মাত্র সোয়া কোটি রুপিতে ভারতবর্ষের ৩ উপনিবেশ কিনে নিয়েছিল ব্রিটিশরা!
ভারতের তামিলনাড়ুর দক্ষিণ-পূর্ব সমুদ্রতটে মৎস্যজীবী অধ্যুষিত ছোট্ট একটি জনপদ থরঙ্গমবাড়ি। সহজ বাংলায় বললে তরঙ্গমবাড়ি। এর অর্থ কী হতে পারে নিশ্চয়ই তার কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছেন। তরঙ্গমবাড়ি—শুনতে মধুর এ শব্দের মানে হলো 'যেখানে সমুদ্রের ঢেউ একসঙ্গে গুনগুনিয়ে ওঠে'। অথবা অনেকে বলে থাকেন, 'সমুদ্র যেখানে সঙ্গীতময়'।
আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে ভারতবর্ষের সঙ্গে বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যে এই তরঙ্গমবাড়িতেই এসে পৌঁছেছিল দিনেমার তথা ড্যানিশ নাবিক ও ব্যবসায়ীদের একটি দল। ড্যানিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পত্তন, এরপর ভারতে বাণিজ্যকুঠি স্থাপন, রমরমা মসলার ব্যবসা—সব মিলিয়ে উপমহাদেশে দিনেমারদের শুরুটা ভালো হলেও ২০০ বছর পর শেষমেশ সবকিছু ব্রিটিশদের কাছে বিক্রি করে দিয়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে হয়েছিল তাদের।
দিনেমারদের ভারতে আসার এবং ছেড়ে যাওয়ার ইতিহাস উঠে এসেছে বিবিসির এক প্রতিবেদনে। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর পাঠকদের জন্য তা প্রকাশ করা হলো।
ভারতবর্ষে দিনেমারদের আগমন
ইংরেজদের মতোই দিনেমারেরাও ভারতবর্ষে আসে মূলত ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যেই। উল্লেখ্য, দিনেমার বলতে কেবল ডেনমার্কের অধিবাসীদের বোঝানো হচ্ছে না। কারণ ১৮১৪ সালে নরওয়ে স্বাধীনতা লাভ করার আগ পর্যন্ত এ দেশটি ও ডেনমার্ক ছিল তৎকালীন ডেনমার্কের রাজা চতুর্থ ক্রিশ্চিয়ানের শাসনাধীন। তাই বলার সুবিধার্থে এখানে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তৎকালীন দেশ দুটিকে একত্রে বলা হচ্ছে ড্যানিশ-নরওয়েজিয়ান ইউনিয়ন।
উপমহাদেশের লাভজনক মসলা ব্যবসার কথা শুনে ১৬১৬ সালে ডেনমার্ক তথা ড্যানিশ-নরওয়েজিয়ান ইউনিয়নের রাজা চতুর্থ ক্রিশ্চিয়ান ড্যানিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গঠনের নির্দেশ দেন। উদ্দেশ্য ছিল তৎকালীন সিলন (বর্তমান শ্রীলংকা) এবং ভারতে গোল মরিচ ও এলাচসহ নানা মসলার বাণিজ্য করা।
কিন্তু কোম্পানি গঠন করা হলেও মসলার ব্যবসার ওপর ড্যানিশ বিনিয়োগকারীদের প্রথমদিকে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস না থাকায় প্রয়োজনীয় মূলধন জোগাড় সম্ভব হয়নি। ফলে কোম্পানি প্রতিষ্ঠার প্রথম প্রায় দুই বছর দেশ দুটিতে কোনো বাণিজ্যিক বহর পাঠানো যায়নি। এতে কোম্পানির ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ছিল স্থগিত।
এরপর ১৬১৮ সালের শেষের দিকে একদল নাবিক অ্যাডমিরাল ড্যান ও'জেদে-র নেতৃত্বে ভারতবর্ষের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান। শ্রীলংকায় পৌঁছাতে তাদের সময় লেগেছিল প্রায় দুই বছর। আসার পথে নানা কারণে প্রাণ হারাতে হয়েছিল নাবিকদলের অর্ধেকের।
তাদের শ্রীলংকায় বাণিজ্য গোড়াপত্তনের প্রাথমিক পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তবে এক গ্যাজেটিয়ার অনুসারে, ১৬২০ সালের মে মাসের ১০ তারিখে দ্বীপটির পূর্ব উপকূলবর্তী বন্দরনগরী ত্রিঙ্কোমালীতে দুই দেশের মাঝে একটি ব্যবসায়িক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল।
একই বছরে একটি ড্যানিশ বহর এসে পৌঁছায় তরঙ্গমবাড়িতে। তবে দিনেমাররা এসে এ নামটি উচ্চারণ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে যায়। ফলে তারা জায়গাটির নাম বদলে রাখে ট্র্যানকুয়েবার।
তখন এ অঞ্চলটি ছিল থাঞ্জাভুরের রাজা বিজয় রঘুনাথ নায়কের শাসনাধীন।
দিনেমাররা এসে ব্যবসা গড়ে তোলার চেষ্টা চালাতে থাকে। আর ওদিকে রাজা বিজয়েরও বাণিজ্যসম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহ ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ১৬২০ সালের নভেম্বরের ২০ তারিখে রাজা বিজয় ও ড্যানিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মাঝে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। এ চুক্তি অনুসারে দিনেমার বণিকরা মরিচসহ অন্যান্য মসলা রপ্তানির অনুমতি লাভ করে। বিনিময়ে রাজস্ব হিসেবে কোম্পানিকে গুনতে হবে বার্ষিক ৩ হাজার ১১১ রুপি।
এছাড়া দেওয়ানিও লাভ করে ড্যানিশ কোম্পানি। ফলে পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে খাজনা আদায়ের এখতিয়ার পেয়ে যায় তারা। বিনিময়ে প্রতি বছর বিজয়া দশমীর উৎসবে রাজাকে দিতে হতো দুই হাজার চক্রম (একপ্রকার মুদ্রা)।
কোম্পানিটির প্রথম গভর্নর ছিলেন ও'জেদে। এখানেই সমুদ্রতট থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে তিনি স্থানীয় লোকবলের সহায়তায় নির্মাণ করেন সুবিশাল ড্যানসবার্গ কেল্লা।
মাত্র কয়েক মাস ভারতে থাকার পর ও'জেদে দেশে ফিরে গেলে তাকে প্রতিস্থাপন করেন রোনাল্ড ক্রিপ।
মূল জাহাজ আসার এক মাস আগে রোনাল্ড একটি মালবাহী জাহাজে চেপে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন। বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি এসে পর্তুগিজ জাহাজের আক্রমণের মুখে পড়লে তার জাহাজটি পুরোপুরি ডুবে যায়। ড্যানিশ নাবিকদলের অনেক সদস্যকে হত্যা কিংবা বন্দী করা হয়। কিন্তু নিজের প্রাণ বাঁচিয়ে মাত্র ১৩ জনকে নিয়ে শেষমেশ তরঙ্গমবাড়িতে এসে পৌঁছান রোনাল্ড।
গভর্নরের পদে আসীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোনাল্ড তরঙ্গমবাড়ির ড্যানিশ বাণিজ্যকুঠি ভারতসহ অন্যান্য এশীয় দেশগুলোতে প্রসার করতে থাকেন। এ চেষ্টা চলতে থাকে ১৬৩৬ সালে গভর্নর পদে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত।
তিনি প্রথমে ব্যবসাকে দক্ষিণে শ্রীলংকার দিকে সম্প্রসারণ করেন। ১৬২৫ সাল নাগাদ, মাসুলিপাটনামে (বর্তমানে অন্ধ্রপ্রদেশে অবস্থিত) একটি কারখানা স্থাপন করা হয়। বাণিজ্যের দিক থেকে এ অঞ্চলটি ছিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। পিপলি, সুরাট, জাভা, বালাশোরের মতো জায়গায় স্থাপন করা হয় বাণিজ্য দপ্তর। এক ডাচ প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরে পিপলি কারখানা বেশ সফলতার মুখ দেখেছিল।
কিন্তু মাত্র দুই বছরের মধ্যে, ১৬২৭ সাল নাগাদ, ড্যানিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে রয়ে যায় মাত্র তিনটি জাহাজ। সে বছর তরঙ্গমবাড়ি তথা ট্র্যানকুয়েবার ও পুডুচেরি অঞ্চলের খাজনা পরিশোধে ব্যর্থ হয় কোম্পানিটি।
রোনাল্ডের পর গভর্নর হিসেবে আসেন ব্রেন্ট পেসার্ট। ১৬৩৬ থেকে ১৬৪৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অনেক ঝুঁকি নিয়ে নানা প্রকল্প হাতে নিলেও ব্যর্থ হন তিনি। ফলে ইতোমধ্যে দেনায় জর্জরিত ড্যানিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ঋণের বোঝা আরও বেড়ে যায়।
মোগল সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা
১৬৪২ সালে এসে ড্যানিশ-নরওয়ে উপনিবেশ মোগল সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এরপর বঙ্গোপসাগরে মোগল জাহাজগুলোতে আক্রমণ শুরু করে দেয় এবং কয়েক মাসের মধ্যেই একটি জাহাজ দখলে সক্ষম হয় তারা। এই জাহাজ থেকে প্রাপ্ত জিনিসপত্র ট্র্যানকুয়েবারে বিক্রি করে কিছু মুনাফা করে ড্যানিশরা।
পিপলিতে একটি এবং উড়িষ্যার কাছাকাছি এলাকায় আরও দুটি জাহাজ পুড়িয়ে দিলে মোগলরা ক্ষেপে যায়। কিন্তু মোগল সাম্রাজ্যের অঞ্চলগুলোতে কোনো দিনেমার বাণিজ্যকুঠি না থাকায় এর বিহিত করতে পারছিলেন না সম্রাট।
মোগল সাম্রাজ্যের বেশিরভাগ অর্থ আসত স্থলপথের বাণিজ্যের মাধ্যমে। আর নৌপথের বাণিজ্যের দায়িত্ব ছিল কিছু বণিকদলের হাতে। সমুদ্রে মোগল সিংহাসনের ক্ষমতা সীমিত হওয়ায় দিনেমারদের প্রতিহত করতে অন্য উপায় অবলম্বন করার চিন্তা করতে থাকে সম্রাটের কলাকুশলীরা।
প্রথমে তাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করে মোগলরা। এতে ব্যর্থ হলে ড্যানিশ আক্রমণ ঠেকাতে অন্যান্য ইউরোপীয় শাসকদের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে তারা।
১৬৪৫ থেকে ১৬৪৮ সালের মাঝে ট্রানকুয়েবারে মোট দুবার আক্রমণ করেন রাজা বিজয়। এতে বিপুল ক্ষতি হয়ে দিনেমারদের।
১৬৪৮ সালে রাজা চতুর্থ ক্রিশ্চিয়ান মারা যাওয়ার পর ড্যানিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যায়। এর দুই বছর পর তার ছেলে রাজা তৃতীয় ফ্রেডারিক কোম্পানিটি বন্ধ করার ঘোষণা দেন।
ড্যানিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বিতীয় উত্থান
পরবর্তীতে আরেকটি ড্যানিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি স্থাপনের মাধ্যমে ডেনমার্ক-নরওয়ে এবং ট্র্যানকুয়েবারের মধ্যকার বাণিজ্য আবার শুরু হয়। গঠিত হতে থাকে নতুন নতুন বাণিজ্যকুঠি। ১৬৯৮ সাল নাগাদ তারা বাংলাসহ মোট তিন জায়গায় কুঠি স্থাপন করে।
অন্যদিকে পর্তুগিজরা ১৬৯৬ সালে কেরালার ভার্কালাতে তাদের কুঠি স্থাপন করে। এখানে দিনেমারদের ব্যবসা ছিল নামমাত্র।
পশ্চিমবঙ্গে দিনেমারেরা
পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুরে ড্যানিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রভাব ছিল ভালোই। হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত এ অঞ্চলটি ১৭৫৫ থেকে ১৮৪৫ সাল পর্যন্ত ড্যানিশ উপনিবেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তখন এর নাম ছিল ফ্রেডারিক নগর।
ফরাসীদের সাহায্যে ড্যানিশরা প্রথমবার শ্রীরামপুরে আসে ১৭৫৫ সালে। এখানে নবাব আলীবর্দি খানকে খাজনা বাবদ বাৎসরিক এক লাখ ৫০ হাজার রুপির বেশি প্রদানের শর্তে ৬০ বিঘা জমির মালিকানা লাভ করে তারা। তবে এটি ছিল কেবল একটি বাণিজ্যকুঠি, তাদের জন্য ড্যান্সবার্গের মতো সেনানিবাস স্থাপন নিষিদ্ধ করে দেন নবাব।
ড্যানিশ উপনিবেশের এ সময়ে বাংলার তাঁত শিল্প দারুণ অগগ্রতি লাভ করে। সিল্ক, নকশা করা সুতির কাপড়, কালামকারির রমরমা ব্যবসা চলতে থাকে এসময়। ১৭৭২ থেকে ১৮০৮ পর্যন্ত ড্যানিশ-নরওয়েজিয়ান ইউনিয়নের ব্যবসার ব্যাপ্তি ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। ফলে ট্র্যানকুয়েবারে ড্যানিশ ঘাঁটি আরও শক্তিশালী করা হয় এবং ১৭৭৭ সালে এলাকাটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। তবে ভারতে তখন মাত্র ৩০০ জন ড্যানিশ অবশিষ্ট ছিল।
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে ড্যানিশদের ভারতীয় উপনিবেশ বিক্রি
ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়নের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালীন ১৮০১ সালে ব্রিটেন ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে আক্রমণ চালায়। এরপর ১৮০৭ সালে ব্রিটেন পুনরায় আক্রমণ করলে ডেনমার্ক হেরে যায় এবং ব্রিটেনের কাছে হেলিগোল্যান্ড দ্বীপ সমর্পণ করতে বাধ্য হয়।
১৮১৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত লন্ডন গেজেটের প্রতিবেদন অনুসারে, ১৮০৮ সালের ২৫ জানুয়ারি অ্যাংলো-ড্যানিশ শত্রুতার খবর ভারতে এসে পৌঁছালে ব্রিটিশরা তৎক্ষণাৎ হুগলিতে থাকা সাতটি ড্যানিশ বাণিজ্যিক জাহাজ দখল করে নেয়।
ক্রিস্টিয়ান গ্রোনসেথ 'আ লিটল পিস অভ ডেনমার্ক ইন ইন্ডিয়া' বইয়ে লেখেন, ব্রিটিশ ভারতের অংশভুক্ত হওয়ার পর ট্র্যানকুয়েবার বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা হারায় এবং এর গুরুত্বও দ্রুত কমতে থাকে।
শেষমেশ ১৮৪৫ সালে ডেনমার্কের রাজা তরঙ্গমবাড়ি, বালাশোর এবং শ্রীরামপুরের বাণিজ্যকুঠি ব্রিটিশদের কাছে সাড়ে ১২ লাখ রুপিতে বিক্রি করে দেন। লেনদেনটি ১১ অক্টোবর ফ্রেডারিক নগর এবং ৭ নভেম্বর তরঙ্গমবাড়িতে দুই ধাপে শেষ হয়।
বর্তমানে তামিলনাড়ুতে দিনেমাররা না থাকলেও তাদের স্মৃতিচিহ্ন এখনো সর্বত্র দৃশ্যমান। শহরের মূল প্রবেশপথ ল্যান্ডপোর্টেন (টাউন গেইট) ছিল ড্যানিশদের অধিকৃত ট্র্যানকুয়েবারের কুঠির মূল দেয়ালের অংশ। এছাড়া সেকালে নাম দেওয়া কিং স্ট্রিট এখনও একই নামে রয়ে গেছে। এমনকি তরঙ্গমবাড়ির বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় এখনো ড্যানিশ ঐতিহ্যের ছাপ রয়ে গেছে। এখানকার অধিকাংশ স্কুল সেইন্ট তেরেসা কনভেন্ট এবং তামিল ইভাঞ্জেলিক্যাল লুথেরান চার্চ দ্বারা পরিচালিত। সবকিছুই যেন তখনকার দিনের মতোই আছে, কেবল ট্র্যানকুয়েবার তার আগের নামে ফিরে গিয়ে আবার তরঙ্গমবাড়ি নামধারণ করেছে।
রাস্তার দু'ধারের মিশনারি স্কুল, পুরোনো সমাধি, বিশপের বাংলো, ড্যান্সবার্গ দুর্গ—ইতিহাসের সঙ্গে তরঙ্গমবাড়ির জনপদ যেন মিলেমিশে একাকার। সবকিছুই এক পুরোনো ড্যানিশ উপনিবেশের স্মৃতিকে উসকে দেয়, চারপাশের দৃশ্যপট এখনো যেন চোখের সানবে ড্যানিশ ঔপনিবেশকতার অধ্যায় মেলে ধরে।