিত্তিমূল্য ছিল ৩০ লাখ রুপি। কিন্তু এই বিস্ময় বালককে দলে পাওয়ার লড়াইয়ে ছিল দিল্লি ক্যাপিটালসও। রাজস্থানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দাম হাঁকতে থাকে তারা। তবে সূর্যবংশীর মূল্য কোটি রুপিতে চলে গেলে সরে দাঁড়ায় দিল্লি। আরও ১০ লাখ বাড়িয়ে তাকে দলে ভেড়ায় রাজস্থান।
ভারতীয় ক্রিকেটে সূর্যবংশীর নাম ইতোমধ্যে অনেকবার উচ্চারিত হয়েছে, আর তা বিস্ময়ের সঙ্গেই। আইপিএলে তার দল পাওয়া যেমন অবাক করার মতো, তার ব্যাটিং প্রতিভাও তেমনই। এই বয়সেই ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ টেস্ট দলে খেলে ফেলেছে বিহারের এই কিশোর, গত জানুয়ারিতে অভিষেক হয়েছে রঞ্জি ট্রফিতেও। গত অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়া অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে মাত্র ৫৮ বলে সেঞ্চুরি করে সূর্যবংশী, যা যুব টেস্টের ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেটে ভারতের এই ক্রিকেটারই সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান।
সূর্যবংশীর ব্যাটিং প্রতিভা, রান বা সেঞ্চুরি করার সঙ্গে একটি আলোচনা নিয়মিত; সেটা তার বয়স। এই বয়সে রানের ফোয়ারা বইয়ে দিয়ে মুড়ি মুড়কির মতো সেঞ্চুরি করে যাওয়ার ঘটনা ক্রিকেটের ইতিহাসেই বিরল। কিন্তু যে বয়সের কারণে তাকে নিয়ে এতো আলোচনা, সেটা নিয়ে আছে বিতর্কও। যা বাঁহাতি সূর্যবংশী নিজেই উস্কে দিয়েছেন। গত বছর একটি সাক্ষাৎকারে সে জানায়, সেপ্টেম্বরে তার বয়স ১৪ বছর পূর্ণ হবে। সেই হিসেবে তার বর্তমান বয়স ১৫ বছর। যদিও সূর্যবংশীর অফিসিয়াল বয়স ১৩ বছর। ১৫ বছর বয়স হলেও আইপিএলে দল পাওয়া মানে সে নিশ্চিতভাবেই বিশেষ একজন।
২০১১ সালে বিহারে জন্ম নেওয়া সূর্যবংশীর ক্রিকেটে হাতেখড়ি মাত্র ৪ বছর বয়সে। বয়স যখন ৯, বাবা তাকে ভর্তি করিয়ে দেন স্থানীয় এক ক্রিকেট একাডেমিতে। বয়সের তুলনায় ক্রিকেটের বিচারে সমবয়সীদের চেয়ে এগিয়ে থাকায় নজর পড়ে তার ওপর, ছড়াতে থাকে নামডাক। মাত্র ১২ বছর বয়সে সূর্যবংশী খেলেন ভিনু মানকড় ট্রফিতে। দারুণ পারফরম্যান্সে পাঁচ ম্যাচে করেন ৪০০ রান, জায়গা মিলে যায় বিহারের শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটে।
রঞ্জি খেলার মাধ্যমে প্রথম শ্রেণিতে পথচলা শুরু করা সূর্যবংশী খেলেছেন হেমান ট্রফি, কোচ বিহার ট্রফিতেও। বিহার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে রানধির বার্মা অনূর্ধ্ব-১৯ ওয়ানডেতে ট্রিপল সেঞ্চুরি আছে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের। গত পরশু স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় সূর্যবংশীর। সবখানে রানের বন্যা বইয়ে দিলেও প্রথম শ্রেণির মতো সংক্ষিপ্ততম এই ফরম্যাটেও শুরুটা ভালো হয়নি তার। ৬ বলে ২ ছক্কায় ১৩ রান করে আউট হন। প্রথম শ্রেণির অভিষেকে ২৮ বলে ১৯ রান করেন সূর্যবংশী।