রংপুরকে হারিয়ে প্লে-অফের রেসে টিকে রইলো খুলনা টাইগার্স
জিততে খুলনা টাইগার্সের গড়া রান পাহাড় টপকাতে হতো, বদলাতে হতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ইতিহাস। এমন ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের শুরুটা ভালো হয়নি, রানও সেভাবে তুলতে পারেনি হঠাৎ-ই দিক হারিয়ে হারের বৃত্তে বন্দী হয়ে যাওয়া দলটি। এরপরও কিছুটা আশা জেগেছিল সৌম্য সরকারের খুনে ব্যাটিংয়ে, কিন্তু সে আশায় বেশিক্ষণ থাকা হয়নি রংপুরের। অনেক রান তুললেও বাজে বোলিংয়ের খেসারত দিতে হয় ম্যাচ হেরে। দারুণ এক জয়ে প্লে-অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলো খুলনা।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রংপুরকে ৪৬ রানে হারিয়েছে খুলনা টাইগার্স। ১১ ম্যাচে পাঁচ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার পাঁচ নম্বর দল তারা, টিকে রইলো শেষ চারে ওঠার স্বপ্ন। লিগ পর্বে খুলনার শেষ ম্যাচ ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে। এই ম্যাচে জিতলে দুর্বার রাজশাহীর সমান ১২ পয়েন্ট হবে তাদের। এই দুই দলের মধ্যে হিসাব হলে রান রেটে এগিয়ে থাকায় প্লে-অফে উঠবে খুলনাই। টানা আট ম্যাচ জিতে সবার আগে প্লে-অফ নিশ্চিত করা রংপুর হেরেই চলেছে। এ নিয়ে টানা চতুর্থ ম্যাচ হারলো লিগ পর্বের ১২ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে থাকা দলটি।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামে খুলনা টাইগার্স। ইনিংস উদ্বোধন করতে নামা নাঈম শেখ শুরুতে দেখেশুনে খেললেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দাপট বাড়ে তার। ব্যাটকে তরবারিতে পরিণত করা বাঁহাতি এই ওপেনার দারুণ সব শটে তুলে নেন সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করেন তিনি, অবদান রাখেন উইলিয়াম বসিস্তো ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও। এ কজনের ব্যাটে ৪ উইকেটে ২২০ রান তোলে খুলনা। বিপিএলে এটাই তাদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। বড় লক্ষ্য তাড়ায় শেষ পর্যন্ত লড়াই চালান দারুণ ব্যাটিং করা সৌম্য। কিন্তু আর কাউকে পাশে না পাওয়ায় দলকে জয় এনে দিনে পারেননি তিনি। ৯ উইকেটে ১৭৪ রানে থামে রংপুরের ইনিংস।
রান পাহাড় তাড়া করতে নেমে কেবল সৌম্য দলের চাওয়া অনুযায়ী ব্যাটিং করতে পেরেছেন। ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে শেষ ওভারে আউট হওয়া বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৪৮ বলে ৬টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৭৪ রান করেন। রংপুরের আর কেউ ৩০ রানের গণ্ডিও পেরোতে পারেননি। ইফতিখার আহমেদ ১৫ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ১৯ ও শেখ মেহেদি হাসান ১৪ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ২৭ রান করেন। ১০ বলে ২টি ছক্কায় ১৮ রান আসে মোহাম্মদ সাইউফদ্দিনের ব্যাট থেকে। ৬ বলে ২টি ছক্কায় ১৪ রান করেন রকিবুল হাসান। খুলনার তরুণ পেসার মুশফিক হাসান ৩টি উইকেট নেন। ২টি উইকেট পান মোহাম্মদ নওয়াজ। একটি করে উইকেট নেন নাসুম আহমেদ ও হাসান মাহমুদ।
এর আগে খুলনাকে পুরোটা সময় ধরে পথ দেখান ম্যাচসেরা নাঈম শেখ। আসাধারণ ব্যাটিংয়ে ৬২ বলে ৭টি চার ও ৮টি ছক্কায় ১১১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। বিপিএলে এটাই তার প্রথম সেঞ্চুরি। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন নাঈম, ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে ১০৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। খুলনার অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ ১২ বলে একটি চার ও ২টি ছক্কায় ২১ রান করেন। ২১ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৬ রানে আসে বসিস্তোর ব্যাট থেকে। ১৫ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ২৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন অঙ্কন। রংপুরের শেখ মেহেদি, আকিফ জাভেদ ও ইফতিখার আহমেদ একটি করে উইকেট পান।