মাত্র ১০০ টাকায় অফিসেই পৌঁছে যাবে বাড়ির রান্না খাবার!
সাত সকালে ঘুম থেকে উঠে অফিসের পানে ছুটে চলা বঙ্গের নারী-পুরুষের জীবনে প্রায় নৈমিত্তিক ব্যাপার। তার উপর রাস্তায় জ্যাম হলে তো কথাই নেই। যেভাবেই হোক, নির্ধারিত সময়ে অফিসে পৌঁছাতেই হবে। সময়মতো অফিসে পৌঁছানোর তাড়নায় অনেকে হয়তো দুপুরের খাবার নিতেই ভুলে যান।
তাই দুপুরের খাবারের সহজ সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছে বিভিন্ন ক্যাটারিং সার্ভিস। ভাজা-পোড়াকে দূরে রেখে ৯৯ টাকা থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে বাড়ির খাবারের মতো খাবার অফিসে সরবরাহ করেন তারা। স্বল্প খরচে মানসম্মত খাবার সরবরাহকারী এসব ক্যাটারিং সার্ভিসের অবস্থান আমাদের আশেপাশেই। আজ তাদেরই গল্প শোনাব।
অসবিডি কিচেন
৯৯ টাকার ভেতরে বিভিন্ন অফিসে দুপুরের খাবার পৌঁছে দেয়ার জন্য সবার আগে যাদের নাম উঠে আসে তাদের মধ্যে অন্যতম অসবিডি কিচেন। বাড়ির খাবারের মতো স্বাদযুক্ত খাবার পৌঁছে দেয়া এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে। একটি ফোনকলেই কখনো বাহারি ভর্তা-ভাত আবার কখনো মাছ, ডিম, ডাল কিংবা মুড়িঘণ্ট নিয়ে দোরগোড়ায় হাজির হন তারা। শুধু বাংলা খাবারই নয়, সপ্তাহে দুইদিন তারা পরিবেশন করেন পোলাও, খিচুড়ি কিংবা চাইনিজ খাবার।
প্রতিদিন প্রায় ৫০০টির মতো লাঞ্চবক্স বিভিন্ন অফিসে সরবরাহ করে থাকে অসবিডি কিচেন। ক্যাটারিংয়ের জন্য রান্নার কাজ করা হয় তেজগাঁও ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকায়। সেখানে বাংলা খাবার ও চাইনিজ খাবারের জন্য আলাদা বাবুর্চি রয়েছে।
তাদের রান্নার প্রস্তুতি শুরু হয় একদিন আগ থেকেই। যেদিন খাবার সরবরাহ করা হবে সেদিন সকাল ১০টার মধ্যে রান্নাবান্না সব শেষ হয়ে যায়। এরপর শুরু হয় প্যাকিংয়ের কাজ। এরপর দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে বিভিন্ন অফিসে সরবরাহ করা হয় খাবার। তেজগাঁও, নিকেতন, গুলশান, বনানী, মহাখালী ডিওএইচএস, হাতিরঝিল, বাড্ডা ও বারিধারার বিভিন্ন অফিসে খাবার পৌঁছে দেন তারা।
বর্তমানে তাদের সরবরাহকৃত খাবারের মধ্যে ভাত, ভাজি, ডাল, সবজি, বিরিয়ানি, মুরগি বা গরুর মাংস, খিচুড়ি, সালাদ প্রভৃতি থাকছে। অসবিডি কিচেনে অফিস লাঞ্চের ২টি প্যাকেজ আছে; একটির দাম ৯৯ টাকা, অপরটি ১২০ টাকা। দুইটি প্যাকেজের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য আছে।
অসবিডির আইটি অ্যান্ড অ্যাডমিন রাতুল দামের এই ব্যবধান নিয়ে জানান, 'চালের মানের ক্ষেত্রে কিছু পার্থক্য আছে। ৯৯ টাকায় দেয়া হয় মিনিকেট চাল এবং ১২০ টাকায় কাটারি নাজিরশাইল চাল ব্যবহার করা হয়। চিকেন যেদিন থাকে সেদিন ৯৯ টাকায় দেয়া হয় ব্রয়লার মুরগি এবং ১২০ টাকায় দেয়া হয় কক মুরগি। মাছের ক্ষেত্রেও ভাগ আছে। ৯৯ টাকায় আমরা বড় রুই মাছ দিচ্ছি এবং ১২০ টাকায় বড় ২ পিস রুই মাছ দিচ্ছি। কখনো পাবদা মাছের দুই-তিন পিসও দিয়ে থাকি। এভাবে আমরা অনুপাত করে খাবার দেই। একদিন আমরা খিচুড়ি দেই, আরেকদিন দেই বিরিয়ানি। বিরিয়ানির সাথে আমরা ডেজার্ট দেই এবং খিচুড়ি যেদিন থাকে সেদিন সাথে কোক দেই।'
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রভাব পড়েছে অসবিডি কিচেনের উপর পড়ার কারণে তারা খাবারের দাম ৯৯ টাকায় এনেছেন। রাতুল জানান, 'প্রথমে আমরা কর্পোরেট ও প্রিমিয়াম অফিসে খাবার দিতাম, তাতে খাবারের দাম ছিলো ১৫০ টাকা। তাতে আমরা সফল হইনি। এরপর আমরা ৮০ টাকায় বিভিন্ন অফিসে খাবার দেওয়া শুরু করি। তারপর যখন দেখি প্রতিটি উপাদানের দাম বেড়েছে, তখন আমরা খাবারের দাম ৯৯ টাকা করে ফেলি। এখন সেভাবেই সরবরাহ করা হচ্ছে।'
তারা গ্রাহকের পছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে 'ফ্রি ফুড টেস্টিং'য়ের সুযোগ রেখেছেন। অর্থাৎ গ্রাহক চাইলে আগে খাবারের স্বাদ চেখে দেখে তারপর অর্ডার দিতে পারবেন। অসবিডি কিচেনে অর্ডার দিতে হলে তাদের হটলাইন নাম্বারে ফোন দিলেই চলবে। তবে খাবার অর্ডার দেয়ার কিছু শর্ত রয়েছে। সপ্তাহে ৫ দিন এবং কমপক্ষে ১০ বক্স খাবার অর্ডার করলেই তারা বিভিন্ন অফিসে খাবার সরবরাহ করবেন। এক্ষেত্রে তারা অবশ্য কোনো ডেলিভারি চার্জ নেন না।
অসবিডি কিচেনের পাশাপাশি বাইট ক্লাব নামের একটি ক্লাউড কিচেনও তাদের রয়েছে। 'ক্লাউড কিচেন' শব্দটি শুনতে নতুন লাগলেও এর চল বাংলাদেশে অনেকদিন ধরেই রয়েছে। ক্লাউড কিচেন হলো এমন এক ধরনের রেস্টুরেন্ট মডেল ব্যবসা, যেখানে গ্রাহক ঘরে বসে খাবার অর্ডার করতে পারবেন। ক্লাউড কিচেনের জন্য তারা বেছে নিয়েছেন ফুডপান্ডা, হাংরিনাকি ও নিজস্ব ডেলিভারি সিস্টেমকে।
শুরু থেকেই অসবিডি কিচেনের লক্ষ্য ছিল বড় পরিসরে নিজেদের ব্যবসাকে তুলে ধরার। তাই ৩০-৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করে তারা। এখন প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকার মতো বিক্রি হয় তাদের।
রাতুল বলেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারণে তারা তাদের মেনু আরো সমৃদ্ধ করতে পারছেন না। তাই নতুন হিসেবে তারা বাজারে টিকে থাকার জন্য কম দামে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন।
কাইজেন সাপ্লাই অ্যান্ড ক্যাটারিং সার্ভিস
কেমন লাগবে, যখন একবেলায় খাবারের পাতে দেখবেন ২ পিস ডিম বা ২ পিস চিকেন ফ্রাই রয়েছে? সঙ্গে অন্যান্য পদ তো আছেই, তা-ও আবার মাত্র ১০০ টাকায়! অফিসের ক্লান্তিকর কাজ শেষে এমন খাবার পেলে মন্দ লাগার কথা নয়। ভিন্ন স্বাদের নানাবিধ আহার নিয়ে এভাবেই কাজ করে যাচ্ছে কাইজেন সাপ্লাই অ্যান্ড ক্যাটারিং সার্ভিস।
টনি রোজারিওর হাত ধরে ২০২২ সালে সূত্রপাত ঘটে কাইজেন সাপ্লাই অ্যান্ড ক্যাটারিং সার্ভিসের। চাইনিজ এবং বাংলা খাবারের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে এই কিচেন। সপ্তাহে ৬ দিন বিভিন্ন অফিসে খাবার সরবরাহ করেন তারা। রান্নার কাজ মূলত করা হয় ফার্মগেটে। তাই ফার্মগেটের আশেপাশে কারওয়ান বাজার, ইস্কাটনের বিভিন্ন অফিসেই খাবার সরবরাহ করে তারা।
তাদের খাবারের তালিকা বেশ আকর্ষণীয়। কখনো তাতে শোভা পায় বাংলা খাবার, আবার কখনো চাইনিজ। শনিবার, রবিবার ও সোমবারে থাকে ভাত, সবজি, ডাল, ভাজি, মাছ মাংস প্রভৃতি খাবার। আবার মঙ্গলবারে দেখা মেলে চাইনিজ খাবারের; দু-পিস চিকেন ফ্রাই, ভেজিটেবল ও ফ্রাইড রাইসের দেখা পাওয়া যায় সেদিন। বুধবার পাওয়া যায় সাদা ভাত, ২ পিস ডিম, আলু ভর্তা, লেবু ও কাঁচামরিচ। কর্মক্ষেত্রের সাপ্তাহিক শেষ দিনে হাজির হয় পোলাও, মুরগি অথবা গরুর মাংস, সিদ্ধ ডিম ও লেবু-লঙ্কা।
শুক্রবার তাদের খাবার সরবরাহ বন্ধ থাকে। কর্পোরেট অফিসেই মূলত তারা খাবার সরবরাহ করেন। তবে কোনো অনুষ্ঠান থাকলে তারা বাসাতেও খাবার পৌঁছে দেন। কাইজেন সাপ্লাই অ্যান্ড ক্যাটারিং সার্ভিসে অর্ডার দেয়ার উপায়ও সহজ। যেদিন অফিসে খাবারের প্রয়োজন হবে, সেদিন সকালে ফোন দিয়ে কতজনের খাবার লাগবে তা জানিয়ে দিলেই চলবে। খাবার তারা নিজের দায়িত্বেই পাঠান, এর জন্য অতিরিক্ত কোনো চার্জ তারা নেন না।
প্রথম থেকেই তারা একই দামে খাবার সরবরাহ করে আসছেন। টনি রোজারিও জানান, 'আমরা যখন শুরু করেছি, তখন ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৪০ টাকা, চাল ছিল ৬০ টাকা, তেল ছিল ১১৫ টাকা। এখন তেল হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা। অবশ্যই আমাদের জন্য তেমন লাভ থাকছে না। এখন আমি যদি দাম বাড়াই, মানুষ অর্ডার দেওয়া কমিয়ে দেবে।'
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তাদের টিকে থাকার জন্য বিরাট সমস্যা বলে মনে করেন কর্ণধার টনি রোজারিও। তবু টিকে থাকতেই এখনো কম মূল্যে মানুষের চাহিদামাফিক খাবার সরবরাহ করছেন তারা।
ফাবিয়ান মমস কিচেন
কখনো ভাত-ডাল-মুরগির কারি আবার কখনো পোলাও-রোস্ট-কাবাব কিংবা স্বাদ বদলের জন্য খিচুড়ি-বেগুন ভাজা-মুরগির মাংস—১১০ টাকায় বাহারি খাবারের সমাহার নিয়ে এক কলেই হাজির হয়ে যায় ফাবিয়ান মমস কিচেন। মিরপুর ডিওএইচএস, মিরপুর ১০, মিরপুর ১১, মিরপুর ১২, শ্যামলী, ফার্মগেট, বনানী, গুলশান, মহাখালী অফিস পাড়ায় যারা কাজ করেন তারা এক ডাকেই পেয়ে যেতে পারেন এই কিচেনকে।
ফাবিয়ান মমস কিচেনের উদ্যোক্তা পারুল আক্তার ক্যাটারিং সার্ভিসের ব্যবসা শুরু করেন ২০২১ সাল থেকে। প্রথমদিকে কাজ করতেন বিভিন্ন ফ্রোজেন আইটেম ও বাসায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি খাবার নিয়ে। এভাবে যখন বিপুল সাড়া পেতে শুরু করেন তখন ঠিক করলেন, ক্যাটারিং সার্ভিসের মাধ্যমে বিভিন্ন অফিসে খাবার পৌঁছে দেবেন। ক্যাটারিং ব্যবসার তোড়জোড় শুরু করার পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে ফ্রোজেন ফুড আইটেম বিক্রি বন্ধ থাকলেও এগিয়ে যাচ্ছে ক্যাটারিং ব্যবসা।
প্রথমদিকে 'ফাবিয়ান মমস কিচেন'-এ খাবারের অর্ডার আসত বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে। এখন সেসব দিন পেরিয়ে গেছে; খাবারের মান ভালো হওয়ার কারণে ক্রেতারাই নতুন ক্রেতা এনে দেন।
বর্তমানে দুই ধরনের কাজ ফাবিয়ান মমস কিচেন করে থাকে। কর্ণধার পারুল জানান, 'যদি কারো জন্মদিন, বিয়ের অনুষ্ঠান থাকে, তাহলে সেসব অনুষ্ঠানের জন্য খাবার সরবরাহ করি। পোলাও, বিরিয়ানি, ভাত, বাংলা খাবার, চাইনিজ খাবার এসব খাবার আমার এখান থেকে যায়। তাছাড়া আমি নিয়মিত বিভিন্ন অফিসে লাঞ্চবক্স সাপ্লাই করি।'
সপ্তাহে ৬ দিনই মেনু অনুযায়ী বিভিন্ন অফিসে খাবার সরবরাহ করে থাকে ফাবিয়ান মমস কিচেন। তবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ভুক্তভোগী পারুল আক্তারের এই প্রতিষ্ঠানটিও। তাই তার কিছুটা ছাপ খাবারের দামের উপর পড়েছে। পারুল বলেন, 'তিন মাস আগে আমরা ৮০-৯০ টাকায় খাবার দিতাম। এখন আমরা সেটা ১১০ টাকা করেছি।'
বর্তমানে প্রতিদিন ১৭০ থেকে ১৮০টি খাবারের অর্ডার আসে পারুলের রান্নাঘরে। পারুলের লক্ষ্য অফিসগামী মানুষের মুখের সামনে টাটকা খাবার তুলে দেয়া; তাই তিনি চাল-ডাল বাদে মাছ, মাংস শাকসবজির বাজার প্রতিদিনই করে থাকেন। অর্ডার দেয়ার জন্য তেমন কোনো জটিলতার পক্ষপাতী নন ফাবিয়ান মমস কিচেনের কর্ণধার। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দাম ও মেনু নিয়ে চুক্তি হওয়ার পর প্রতিদিন সকালে ফোন দিয়ে জানালেই খাবার পৌঁছে যায় অফিসের দরজায়।
এই মুহূর্তে রান্নাবান্নার কাজ পারুল আক্তার বাসা থেকেই করে থাকেন। বর্তমানে ব্যবসা বড় হওয়ার কারণে বাসায় কাজ করতে হিমশিম খেতে হয়। তাই তার লক্ষ্য আলাদা কোনো স্থান ঠিক করে বড় পরিসরে রান্নার কাজ করার। পারুল জানান, 'বর্তমানে যেসব অর্ডার আসছে সেগুলো আসলে বাসায় করে হচ্ছে না। অনেকসময় অর্ডার ক্যান্সেল করতে হয়। বাসাবাড়ির চুলায় এত রান্না করে কুলানো যায় না। এজন্য আমি একটু কমার্শিয়ালভাবে আরো লোকজন নিয়ে আগাতে চাই।'
তৃপ্তি হোমমেড ফুড অ্যান্ড ক্যাটারিং সার্ভিস
'তৃপ্তি হোমমেড ফুড অ্যান্ড ক্যাটারিং সার্ভিস'-এর যাত্রা শুরু ২০২১ সালের মার্চে। প্রথমদিকে হোমমেড ফুড দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ক্যাটারিং সার্ভিসের মাধ্যমে ব্যবসা প্রসার করেছেন উদ্যোক্তা শরিফা ফারুক। বিভিন্ন অফিসে ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে মানসম্মত দুপুরের খাবার সরবরাহের কাজ করছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
রান্নার কাজ নিজের বাসাতেই করে থাকেন শরিফা। নিজস্ব ডেলিভারি ব্যবস্থার মাধ্যমে অফিসে পৌঁছে দেন খাবার। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫টি অফিসে দুপুরের খাবার দেন শরিফা। মতিঝিল, কাকরাইল, শাপলাচত্বর এলাকার বিভিন্ন অফিস ও ব্যাংকে খাবার সরবরাহ করেন তিনি।
'তৃপ্তি হোমমেড ফুড অ্যান্ড ক্যাটারিং সার্ভিস'-এ অর্ডার দেয়ার জন্য ফোন করে জানালেই হবে। তবে এক্ষেত্রে জানাতে হবে আগেরদিন রাতে বা যেদিন খাবার লাগবে সেদিন সকালে। এখানে সপ্তাহে পাঁচ দিন দেখা মেলে বাহারি খাবারের। সাদা ভাত, ডাল, মাছ, সবজি, মাংস, ভর্তা-ভাজি থাকে রোজকার খাবারে। সপ্তাহে একদিন পোলাও, মুরগির রোস্ট, ডিম, জর্দা থাকে তালিকায়। তবে এই স্পেশাল আইটেমের জন্য গুনতে হবে ১৫০ টাকা।
খাবার নেওয়ার জন্য কোনো ক্রেতাকেই চাপ দেন না কর্ণধার শরিফা ফারুক। তিনি বলেন, 'অনেকেই আগে বলেন যে এক সপ্তাহের জন্য নেবেন। যদি খাবার ভালো লাগে তাহলেই তারা মাসব্যাপী খাবার নেন। আবার অনেকসময় দেখা যায়, একদিন-দুইদিন খাওয়ার পর ক্রেতা নিতে চান না। তবে এক্ষেত্রে আগেরদিন জানাতে হবে।'
খাবার সরবরাহের জন্য সাধারণত কোনো ডেলিভারি চার্জ নেন না শরিফা ফারুক। যদি ভিন্ন বিল্ডিংয়ে একজনের জন্য খাবার দিতে হয় তবে সেক্ষেত্রে চার্জ ধরেন তিনি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে শরিফা জানান, 'প্রথমদিকে দৈনন্দিন খাবারের দাম ছিল ৮০ টাকা ও স্পেশাল খাবার ছিল ১২০ টাকা। এরপরে যখন পণ্যমূল্য বাড়তে শুরু করে, তখন আমি ১০০ ও ১৫০ টাকা করে ফেলি। তখন থেকেই এই দাম আছে।'
অফিস ছাড়াও বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠান, জন্মদিনের অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহ করেন তারা। তার জন্য আলাদা মেনু রয়েছে। ১ হাজার ৭০০ ফলোয়ারসমৃদ্ধ তৃপ্তির ফেসবুক পেজে ঢুঁ মারলেই দেখা যাবে সেসব খাবারের তালিকা।
কম খরচে অফিসে দুপুরের খাবার পৌঁছে দেয়া এসব প্রতিষ্ঠান শহরজুড়েই রয়েছে। নির্ঝঞ্ঝাটে স্বল্পমূল্যে আহার পৌঁছে দিতে এসব প্রতিষ্ঠান এক পায়ে খাড়া। একটি ফোনকলেই হাজির হয়ে যাবে তারা। এভাবেই এগিয়ে চলছে স্বল্পমূল্যে খাবার পৌঁছে দেয়ার ব্যবসা।