ওজনে গরু বেচাকেনা : না’গঞ্জে খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা
নারায়ণগঞ্জে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ওজনে গরু বেচাকেনা। জেলার সদর, বন্দর ও ফতুল্লায় প্রায় অর্ধশত খামারে প্রথমবারের মতো ওজনে গরু বেচাকেনা হচ্ছে। খড়-ভূসি-ঘাস খাইয়ে মোটাতাজা করা এসব গরুর বেশ চাহিদা রয়েছে কোরবানির পশুর হাটেও। ওজনে গরু বেচাকেনা হওয়ায় খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই।
ফতুল্লার দেলপাড়া এলাকার দেশী এগ্রো খামারের সত্ত্বাধিকারী নুসাইবা জানান, এবার তার খামারে প্রায় ৫৫টি গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। তার ফার্মে ছোট গরু ৩৮০ টাকা থেকে ৩৯০ টাকা কেজি দরে এবং বড় গরু ৪শ টাকা থেকে ৪শ ৫০ টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ...এতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে ঠক-জিতের (প্রতারিত হওয়ার) প্রশ্ন উঠছে না। ক্রেতা তার প্রায়োজন অনুযাযী ক্রয় করা গরু থেকে কী পরিমাণ মাংস পাবেন- তার একটা প্রাথমিক হিসেব কষে নিচ্ছেন। সাধারণত গরুর মোট ওজনের ৪০ শতাংশ বাদ দিয়ে মাংসের হিসেব কষা হয়।
এছাড়া জেলার নাবিলা এগ্রো ফার্ম, মরিয়া এগ্রো, আর কে এগ্রো, জাকির ফার্মে ওজনে গরু বেচাকেনা হচ্ছে। এসব ফার্মে প্রতিদিনই ভীড় করছেন ক্রেতারা।
নাবিলা এগ্রো ফার্মের গরু কিনতে আসা আব্দুল হাই মিলন বলেন, হাটে গরু কিনতে গেলে অনেক ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। আবার গরু কী খাইয়ে মোটাতাজা করা হয়েছে তা গরু দেখে বোঝার কোন উপায় নেই।
তিনি বলেন, ‘‘ফার্ম থেকে ওজনে গরু কিনে প্রতারিত হওয়ার সম্ভনা নেই। আমার চাহিদা অনুযায়ী গরু ওজন দিয়ে কিনতে পারছি। রোগ মুক্ত ও স্টয়রেড মুক্ত গরু কিনতে পেরে ভাল লাগছে।’’
মরিয়ম এগ্রোতে গরু কিনতে আসা সাফিয়া বেগম জানান, ‘আমার স্বামী বিদেশে থাকে। ছেলে মেয়েরাও ছোট। হাটে গিয়ে গরু কিনতে গেলে অনেক ধকল পেহাতে হয়। ঘুরে ঘুরে গরু পছন্দ করে বিক্রেতার সঙ্গে দর কষাকষি করতে হয়। কিন্তু খামারে সেই ঝামেলা নেই। তাই খামার থেকে গরু কিনছি।’
নগরীর ফকির টোলা মসজিদের খতিব মুফতি সিরাজুল ইসলাম মনির জানান, ‘‘ওজনে গরু বা পশু কিনে কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামের দৃষ্টিতে কোনো বিধি-নিষেধ নেই। আমাদের দেশে আগে মুরগি, ডিম, কলা, হাস গণনা করে বেচাকেনা হতো। কিন্তু বর্তমানে ওজনে বেচাকেনা হচ্ছে। তাই ওজনে গরু কিনে কোরবানি দেওয়াতে দোষের কিছু নেই।’’
ঈদুল আজহা উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে কোরবানির গরুর সংকট হবে না বলে জানান জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বাসনা আখতার।
তিনি বলেন, এখানকার খামারিরা দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করেছেন। এবার জেলার প্রায় ২২শ খামারে ৫০ হাজারের বেশি কোরবানিযোগ্য গরু রয়েছে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এসব গরু মোটাতাজা করণ হয়েছে।