সামান্য অ্যালকোহলও স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে, বলছে গবেষণা
অতিরিক্ত অ্যালকোহল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর- একথা সবারই জানা। তাই অতিরিক্ত পানের বদলে প্রতিদিন রাতে দুয়েক গ্লাস ওয়াইন খেয়ে অনেকেই ভাবেন, বেশ স্বাস্থ্য রক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু না, গবেষকরা বলছেন আপনার এ ধারণা ভুল!
কয়েক দশক ধরে বিভ্রান্তিকর এবং কখনো কখনো পরস্পরবিরোধী নানা গবেষণা (যেমন- অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ খারাপ এবং সামান্য পরিমাণে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, নির্দিষ্ট কিছু অ্যালকোহল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো...) চলার পর এবার গবেষকরা নতুন এক দৃশ্যপট তুলে ধরেছেন। আর তা হলো: সামান্য অ্যালকোহলও স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।
গত বছরের নভেম্বরে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণের ফলে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ মারা গেছেন। এদের মধ্যে ৪০ শতাংশ মৃত্যু ঘটেছে গাড়ি দুর্ঘটনা, বিষক্রিয়া এবং হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনায়। কিন্তু বাকিদের বেশিরভাগই অ্যালকোহল গ্রহণের ফলে ধীরে ধীরে লিভারের রোগ, ক্যান্সার এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
বিশেষজ্ঞরা যখন সতর্ক করে বলেন, অতিরিক্ত অ্যালকোহল মানুষকে মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে যায়; তখন সাধারণ মানুষ ভাবে যে এটি ওইসব মানুষদের বলা হচ্ছে যাদের কিনা প্রতিদিনই অ্যালকোহল নেওয়ার বাতিক রয়েছে। কিন্তু তারা এটা বুঝতে চান না যে সীমিত পরিমাণে অ্যালকোহল গ্রহণও স্বাস্থ্যহানির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ইউনিভার্সিটি অব ভিক্টোরিয়া'স কানাডিয়ান ইনস্টিটিউট ফর সাবসট্যান্স ইউজ রিসার্চ-এর পরিচালক ডা. টিম নাইমি বলেন, "যে পর্যায়ে গেলে মানুষ ভাবে 'ওহ, ঐ ব্যক্তির তো অ্যালকোহলজনিত সমস্যা আছে', আসলে ঝুঁকি শুরু হয় তারও নিম্নস্তর থেকে। একেবারে নিম্নস্তর থেকেই অ্যালকোহল স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।"
তাই এখন থেকেই মদ্যপান বা অ্যালকোহল ছেড়ে দেবেন কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার জানা উচিত কখন এবং কিভাবে অ্যালকোহল আপনার স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে।
কিভাবে বুঝবেন আপনি অতিরিক্ত পান করছেন কিনা?
যুক্তরাষ্ট্রে 'অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ বলতে 'ইউএস ডায়েটারি গাইডলাইন'র পরামর্শের বাইরে গিয়ে অ্যালকোহল গ্রহণ করাকে বোঝায়। এ নির্দেশনাতে পুরুষদের দৈনিক দুটি ড্রিংক এবং নারীদের একটির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার কথা বলা হয়েছে।
তবে বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে যে- "এই সীমিত পরিমাণ অ্যালকোহল গ্রহণেও কারো কারো স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে পারে; বিশেষ করে নির্দিষ্ট কয়েক ধরনের ক্যান্সার এবং হৃদরোগের সমস্যার ক্ষেত্রে", বলেন মারিসা এজার। মারিসা যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর অ্যালকোহল প্রোগ্রামের প্রধান নেতৃত্বে রয়েছেন।
এছাড়াও, নির্দেশনাবলীতে অ্যালকোহলে গ্রহণের যে মাত্রা উল্লেখ করা হয়েছে তা এক সপ্তাহের গড় হিসেবে বলা হয়নি। যেমন- আপনি যদি সপ্তাহের কোনো এক সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অ্যালকোহল স্পর্শ না করেন এবং সপ্তাহান্তে ছুটির দিনে এক রাতেই দুই-তিন গ্লাস পান করেন; তাহলেও সেটি অতিরিক্ত হিসেবেই গণ্য হবে। সময়ের সাথে সাথে অ্যালকোহল গ্রহণের পরিমাণ এবং একবারে আপনার শরীরে কতখানি অ্যালকোহল যাচ্ছে, তা একত্র হয়ে শরীরের ক্ষতি করতে পারে।
কেন অ্যালকোহল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, অ্যালকোহল প্রধানত আমাদের দেহের ডিএনএন'র ক্ষতি করে। যখন আপনি অ্যালকোহলযুক্ত কিছু পান করেন, তখন শরীর এটিকে এসিটালডিহাইডে বিপাক করে যা দেহকোষের জন্য বিষাক্ত। এই এসিটালডিহাইড 'ডিএনএ'র ক্ষতি করে এবং একই সঙ্গে দেহকে সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাধা দেয়', বলেন ডা. এজার। "আর একবার ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোনো দেহকোষ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে এবং ক্যান্সার টিউমার সৃষ্টি করে", যোগ করেন তিনি।
এছাড়াও, অ্যালকোহল অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি করে; এটি ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারই আরেকটি রূপ যা রক্তনালীর কোষগুলোর বিশেষ ক্ষতি করে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণে ধমনী শক্ত হয়ে যেতে পারে, যার ফলে উচ্চ রক্তচাপ এবং করোনারি ধমনীর রোগ দেখা দিতে পারে।
ডা. নাইমির ভাষ্যে, "এটা মূলত ডিএনএকে আক্রান্ত করে, যে কারণে শরীরের আরও অনেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে। আর দীর্ঘদিন যাবত অ্যালকোহল নিতে থাকলে দেহের টিস্যুগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
অ্যালকোহল কি হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী?
অ্যালকোহলের গ্রহণের ফলে হৃদযন্ত্রের ওপর কী প্রভাব পড়ে এ নিয়ে খানিকটা সংশয় রয়েছে। কিছু গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে সামান্য পরিমাণে অ্যালকোহল-বিশেষ করে রেড ওয়াইন হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী। অতীতের বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে- অ্যালকোহল এইচডিএল (হাই-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন) কোলেস্টেরল, অর্থাৎ যে কোলেস্টেরল শরীরের জন্য ভালো, সেটির মাত্রা বাড়ায়। আর আঙু্রের (এবং রেড ওয়াইন) মধ্যে থাকা রেসভেরাট্রল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মধ্যে হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখার মতো বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
তবে ভ্যানডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নার্সিং এর অধ্যাপক মারিয়ান পিয়ানো জানান, "সাম্প্রতিক সময়ে নানা গবেষণায় এমন অনেক প্রমাণ পাওয়া গেছে যা অ্যালকোহলের 'উপকারীতা' সম্পর্কে আমাদের পুরনো অনেক ধ্যানধারণা বদলে দিয়েছে।"
একসময় মনে করা হতো, অল্প পরিমাণে অ্যালকোহল গ্রহণ হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো এবং যারা সীমিত পরিমাণে অ্যালকোহল নেন তাদের অন্যান্য সুঅভ্যাস রয়েছে; যেমন- শরীরচর্চা করা, অনেক শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া এবং ধূমপান না করা। পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় দেখা গেছে, ঐসব সুঅভ্যাসের ফলেই হৃদযন্ত্রের যেসব উপকার হচ্ছে তার 'কৃতিত্ব' ভুলবশত অ্যালকোহলকে দেওয়া হয়েছে!
আরও সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, সামান্য পরিমাণে অ্যালকোহল গ্রহণেও উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি সামান্য বেড়ে যায়; আর যারা অতিরিক্ত মদ্যপান করেন তাদের ক্ষেত্রে তো ঝুঁকি আরও বেশি। তবে ভালো খবর হলো এই যে, মানুষ যখন পান করা ছেড়ে দেয় বা কমিয়ে আনে তখন তাদের রক্তচাপও নিচে নেমে যায়। অ্যালকোহল গ্রহণের সাথে 'আট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন' নামক এক ধরনের অস্বাভাবিক হার্ট রিদমের সম্পর্ক রয়েছে, যা রক্ত জমাট বাঁধা এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
অ্যালকোহল গ্রহণের ফলে কোন কোন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়?
ধূমপানের সঙ্গে ক্যান্সারের সংযোগের কথা সকলেরই জানা। কিন্তু অ্যালকোহলও যে শক্তিশালী কার্সিনোজেন (ক্যান্সার সৃষ্টিকারক পদার্থ) তা অনেকেরই অজানা। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যালকোহল গ্রহণের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর ৭৫,০০০ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং প্রায় ১৯,০০০ মানুষ ক্যান্সারে মারা যান।
অ্যালকোহল সরাসরি সাত ধরনের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে- মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সার (ওরাল ক্যাভিটি, ফেরিংস ও ল্যারিংস), খাদ্যনালী ক্যান্সার, লিভার ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার এবং কোলোরেক্টাল ক্যান্সার। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে- প্রোস্টেট এবং অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের সাথেও অ্যালকোহলের যোগসূত্র থাকতে পারে; যদিও তার কোনো স্পষ্ট এবং জোরাল প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।
কিছু কিছু ক্যান্সারের ক্ষেত্রে (যেমন- লিভার ও কোলোরেক্টাল ক্যান্সার) মানুষ যখন অতিরিক্ত পান করতে শুরু করে তখনই ঝুঁকি বাড়তে থাকে। কিন্তু স্তন ও খাদ্যনালীর ক্যান্সারের ক্ষেত্রে সামান্য অ্যালকোহল গ্রহণেও ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। অ্যালকোহল গ্রহণের পরিমাণ যত বাড়ে, এসব ক্যান্সারের ঝুঁকি ততই বৃদ্ধি পায়।
আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির সিনিয়র সায়েন্টিফিক ডিরেক্টর ডা. ফরহাদ ইসলামি বলেন, "কেউ যদি কম মদ্যপান করে তাহলে সে অবশ্যই বেশি মদ্যপানকারী যে কারো তুলনায় কম ঝুঁকিতে থাকবে। কিন্তু দৈনিক দুটি বা একট ড্রিংকসেও ক্যান্সারের ঝুঁকি সামান্য হলেও বাড়ে; যা নন-ড্রিংকারদের ক্ষেত্রে হয় না।"
সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি তৈরি হয় কিসে?
যুক্তরাষ্ট্রে অ্যালকোহলজনিত সমস্যায় মৃত্যুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় অ্যালকোহল গ্রহণের ফলে লিভারের রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু (প্রতি বছর প্রায় ২২,০০০ মৃত্যু)। মানুষের বয়স অনুপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বিবেচনা করলে দেখা গেছে, প্রতি বছর পাঁচ হাজারেরও বেশি আমেরিকান তাদের বিশের, ত্রিশের এবং চল্লিশের কোঠায় অ্যালকোহলজনিত লিভারের রোগে মারা যান।
অ্যালকোহল গ্রহণের ফলে লিভারের রোগে আক্রান্ত হওয়ার তিনটি ধাপ রয়েছে: অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার- যখন লিভারে চর্বি জমে, অ্যালকোহলিক হেপাটাইটিস- যখন প্রদাহ শুরু হয় এবং অ্যালকোহলিক সিরোসিস- যখন লিভারের টিস্যু ধ্বংস হয়ে যায়। প্রথম দুটি ধাপে মদ্যপান পুরোপুরি বন্ধ করে দিলে সুস্থ হওয়ার সুযোগ থাকে, কিন্তু তৃতীয় ধাপে আর সেই সম্ভাবনা থাকে না।
অ্যালকোহলজনিত লিভারের রোগে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে- বমি বমি ভাব কিংবা বমি, পেটে ব্যথা, জন্ডিস- চোখ বা ত্বকে হলুদ আভা। তবে বলে রাখা ভালো, লিভার মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া পর্যন্ত এসব উপসর্গ দেখা যায় না।
যারা অতিরিক্ত মদ্যপান করেন, স্বভাবতই তাদের এসব লিভারের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কিন্তু একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেউ যদি পাঁচ বছর ধরে দৈনিক একটি করে অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পান করে, তাতেও তার লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যারা দৈনিক চারটি ড্রিংকস নেন, এদের ৯০ শতাংশের মধ্যেই অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার চিহ্ন দেখা গেছে।
অ্যালকোহলজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কিভাবে কমাবেন?
অ্যালকোহল গ্রহণ করেন এমন প্রত্যেকেই যে গুরুতর রোগে আক্রান্ত হবেন তা নয়। জীবনযাপনের পদ্ধতি- ডায়েট, ব্যায়াম, ধূমপান ইত্যাদি মিলিয়েই ঝুঁকি কমে বা বৃদ্ধি পায়। ডা. এজার বলেন, "প্রতিটি ঝুঁকির ফ্যাক্টরই গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে। আমরা জানি যে, অনেকগুলো ঝুঁকির ফ্যাক্টর একত্রিত হয়ে বিশেষ কোনো একটি রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।"
আবার আগে থেকেই যদি কারো কোনো শারীরিক সমস্যা থাকে এবং সেই সাথে অ্যালকোহল গ্রহণ করে, তাহলে তা শরীরের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। ডা. পিয়ানোর মতে, "যাদের হাইপারটেনশন আছে, তাদের মদ্যপান করা উচিত না, বা করলেও খুবই সামান্য পরিমাণে।"
জিনও এখানে ভূমিকা পালন করে। যেমন- দুটি জেনেটিক ভ্যারিয়ান্ট যা এশিয়ান বংশোদ্ভূত মানুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, অ্যালকোহল ও এসিটালডিহাইডের বিপাককে প্রভাবিত করে। এদের একটি জিন ভ্যারিয়ান্ট অ্যালকোহলকে দ্রুত ভেঙে এসিটালডিহাইডে পরিণত করে এবং সারা দেহে টক্সিন ছড়িয়ে পড়ে। অন্য ভ্যারিয়ান্টটি এসিটালডিহাইডের বিপাক ক্রিয়াকে ধীর করে দেয়, ফলে এটি শরীরের মধ্যে বেশি সময় ধরে থাকে এবং ক্ষতিকে দীর্ঘায়িত করে।
অ্যালকোহল বাদ নাকি কমিয়ে দেবেন?
স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য হঠাৎ একবারে সবকিছু বন্ধ করে দিতেই হবে তা নয়। যদি আপনি মাত্রার বাইরে গিয়ে এখন পান করেন থাকেন, তাহলে ধীরে ধীরে অ্যালকোহল গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে আনলেও তা শরীরের জন্য উপকার হবে। ডা. নাইমির মতে, "দৈনিক দুটির বেশি ড্রিংকস নিলে সত্যিকার অর্থেই স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায়, সুতরাং যারা বর্তমানে দৈনিক ৫-৬টি ড্রিংকস নিচ্ছেন, তারা তা কমিয়ে তিন বা চারে নিয়ে আসতে পারেন।"
আর যারা এমনিতেই দৈনিক কম পান করেন, তারা আরও একটু কমিয়ে আনতে পারেন। "কয়েকদিন অ্যালকোহল ছাড়া থাকার চেষ্টা করুন, যদি দেখেন এতে শরীর ভালো বোধ করছেন, তার মানে আপনার শরীর আপনাকে কিছু একটা বলতে চাইছে", বলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালকোহল অ্যাবিউজ অ্যান্ড অ্যালকোহলিজম-এর পরিচালক জর্জ কুব।
উল্লেখ্য যে, যেসব বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন তাদের কেউই পুরোপুরি অ্যালকোহল গ্রহণ করা বাদ দিতে বলেননি, যদি না কেউ অ্যালকোহল ইউজ ডিজঅর্ডারে ভোগে বা গর্ভবতী থাকে। ডা. কুব বলেন, "আমি লোকজনকে পুরোপুরি অ্যালকোহল বাদ দিতে বলবো না। আমরা নিষেধ করেছিলাম, এতে কাজ হয়নি।"
তাই সবশেষে তাদের উপদেশ হলো- "কম পান করুন, দীর্ঘদিন বাঁচুন।"
সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস থেকে অনূদিত