৪৮ দিনে ১০৩ টন বর্জ্য তোলা হল সাগর থেকে
টানা ৪৮ দিন ধরে প্রশান্ত মহাসাগরে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালিয়ে ১০৩টন প্লাস্টিক বর্জ্য উদ্ধার করেছে পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা ওশেন ভয়েজ ইন্সটিটিউট। ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই অলাভজনক প্রতিষ্ঠানটি সমুদ্রের পরিবেশ রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে গত ৪০ বছর ধরে। এরই অংশ হিসেবে প্রশান্ত মহাসাগরে 'গ্রেট প্যাসিফিক গারবেজ প্যাচ' থেকে বর্জ্য পরিষ্কারের উদ্যোগ নেয় সংস্থাটি।
এই গ্রেট প্যাসিফিক গারবেজ প্যাচ কি?
প্রতিদিনের সমস্ত ময়লা, আবর্জনা সমুদ্রে ফেলা হয়। বিভিন্ন নদী, জলাশয় থেকে স্রোতের টানেও অনেক ময়লা গিয়ে জমা হয় প্রশান্ত মহাসাগরে। এভাবে ধীরে ধীরে ময়লা জমে জমে ক্যালিফোর্নিয়া ও হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মাঝামাঝি প্রশান্ত মহাসাগরে ময়লার একটা বিশাল আস্তরণ জমে গেছে। এটাই গ্রেট প্যাসিফিক গারবেজ প্যাচ।
ওশেন ভয়েজ ইন্সটিটিউট এর এক সদস্য বলেন, এবারের এই অভিযানে আমরা ১০৩টন প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করেছি। কিন্তু এটা এক বালতি পানি থেকে এক ফোঁটা পানি তুলে আনার মতোই সামান্য। আরও বিশাল পরিমাণ ময়লা ঐ এলাকায় ভাসছে।
তুলে আনা এই প্লাস্টিক ময়লার অধিকাংশই ছিল মাছ ধরার সরঞ্জাম আর মানুষের ফেলে আসা পণ্যের আবর্জনা। যেমন পানীয়ের বোতল, খাবারের প্যাকেট, একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের প্লেট, চামচ, গ্লাস, কাপ ইত্যাদি।
এদের মধ্যে ছিল মাছ ধরার জাল, যাদেরকে গোস্ট নেট বা ভৌতিক জালও বলা হয়। কেননা পানিতে ভাসমান এই জালগুলো দেখা যায় না দূর থেকে। ফলে অনেক সময় পানিতে সাঁতার কাটা অবস্থায় এসমস্ত জালে আটকা পড়ে মারা যায় সামুদ্রিক প্রাণীরা।
ওশেন ভয়েজ ইন্সটিটিউট এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক ম্যারি ক্রাওলি বলেন, 'এই অভিযানে সবচেয়ে দুঃখজনক দৃশ্য ছিল- আমরা যখন এই জালগুলো তুলে আনি, দেখা গেল অনেক কচ্ছপের কংকাল। জালে আটকা পড়ে আর বের হতে পারেনি তারা, সেখানেই মারা গেছে।'
প্রশান্ত মহাসাগরের এই অঞ্চলে এখনও প্রায় ৮০ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য ভাসছে। ম্যারি ক্রাওলি জানান, তাদের লক্ষ্য সমুদ্রে যত আবর্জনা আছে সেগুলো পরিষ্কার করা। এরপর তিনমাস ধরে তিনটি জাহাজ নিয়ে অভিযান পরিচালনা করতে চায় তার দল।
ম্যারি জানান, 'এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানগুলো নিঃসন্দেহে সামুদ্রিক পরিবেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এতে করে সামুদ্রিক ডলফিন, তিমি, কচ্ছপ আর হাঙ্গররা জালে আটকা পড়ে মারা যাবে না, মাইক্রোপ্লাস্টিক খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়বে না তারা'।