মুগ্ধতা ও রোমাঞ্চের দেশ নেপালে স্বাগতম!
বিগত কয়েক মাসে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিল হতে শুরু করায় আবারও জেগে উঠেছে নেপালের পর্যটন শিল্প। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আগত, বিশেষত বাংলাদেশের পর্যটকদের সাদরে বরণ করে নিতে প্রস্তুত দেশটি।
১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে কূটনীতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠার পর থেকে অনেকটা পথ একসাথেই চলেছে দুই দেশ। মহামারি শুরুর আগপর্যন্ত নেপাল ছিল বাংলাদেশিদের জন্য এক আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য। ছুটিছাটার মৌসুম এগিয়ে আসার সাথে সাথে তাই আবারও নেপাল ভ্রমণের সাড়া পড়ে গেছে দেশের পর্যটকদের মধ্যে।
প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও রোমাঞ্চে মিশে থাকা নেপাল তার মোহনীয় সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ করে রেখেছে অগণিত ভ্রমণপিপাসুকে। দেশটির চোখ জুড়ানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অবলোকন করা যেন অনেক ভ্রমণপ্রেমীর কাছে আজীবনের অভিজ্ঞতা!
একটু ভিন্নধর্মী ভ্রমণের স্বাদ যারা নিতে চান, নেপাল তাদের জন্য আদর্শ গন্তব্য। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে গেলে আপনি পাবেন সাফারির সৌন্দর্য্য, মাঝারি আকারের পাহাড়গুলোতে রোমাঞ্চকর অনুভূতি আর সুউচ্চ পর্বতমালায় পাবেন ট্রেকিং ও মাউন্টেনিয়ারিং এর রুদ্ধশ্বাস অভিজ্ঞতা।
হিমালয় পর্বতমালার পাশাপাশি ট্রেকিং, হাইকিং, রাফটিং (ভেলায় ভাসা), কায়াকিং বা ক্যানোয়িংও করতে পারেন পর্যটকেরা। এছাড়াও মাউন্টেন ফ্লাইট এবং আলট্রালাইট ফ্লাইট নেওয়ার সুযোগ তো থাকছেই।
শুধু তাই নয়, নেপালে আরও আছে পাখি দেখার, প্যারাগ্লাইডিং, জঙ্গল সাফারি, জিপ লাইনিং এবং বাঙ্গি জাম্পিং এর অভিজ্ঞতা নেওয়ার সুযোগ।
কাঠমান্ডু, নাগরকোট, পোখারা ও বান্দিপুর অঞ্চলগুলোতে বিলাসবহুল হোটেলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাঝারি আকারের পাহাড়গুলোকে পর্যটকেরা বেশি পছন্দ করেন। চাইলেই এসব এলাকার রিসোর্টগুলোতে আরামে দিন কাটানো যায়।
বিভিন্ন সভা, আলোচনা সভা ও প্রদর্শনী সংক্রান্ত পর্যটনের জন্যেও আদর্শ স্থানের অভাব নেই নেপালে। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রতিনিধিরা কাঠমান্ডু, পোখারা, চিত্বান, লুম্বিনি ও জনকপুরে বিশেষ সেবাসহ ভ্রমণ করতে পারবেন।
তবে এ সমস্ত ভ্রমণ আয়োজন অনেক সহজ করে দেওয়ার জন্য ইন্টারনেটকে ধন্যবাদ দিতেই হয়। অপরূপ সৌন্দর্য্যের দেশ নেপালে ছুটি কাটানোর জন্য আপনাকে খুব একটা ঝক্কি পোহাতে হবে না বললেই চলে। মাত্র কয়েকদিনের প্রস্তুতি নিয়েই পর্যটকেরা চলে আসতে পারবেন নাগরকোটের চোখ জুড়ানো সূর্যোদয়ের দৃশ্য দেখতে কিংবা পোখারায় হ্রদের পাশে শুয়ে আয়েশ করতে।
আর বাংলাদেশি ট্রেকিংপ্রেমীদের জন্য আকাশপথে নেপাল মাত্র ঘন্টাখানেকের পথ।
বাংলাদেশ থেকে নেপালে সরাসরি ফ্লাইট চালু হওয়ায় এটি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সামাজিক-সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এদিকে হিমালয় এয়ারলাইনসের প্রতি রবিবার ও বুধবার কাঠমান্ডু-ঢাকা-কাঠমান্ডু ফ্লাইট রয়েছে।
এছাড়াও, পর্যটকদের জন্য নেপালে পৌছানোর পর স্থলবন্দরে এন্ট্রি ভিসা দেওয়ার সুবিধাও রেখেছে দেশটি।
ভোজনপ্রেমীদেরও নিরাশ করবে না নেপাল। প্রচুর স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে এখানে। বাংলাদেশি পর্যটকদের সুবিধার জন্য ক্যাটারিং সেবাও প্রদান করে তারা।
চলতি বছরের মার্চে বাংলাদেশ সরকার ও নেপাল সরকারের মধ্যে পর্যটন সহযোগিতা নিয়ে একটি স্মারকলিপি স্বাক্ষরিত হয়।
যথাযথ প্রস্তুতিসহ নেপালি পর্যটকেরাও চাইলে বাংলাদেশের বৌদ্ধ মন্দির, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ও সুন্দরবন ঘুরে দেখতে পারবেন।
সকলের প্রত্যাশা, ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুন্দর ও জোরদার হবে।