জিতেই তাইজুল বললেন, ‘যেকোনো দলের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব’
একটি জয় কোনো দলকে পুরোপুরি পাল্টে দিতে পারে। দলের খেলোয়াড়দের শারীরিক ভাষা থেকে শুরু করে আত্মবিশ্বাস, লড়াই করার মানসিকতাতে আনতে পারে বিরাট পরিবর্তন। না হলে কি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট জিতে তাইজুল ইসলাম বলে দেন, বিশ্বের যেকোনো দলের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সামর্থ্য আছে তাদের!
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট দলে ছিলেন না নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ছিলেন না সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমও। এ ছাড়া ছিল টানা হারের ক্লান্তি। ভারত সফর ও ঘরের মাঠ মিলিয়ে টানা চারটি টেস্ট হেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যায় বাংলাদেশ। ব্যাটিং ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে থাকা দলটি এই সফরের প্রথম টেস্টও হারে।
দ্বিতীয় টেস্টের শুরুও ছিল চরম হতাশার, প্রথম ইনিংসে অল্প রানেই গুটিয়ে গিয়ে আরেকটি হারের শঙ্কায় পড়ে যায় বাংলাদেশ। কোণঠাসা অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে দারুণ এক জয় তুলে নেওয়ার পর নিমেষেই পাল্টে গেছে দলের চেহারা। টানা পাঁচ টেস্ট হারা দলটিই জানান দিচ্ছে, যেকোনো দলের বিপক্ষে লড়তে প্রস্তুত তারা।
জ্যামাইকা টেস্টের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এ নিয়ে ম্যাচসেরা তাইজুল বললেন, 'এখানে অস্বীকার করার মতো কিছু নাই। আমাদের যে পেস বোলিং আক্রমণ আছে, স্পিন আক্রমণ আছে, আমরা বেশ কিছুদিন ধরে একসাথে খেলে আসছি। সবারই একটা ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমরা ইনশাআল্লাহ বিশ্বের যেকোনো দলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব।'
১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট জিতলো বাংলাদেশ। জয়টির মাহাত্ম্য বর্ণনা বাঁহাতি এই স্পিনার বলেন, 'এটা আমাদের কন্ডিশনের বাইরে (জয়)। নিজেদের কন্ডিশনের বাইরে এসে এমন জয় অবশ্যই অনেক বড় কিছু পাওয়ার। আমার কাছে মনে হয় আমাদের ছেলেরা অনেক এফোর্ট দিয়েছে মাঠে। আমাদের চেষ্টা ছিল কোনোভাবে ম্যাচটা জেতার জন্য এবং আলহামদুলিল্লাহ আমরা সফল হয়েছি।'
জয়ে বড় অবদান রেখেছেন তাইজুল। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭ ওভারে ৫০ রান খরচায় ৫টি উইকেট নেন অভিজ্ঞ এই স্পিনার। টেস্টে ১৫তম বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেটের দেখা পেলেন তিনি, বিদেশের মাটিতে পঞ্চম। এই রেকর্ডে সাকিবকে ছুঁয়ে ফেলেছেন তাইজুল, সাকিবও বিদেশের মাটিতে পাঁচবার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন।
ম্যাচে ৬ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও অবদান আছে তাইজুলের। দুই ইনিংসে মিলিয়ে ১১৬ বল মোকাবিলায় রান করেন ৩০। ব্যাট হাতে চেষ্টা করলেও বোলিংয়ের সন্তুষ্টির কথা জানান তিনি। তাইজুলের ভাষায়, 'আমার বোলিং নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। দলের যখন যেটা চাওয়া ছিল, আমি পূরণ করতে পেরেছি। দ্বিতীয় ম্যাচে চতুর্থ ইনিংসে যখন বোলিং করতে আসি, আমার ওপর দলের একটা বড় চাওয়া ছিল। সেটা সফল হয়েছে এবং এটাতে আমি অনেক ভালো বোধ করছি।'