হ্যাকার জিমেইল বিক্রি করে ১৫৬ ও ফেসবুক ৭৫ ডলারে
আপনি কি আপনার অনলাইন অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার মূল্য কত হতে পারে অনুমান করতে পারেন? আপনি না পারলেও হ্যাকাররা পারে। ডার্ক ওয়েবে বিনিময় হওয়া এমন লগইন অ্যাকাউন্টের লেনদেনের গড় একটা হিসাব সম্প্রতি নতুন একটি প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে।
ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাইবার সিকিউরিটি ফার্ম নর্ডভিপিএন, ডার্ক ওয়েবের শত শত অ্যাকাউন্ট পর্যলোচনা করে দেখেছে, সেখানে নিয়মিত এরকম চুরি হওয়া, হাতিয়ে নেওয়া অ্যাকাউন্ট ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। হ্যাক করা ফেসবুক অ্যাকাউন্টের গড় মূল্য ৭৪.৫০ ডলার, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের ৫৫.৪৫ ডলার আর টুইটারের ৪৯ ডলার। এই মূল্যেই অ্যাকাউন্টগুলো বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে নর্ডভিপিএন বিশ্লেষক ড্যানিয়েল মার্কুসন বলেন, বিক্রি করা এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোর দাম 'তুলনামূলকভাবে কম'। তবে হ্যাকাররা এসব অ্যাকাউন্ট নিয়মিত ব্যবহার করে বড় লোভনীয় অপরাধ সংঘটনের জন্য।
এই চুরি করা তথ্য ব্যবহার করে অনেক ধরনের জালিয়াতিমূলক অপরাধ ঘটানো সম্ভব, তাই অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত করার বিষয়টিকে অবহেলা করা যাবে না, আরও বলেন মার্কুসন।
একটি হ্যাক করা জিমেইল অ্যাকাউন্টের গড় বিক্রয়মূল্য গড়ে সর্বোচ্চ ১৫৫.৭৩ ডলার। কারণ একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট মোটামুটি ব্যবহারকারীর তথ্যের ভাণ্ডার। এখান থেকে ব্যক্তির জীবন ও ব্যবসায়িকসহ যাবতীয় কাজর্মের ধারণা পাওয়া যায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) জানায়, হ্যাকাররা চুরি করা ইমেইল অ্যাকাউন্টের তথ্য নিয়মিতভাবে পাঠানোর মাধ্যমে অপরাধ ঘটাতে থাকে।
এদিকে ২০১৯ সালে ইমেইল অ্যাকাউন্ট তথ্য চুরির কারণে ব্যবসায়িক ক্ষতির পরিমাণ ১.৭ বিলিয়ন ডলার। ফায়ার আইয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সাইবার অপরাধের ৯১ শতাংশই ইমেল দিয়ে শুরু হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোর চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হ'ল পেমেন্ট প্রসেসিং সার্ভিস অ্যাকাউন্টগুলো। যা হ্যাকাররা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর শনাক্ত হওয়া এড়িয়ে নগদ অর্থ স্থানান্তরের কাজে ব্যবহার করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হ্যাকাররা ১০০০-৩০০০ ডলার পর্যন্ত চুরি করা অর্থ পেপাল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে স্থানান্তরের জন্য গড়ে ৩২০ ডলার ফি নেয়।
আর ক্রেডিট কার্ড এবং ডেবিট কার্ডের তথ্য আদানপ্রদান মূল্য অবশ্য কম-গড়ে গড়ে ১৫ থেকে ৩৫ ডলার। কার্ডে মূল্য কম কারণ এই লেনদেনগুলো সহজেই শনাক্ত করা যায়।
প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে, অ্যাকাউন্ট আপসরফায় বিক্রি হওয়া ঠেকাতে প্রত্যেকের উচিত নিয়মিত তাদের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে, তাহলে অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত থাকবে। অতীতে অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে কিনা, পাসওয়ার্ড চুরি হয়েছে কিনার বোঝার জন্য Have I Been Pwned এবং পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করা যেতে পারে।
সূত্র:বিজনেস ইনসাইডার