শিশুদের মুটিয়ে যাওয়া ঠেকাবে ফুলক্রিম দুধ
বাজারে প্রচলিত বাণিজ্যিক দুধের মান ও বিশুদ্ধতা নিয়ে চলতি দশকে অসংখ্য নেতিবাচক খবর গণমাধ্যমে এসেছে। খাদ্যপণ্যটির মান নিয়ে যা গণমানুষে অনেক নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেয়। উন্নত দেশগুলোর ভোক্তারা তাই এখন খুব সচেতনভাবেই দুধ এবং এর উপজাত পণ্য নির্বাচন করে থাকেন।
ভোক্তাদের এই সচেতনতার প্রধান বলি হয়েছে ফুল ক্রিম বা পূর্ণ ননী যুক্ত দুধের বাজার। মুটিয়ে যাওয়াসহ নানাবিধ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা বিবেচনা করেই এমনটি করছেন ভোক্তারা। এর পাশাপাশি পশ্চিমা বিশ্বে নিরামিষভোজী ডায়েটের অভ্যস্ত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধিও এর পেছনে ভূমিকা রাখে।
তবে ব্রিটিশ পুষ্টিবিদদের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হচ্ছে, এ ধরনের ভোক্তা বিশ্বাসের পেছনে বিজ্ঞানের চাইতে প্রচলিত অন্ধ বিশ্বাসই দায়ী। পূর্ণ ননীর দুধ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়, বিশেষ করে শিশুদের বিকাশে এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। গবেষণাটি করেছে যুক্তরাজ্যের অ্যাসোসিয়েশন অব ডায়েটিশিয়ানস।
পুষ্টি বিশারদ লুসি আপটন জানান, পূর্ণ ননীর গরুর দুধ পান করাটা শিশুর বিকাশের জন্য একদম আবশ্যক। কারণ ননী সমৃদ্ধ ঘন দুধেই তাদের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম, আয়োডিন, ভিটামিন এ এবং বি১২ এর পরিমাণ থাকে সবচেয়ে বেশি। ননী শিশুদের প্রাণচাঞ্চলের জন্য প্রয়োজনীয় বাড়তি শক্তিরও যোগান দেয়।
শিশুদের ডায়েটে মূল তিনটি শক্তি যোগানদাতা উৎস হলো দুধজাত খাবার, আমিষ এবং শর্করা জাতীয় খাদ্যের সুষম উপস্থিতি। বড়দের চাইতে ছোটদের প্রতি পাউন্ড খাদ্যে শক্তির উৎস বেশি থাকা প্রয়োজন।
লুসি আরও জানান, এইক্ষেত্রে একজন দুই বছর বয়সী শিশুর প্রতি পাউন্ড খাদ্যে একজন পূর্ণ বয়স্কের তুলনায় ৮০ ক্যালোরি বেশি থাকা দরকার। বড়দের ক্ষেত্রে ৪০ ক্যালোরি থাকলেই যথেষ্ট।
এছাড়াও গবেষণায় আরও দেখা গেছে, যে সব শিশু পূর্ণ ননীর দুধ পান করে তাদের মুটিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি যারা ননী ছাড়া পান করে তাদের তুলনায় খুবই কম। অবশ্য এই গবেষণার মূল প্রক্রিয়া ছিল পর্যবেক্ষণ নির্ভর।
ব্রিটিশ পুষ্টিবিদরা বলছেন, ক্যালোরি বেশি থাকা স্বত্বেও তাই এখন মুটিয়ে যাওয়ার ভয়ে ননীযুক্ত দুধ পরিহারের কোনো দরকার নেই। তবে শিশুর যদি এই ধরনের দুধপানের ফলে অ্যালার্জি বা বদহজমের মতো সমস্যা হয়, তবে তা এড়িয়ে চলাই ভালো। অবশ্য এমন শিশুর সংখ্যা ২ থেকে ৭ শতাংশের বেশি নয়।