৩ হাজার ক্যামেরার বিশাল সংগ্রহশালা গড়েছিলেন যে ব্যক্তি
ফটোগ্রাফারদের অনেকেরই শখ থাকে ক্যামেরা সংগ্রহের। ছবি তোলার প্রতি অপরিসীম প্রেম থেকে তারা নিজেদের পুরনো ক্যামেরাগুলো সযত্নে তুলে রাখেন। দেশে বিদেশে অনেকেই ক্যামেরা সংগ্রহের শখ মেটাতে কাজ করে গেলেও বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্যামেরার সংগ্রহশালাটি কোথায় তা অনেকেই জানেন না।
বিবিসি তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ক্যামেরার বিশাল এই সংগ্রহশালাটি স্কটল্যান্ডের একটি নিভৃত গ্রামে অবস্থিত। দেশটির ইস্ট নিউকেতে অবস্থিত এই গ্রামটির নাম সেইন্ট মোনাস। আর সংগ্রহশালাটি প্রতিষ্ঠা করেছেন ন্যাভিল জিম ম্যাথিউ নামের একজন ব্যক্তি।
জিমের হাতে গড়া এই সংগ্রহশালায় সারিবদ্ধভাবে সাজানো আছে প্রায় তিন হাজার ক্যামেরা যা অনেক জাদুঘরেও নেই।
ওই গ্রামের স্যালভেশন আর্মি হলে তিনি গড়ে তুলেছেন এই সংগ্রহশালা যাতে ক্যামেরার পাশাপাশি ক্যামেরা সংক্রান্ত অন্যান্য জিনিসপত্রও থরে থরে সাজানো রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ইউরোপিয়ান মডেলের এমনসব স্টেরিওস্কোপিক এবং থ্রিডি ক্যামেরা যা পশ্চিমা দেশগুলোতে বেশ দুর্লভ।
কোডাক ব্রাউনি ব্র্যান্ডের যতোগুলো ক্যামেরা এ পর্যন্ত বের হয়েছে তার সবকটিই আছে এই সংগ্রহশালায়। ১৯০০ সালের দিকে প্রথমবারের মতো যখন এই ক্যামেরা বাজারে আসে তখন এর দাম ছিল ১ ডলার।
জীবদ্দশায় জিম চেয়েছিলেন তার এই সংগ্রহশালাকে উন্মুক্ত করে দিতে। কিন্তু বয়স বেড়ে যাওয়ায় এবং শরীরে অসুস্থতা বাসা বাধায় বিষয়টি তার জন্য বেশ কঠিন হয়ে যায়। ওই সময় তিনি তাই গ্রামে উৎসব উপলক্ষ্যে বছরে একদিন সংগ্রহশালাটি উন্মুক্ত করে দিতেন।
তার স্ত্রী ডরোথি বিবিসিকে বলেন, "লোকজন যখন ক্যামেরা দেখতে হলে আসতো, তখন জিম এইসব বিষয়ে সবার সঙ্গে কথা বলাটা বেশ উপভোগ করতো। সে কথায় এতোটাই মজে যেতো যে আমিও কখনো কখনো এসে তাকে থামাতাম। ও খুব ভালো বক্তা ছিল। নিজের আগ্রহের বিষয়ে ও দীর্ঘ সময় কথা বলে যেতো।"
মৃত্যুর ২৪ বছর আগে থেকে তিনি এই সংগ্রহশালাটি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন। ইউরোপ, আমেরিকার বিভিন্ন শহর ঘুরে ঘুরে দুষ্প্রাপ্য এসব ক্যামেরা সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে ৮১ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিক কারণে অসুস্থ হয়ে জিম মারা যান।