চরম ব্যাটিং ব্যর্থতার পর ক্যাচ মিসের মহড়ায় বিশাল হার
প্রথম দুই ম্যাচ দিয়েই ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিয়েছিল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে শুরুটা দাপুটে হওয়ায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে আরও একটি সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামে ঘরের মাঠের দলটি। কিন্তু এদিন চরম ব্যাটিং ব্যর্থতার পর ক্যাচ মিসের মহড়ায় মাতা বাংলাদেশ সামান্যতম লড়াইটুকুও করতে পারলো না। হেসেখেলেই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলকে হারিয়ে দিলো আফগানরা।
শনিবার সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮ উইকেটের বড় ব্যধানে হেরে গেছে বাংলাদেশ। এই হারেও টি-টোয়েন্টি সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ হলো। প্রথমবারের মতো আ্ফগানদের বিপক্ষে সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে সিরিজ জেতার সম্ভাবনা তৈরি করেও পারল না বাংলাদেশ। দুই দলের খেলা আগের একমাত্র টি-টোয়েন্টি সিরিজে দেরাদুনে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ। এদিন পুরো ইনিংসে ধুঁকে ধুঁকে ব্যাটিং করে স্বাগতিকরা। চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৯ উইকেটে ১১৫ রানেই শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। জবাবে হযরতউল্লাহ জাজাই ও উসমান গণির ব্যাটে ১৭.৪ ওভারে ৮ উইকেটের জয় তুলে নেয় আফগানিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে এটাই আফগানদের সবচেয়ে বড় জয়। এ ছাড়া টি-টোয়েন্টিতে উইকেটে হিসাবে এটা তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়।
সফরকারী দলের এই দুই ব্যাটসম্যান চারটি ক্যাচ তোলেন, কিন্তু একটিও নিতে পারেনি বাংলাদেশ। নাসুম আহমেদ সহজ একটি ক্যাচ ছাড়ার পর আরেকটি ধরার চেষ্টাই করেননি। বাকি দুই ক্যাচ আফিফ হোসেন ধ্রুব ও নাঈম হাসানের হাত গলে বেরিয়ে যায়।
ছোট লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমেও শুরুটা ভালো করতে পারেনি আফগানিস্তান। দলীয় ৪ রানেই আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজকে ফিরিয়ে দেন শেখ মেহেদি হাসান। যদিও দলকে কোনো চাপই বুঝতে দেননি আরেক ওপেনার হযরতউল্লাহ জাজাই ও উসমান গণি।
শুরুর ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় উইকেটে ৯৯ রানের জুটি গড়ে তোলেন এই দুই ব্যাটসম্যান। এই জুটিতে জয়ের একবারে কাছে পৌঁছে যায় আফগানরা। মাহমুদউল্লাহর শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৪৮ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৭ রান করেন। দারবিশ রসুলিকে নিয়ে জয় তুলে নেওয়ার কাজ সারেন জাজাই। বাঁহাতি এই ওপেনার ৪৫ বলে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৬৯ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের শেখ মেহেদি হাসান ও মাহমুদউল্লাহ একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেমের পুরো ইনিংসে ভাঙনের সুর বেজে গেছে। কেউই পারেননি বড় ইনিংস খেলতে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে শততম টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা মুশফিক খেলেন সর্বোচ্চ রানের ইনিংস, সেটাও কেবল ৩০ রানের।
এ ছাড়া আর তিনজন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রান করেন। বাকিরা আফগান পেসার ফজল হক ফারুকী, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, মোহাম্মদ নবীদের দারুণ বোলিংয়ের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেননি। আগের ম্যাচে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হওয়ায় মুনিম শাহরিয়ার এদিন ৪ রান করে বিদায় নেন।
এরপর ১৩ রান করে করেন লিটন কুমার দাস ও নাঈম শেখ। সাকিব আল হাসান ৯ রান করে ওমরজাইয়ের শিকারে পরিণত হন। মুশফিক ২৫ বলে ৪টি চারে ৩০ রান করেন। এই ইনিংস দিয়ে বাংলাদেশের চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ৫ হাজার রানের মাইলফলকে পৌঁছান অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সাবলীল দেখিয়েছে। শুরু থেকেই মারকুটে মেজাজে খেলতে থাকেন তিনি। যদিও ইনিংস বড় করতে পারেননি টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। ১৪ বলে ৩টি চারে ২১ রান করে আউট হন তিনি। এই ইনিংস দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ২ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।
তার বিদায়ে আসা যাওয়ার মিছিল শুরু হয়। আফিফ হোসেন ধ্রুব ৭, শেখ মেহেদি হাসান ০, নাসুম আহমেদ ৫, শরিফুল ইসলাম ০ ও মুস্তাফিজুর রহমান ৬ রান করেন। দুই আফগান পেসার ফজল হক এবং ওমরজাই ৩টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান মোহাম্মদ নবী ও রশিদ খান।