‘সাড়ে পাঁচ মাস মাঠের বাইরে, কোচিং ম্যানেজমেন্টের কেউ যোগাযোগ করেনি’
চোটে পড়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ। দেশে ফিরে বিশ্রামের পর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু। উন্নতি হওয়ায় জাগে মাঠে ফেরার সম্ভাবনা। কিন্তু সে উন্নতি যথেষ্ট ছিল না, ফেরা হলো না মাঠে। পিঠের চোটে সাড়ে পাঁচ মাস ধরে মাঠের বাইরে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। দীর্ঘ এই সময়ে জাতীয় দলের কোচিং ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে কেউ সাইফউদ্দিনের খোঁজ নেয়নি।
সোমবার আফসোসের সাথেই কথাটা জানালেন বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার। অথচ তিনি জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চোটে পড়ে দেশে ফিরতে হয় তাকে। এরপর থেকে একা একাই লড়াই করে আসছেন সাইফউদ্দিন।
পিঠের চোটে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) খেলা হয়নি তার। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) খেলতে পারেননি। শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে বিপিএল খেলার ইচ্ছার কথা জানালেও বিসিবির কাছ থেকে অনুমতি মেলেনি সাইফউদ্দিনের।
সবাই যখন বিপিএল খেলায় ব্যস্ত, তখন উন্নত চিকিৎসা নিতে ইংল্যান্ডে যান সাইফউদ্দিন। লন্ডনের ফর্টিয়াস ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ড্যামিয়েন ফাইকে দেখান তিনি। ডাক্তার দেখিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরা বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার আট দিন নিজ জেলা ফেনীতে অনুশীলন করে ঢাকা এসেছেন। সোমবার থেকে মিরপুরের একাডেমি মাঠে শুরু করেছেন নিজেকে ফিট করে তোলার লড়াই।
এর বাইরে আর কিছু ভাবছেন না তিনি, আপাতত ভাবনায় নেই জাতীয় দলও। তবে অভিমান আছে তার, 'আমি এখন জাতীয় দলে নেই, তাই জাতীয় দল নিয়ে ভাবনাও নেই। যখন ঢুকব তখন হয়তো চিন্তা-ভাবনা করব। সাড়ে ৫ মাস মাঠের বাইরে ছিলাম, জাতীয় দলের কোচিং ম্যানেজমেন্ট কেউই আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। আমি নিজ থেকে আসলে কী বলব? যদি দল মনে করে আমার প্রয়োজন, তখন আমি জাতীয় দল নিয়ে কথা বলব। এখন আবাহনীতে আছি, মনোযোগ এখানেই।'
আগামী ১৫ মার্চ থেকে শুরু হতে যাওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দিকেই সাইফউদ্দিনের সব মনোযোগ। আবাহনী লিমিটেডের হয়ে খেলতে নিজেকে প্রস্তুত করে যাচ্ছেন তিনি। এই লিগ দিয়ে জাতীয় দলে ফিরতে হবে, এমনও ভাবছেন না ২৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার, 'আপাতত লক্ষ্য প্রিমিয়ার লিগে ভালো খেলা। এখানে খেলে জাতীয় দলে যেতে হবে, এমন কিছু ভাবিনি। যা হওয়ার হবে। ম্যাচ বাই ম্যাচ চিন্তা করতে চাই।'
জাতীয় দল, বাংলাদেশ টাইগার্স, অনূর্ধ্ব-১৯ দল নিয়ে কোচিং স্টাফদের সবাই ব্যস্ত। এ কারণে ফেনীতেই কিছুদিন অনুশীলন করেন তিনি। এ নিয়ে সাইফউদ্দিন বলেন, 'সবাই তো ব্যস্ত। কেউ বাংলাদেশ টাইগার্স, কেউ জাতীয় দলে, কেউ অনূর্ধ্ব-১৯ দলে। ফেনীতে থাকার কারণ হচ্ছে ওখানে আমি সব সময় নেট বোলার পাচ্ছি, যেখানে যাচ্ছি সব কিছু আগে থেকে প্রস্তুত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সাপোর্ট স্টাফ। সেটা এখানে না থাকলে আমি একা একা কী প্র্যাকটিস করব? বোলিং না হয় একা একা করতে পারব, ব্যাটিং তো করতে পারব না।'
'ফিটনেসের ক্ষেত্রে একা দৌড়াতে পারব, অন্য কিছু তো করতে পারব না। সব কিছু এ রকমই। জাতীয় দলে খেলা ছিল, বায়ো বাবলের একটা বিষয় ছিল। হয়তো এই জায়গা ব্যবহার করতে পারতাম না। আসলে একদম ভোরে আসতে হতো। সব কিছু চিন্তা করে আসলে করা হয়নি। এখন যেহেতু আফগানিস্তান সিরিজ শেষ, মাঠ খোলা।' যোগ করেন তিনি।
গত বছরের অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে পিঠে চোট পান সাইফউদ্দিন। চোটে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়া এই পেসার দেশে ফিরে আসেন। বেশ কয়েকদিন বিশ্রামে থাকার পর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হয় তার। গত ২০ জানুয়ারি মাঠে ফেরার কথা ছিল সাইফউদ্দিনের। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী চোটের উন্নতি না হওয়ায় সেটা হয়নি। সে সময় বিসিবির মেডিকেল বিভাগ চোট পর্যবেক্ষণ করে জানায়, সাইফউদ্দিনের মাঠে ফিরতে আরও সময় লাগবে।