তরুণ উদ্ভাবক হিমেলের ব্যতিক্রমী ‘জীবাণুনাশক বুথ’
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে আগন্তুকদের জীবাণুমুক্ত করতে মাত্র ২৫ হাজার টাকা খরচে স্বয়ংক্রিয় 'জীবাণুনাশক বুথ' তৈরির সহজ প্রযুক্তি প্রস্তুত করেছেন তরুণ উদ্ভাবক ত্রিদীপ বিশ্বাস হিমেল। তিনি নেত্রকোনা শহরের উকিলপাড়ার হারান বিশ্বাসের ছেলে।
গত বছর ময়মনসিংহের রুমডো ইনস্টিটিউট অব মডার্ন টেকনোলজি থেকে ইলেকট্রিক্যাল বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। তার প্রস্তুতকৃত জীবাণুনাশক বুথটি শহরের উকিলপাড়া রাস্তার মোড়ে প্রদর্শনীর জন্য স্থাপন করা হয়েছে।
ত্রিদীপ বিশ্বাস হিমেল জানান, মাত্র একটি করে সেন্সর, মোটর, স্প্রেগান, পানির ড্রাম, পাইপ, অটোলাইট, কয়েক টুকরো বাঁশের ফ্রেম, কাপড়, বিদ্যুৎ সংযোগ ও জীবাণুনাশক তরলের সাহায্যে এ বুথ তিনি তৈরি করেছেন। এটি পরিচালনা করার জন্য কোনো লোকের প্রয়োজন হবে না। বরং স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত হবে।
বুথের ভেতরে মানুষ প্রবেশ করা মাত্রই স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্প্রে হবে। আবার মানুষ বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্প্রে বন্ধ হয়ে যাবে। বিদ্যুৎ না থাকলে ব্যাটারির সাহায্যেও চালানো যাবে এ যন্ত্র।
হিমেলের দাবি, চীন থেকে আমদানি করা এ যন্ত্র কিনতে কমপক্ষে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা খরচ পড়বে। কিন্তু তার প্রস্তুত করা প্রযুক্তিতে তৈরি করলে সর্বোচ্চ ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ লাগবে। ফ্রেমের ওপর ভিত্তি করে খরচের কিছুটা তারতম্য হতে পারে।
ত্রিদীপ বিশ্বাস হিমেল বলেন, যেকোনো অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন বা জনবহুল স্থানের প্রবেশ পথে এ বুথ স্থাপন করে সহজেই মানুষকে জীবাণুমুক্ত করা যাবে।
হিমেলের প্রস্তুত করা প্রযুক্তিটি পরিদর্শন করে জেলা শহরের সাতপাই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, 'বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে এ প্রযুক্তি খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।'
হিমেল জানান, যদি কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চান, তাহলে তিনি সহযোগিতা করবেন।
শহরের বিভিন্ন এলাকার লোকজন প্রতিদিন উকিলপাড়া রাস্তার মোড়ে এসে হিমেলের যন্ত্রটি দেখছেন।
তরুণ উদ্ভাবক হিমেল এর আগে একাধিক যন্ত্র উদ্ভাবন করে নেত্রকোনার ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবকের পুরস্কার পেয়েছেন।