মিলনের ভ্যাটেক্স হেয়ার: 'পরচুলা'র চুলচেরা সমাচার
'চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,'– কবি জীবননানন্দ দাস 'বনলতা সেন' কবিতায় নাটোরের বনলতার সৌন্দর্য প্রকাশের সূচনা করেছিলেন চুলের মাধ্যমে। ঘন কালো চুলকে আদিকাল থেকেই মানবদেহের শোভাবর্ধনের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু সাধের চুলই যদি কখনো হারিয়ে যেতে বসে, তখন কপালে চিন্তার ভাঁজ ভেসে উঠতেও সময় লাগে না। পড়ে যাওয়া চুলের সমাধান নিয়েই প্রাচীন মিশরে আবিষ্কৃত হয়েছিল পরচুলা। সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি একসময় যেটি হয়ে উঠেছিলো আভিজাত্যের প্রতীক।
পরচুলা নিয়ে বাংলাদেশেও কাজ চলছে সমানতালে। এখন পর্যন্ত পরিপূর্ণ শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত না হলেও হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে পরচুলা। মানুষের ফেলে দেওয়া চুলও যে সম্পদ হতে পারে, তারই এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ এটি।
বাংলাদেশে পরচুলা তৈরির এমনই একজন কারিগর মিলন মাহমুদ; ফেলে দেওয়া চুল সংগ্রহ করে যিনি তৈরি করেন পরচুলা, রপ্তানি করেন দেশের বাইরেও। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ভ্যাটেক্স বাংলাদেশ লিমিটেড নামে পরচুলা তৈরির প্রতিষ্ঠান। যেখানে মিলনের অধীনে কাজ করেন ৩৫০ জনেরও বেশি শ্রমিক।
পরচুলা ব্যবসা যেভাবে শুরু
পরচুলা নিয়ে মিলন মাহমুদ ব্যবসার পরিকল্পনা শুরু করেন বছর চারেক আগে। সূচনা অবশ্য তার বাবা-ই করেছিলেন। মিলনের বাবার ছিল চুল রপ্তানির ব্যবসা। ১৯৯৯ সালে তিনি এই ব্যবসা শুরু করেছিলেন। তখন চীনে সরাসরি রপ্তানি করতেন চুল। পড়াশোনা শেষে মিলন সিদ্ধান্ত নেন বাবার ব্যবসায়েই যোগ দেবেন। ভাবনা অনুসারে যুক্তও হন সেখানে। কিন্তু নতুন কিছু করার ইচ্ছে মিলনকে টানতো বরাবর। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ঠিক করলেন, বাবার চুল রপ্তানির ব্যবসাকে নতুন রূপ দেবেন পরচুলা তৈরি ও তা বিদেশে রপ্তানি করার মাধ্যমে।
২০১৯ সালে শুরু হয় মিলনের নতুন যুদ্ধ। ৫০ জন কর্মী নিয়ে তিনি রাজধানী ঢাকার উত্তরাতে শুরু করেন পরচুলা তৈরির কারখানার যাত্রা। সেসময় ইউরোপ, আমেরিকা এবং চায়নার ক্রেতাদের পছন্দসই ডিজাইনের মাধ্যমে শুরু করেন পরচুলা তৈরির কাজ। পরচুলার আকার কেমন হবে, রঙ কেমন হবে, চুল সোজা হবে নাকি কোঁকড়া হবে– ক্রেতাদের থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা ভিত্তিতে শুরু করেন কাজ।
মিলনের পরচুলার মূল ক্রেতা বিদেশিরাই। দেশি ক্রেতাও আছেন, তবে তার সংখ্যা তুলনামূলক কম। দেশি ক্রেতাদের মধ্যে যারা ফ্যাশন অঙ্গনে কাজ করেন, যাদের মাথার চুল পাতলা হয় বা যারা বিভিন্ন রোগের ভুক্তভোগী– তারা পরচুলা সংগ্রহ করেন।
মিলন বলেন, "অনেক দেশি ক্রেতা জানেই না বাংলাদেশেও পরচুলা তৈরি হয়। যাদের সামর্থ্য আছে, তাদের অধিকাংশ চীন এবং ভিয়েতনাম থেকে কিনে নিয়ে আসেন।"
বর্তমানে প্রতি মাসে এক হাজারের বেশি পরচুলা রপ্তানি করেন মিলন মাহমুদ। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, আমেরিকা, সৌদি আরব, তুরস্ক, ইরাক, লেবাননসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পৌঁছে যায় মিলনের তৈরি পরচুলা।
পরচুলার চুলের যোগান
পরচুলা তৈরির জন্য মানুষের চুল ব্যবহার করেন মিলন। চুলের ধরনের ওপর নির্ভর করে পরচুলার মান। চুল সংগ্রহ করেন বিভিন্ন বিউটি পার্লার এবং ক্ষুদ্র আয়ের বিভিন্ন ফেরিওয়ালার কাছ থেকে। এরপর শুরু হয় পরচুলার জন্য প্রক্রিয়াজাতকরণ।
চুলের কথা বলতে গিয়ে মিলন উল্লেখ করেন– রেমি, নন রেমি, সিঙ্গেল ড্রওন, র হেয়ারসহ বাহারি ধরনের চুলের নাম। তিনি বলেন, "রেমি হেয়ার বলতে বোঝায় যারা বিউটি পার্লারে গিয়ে সরাসরি চুল কাটেন। এটাকে আমরা বলি ওয়ান ডোনেট হেয়ার, অর্থাৎ একজনের মাথার চুল। আমরা সাধারণত যে ধরনের চুল এখানে প্রক্রিয়াজাত করে থাকি, সেগুলো আসে ফেরিওয়ালার কাছ থেকে। গ্রামেগঞ্জে অনেক ফেরিওয়ালা আছেন, যারা ক্ষুদ্র আয়ের মানুষ। তারা চুল সংগ্রহ করেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে। হাড়ি-পাতিল অথবা বিভিন্ন সাজের জিনিসের বিনিময়ে তারা চুল নিয়ে থাকেন।"
"একেবারে রুট লেভেল থেকে চুল বিভিন্ন হাত ঘুরে থানা, জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ের পর রাজধানীতে মহাজনদের কাছে আসে। এরপর আমরা সরাসরি মহাজনদের কাছ থেকে কিনে নিই। যত পরিমাণ চুল সংগৃহীত হয়, তার মধ্যে ২০ শতাংশ চুল মহাজনেরা পরচুলা তৈরিকারকদের কাছে বিক্রি করেন।"
"অবশিষ্ট ৮০ শতাংশ তারা চীনের কাছে সাপ্লাই দেয়। অনেক চাইনিজরা মহাজনদের কাছ থেকে চুল কিনে রপ্তানি করে। মহাজনদের কাছ থেকে চুল সংগ্রহের পর আমরা প্রক্রিয়াজাত করার কাজ শুরু করি", যোগ করেন মিলন।
কীভাবে তৈরি হয় পরচুলা?
চুল সংগ্রহের পর শুরু হয় নতুন কর্মযজ্ঞ। প্রায় ১৫ থেকে ২০টি ধাপ সম্পন্ন করে তৈরি করা হয় একেকটি পরচুলা। প্রথমে সংগৃহীত চুল বাছাইয়ের জন্য আলাদা করা হয়। এই পদ্ধতিকে বলে 'হেয়ার সর্টিং'।
এরপর বিভিন্ন কেমিক্যাল দিয়ে চুল ধুয়ে পরিষ্কার করা হয়। এরপর তৈরি করা হয় পরচুলার মূল ভিত্তি বা বেস। যেটি ওয়েফট বা ক্যাপ নামে পরিচিত।
পরচুলার জন্য সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার উপযোগী হওয়ার পর শুরু হয় বুননের কাজ। ওয়েফট বা ক্যাপে চুল আটকানোর জন্য ব্যবহার করা হয় আঠা বা ক্লিপ। এভাবে সম্পন্ন হয় একেকটি পরচুলা তৈরি।
মিলন বলেন, "পরচুলাতে একটা একটা করে চুল বেছে কাজ করতে হয়। যদি ফুল ক্যাপ পরচুলা হয়, তবে একেকটি পরচুলা তৈরিতে ১০ থেকে ১৫ দিনের সময় লেগে যায়।"
প্রতিমাসে ২০ লাখ টাকার পরচুলা রপ্তানি করে থাকেন মিলন মাহমুদ। যার মধ্যে প্রতিমাসে গড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা নিট লাভ আসে মিলনের ঝুলিতে।
পরচুলার দাম নির্ভর করে এর আকারের ওপর। মিলন বলেন, "আমাদের কাছে ১৪ ইঞ্চি থেকে ২৮ ইঞ্চি পর্যন্ত চুলের পরচুলা পাওয়া যায়। পরচুলা আকারে যত ছোট হবে তত দাম কম হবে।"
"আবার আকারে যত বড় হবে, দামও তত বেশি হবে। মেয়েদের জন্য যদি ঘাড়ের ওপর পর্যন্ত পরচুলা বানানো হয়, তবে সেটির আকার ১৪ ইঞ্চি হবে। ১৪ ইঞ্চি ফুল ক্যাপের পরচুলার দাম ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। যদি ২৪ ইঞ্চি বা ২৬ ইঞ্চি হয়, তবে এর দাম দাঁড়ায় ২২ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা," যোগ করেন মিলন।
একেকটি পরচুলার আয়ুষ্কাল নির্ভর করে এর ব্যবহারের ওপর। নিয়মিত ব্যবহার করলে পরচুলা ছয়মাস থেকে একবছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। কম ব্যবহার করলে আরও বেশিদিন পর্যন্ত ভালো থাকে পরচুলা।
বর্তমানে ৩৫০ জনের বেশি কর্মী কাজ করেন মিলনের ভ্যাটেক্স হেয়ার লিমিটেডে। এরমধ্যে ২০ জন চুল বাছাই এবং বেসের জন্য ক্যাপ তৈরিতে কাজ করেন।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব
বাংলাদেশে এখনও পরচুলা শিল্পের ব্যাপক প্রসার না ঘটার কারণ হিসেবে মিলন বলেন, "অনেক চীনা আমাদের এখান থেকে 'র হেয়ার' কিনে নিয়ে যায়। তারপর সেগুলো তারা তাদের ফ্যাক্টরিতে প্রক্রিয়াজাত করে ইউরোপ, আমেরিকাতে অনেক বেশি দামে বিক্রি করে। টেকনিক্যাল কারণে তাদের গুণগত মান অনেক ভাল। চীনে চুলের মেলা হয়। সেখানে তারা খুবই প্রফেশনাল এবং এটি নিয়ে গবেষণা করে।"
"কিন্তু আমরা কেন তাদের পর্যায়ে যেতে পারছি না? কারণ আমাদের এখানে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব আছে। আমাদের এখানে দক্ষ শ্রমিকের অভাব অনেক। তাছাড়া অনেক আপডেটেড কেমিক্যাল, যা চায়না বা ভিয়েতনামের ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করে, আমরা সেগুলো পাই না। এগুলোর জন্য আমরা চাইনিজদের মতো কোয়ালিটি অনুসরণ করতে পারি না।"
"তাছাড়া সরকার থেকে আমরা ঋণের সুবিধা বা রপ্তানির ওপর ক্যাশ ইনসেন্টিভ সুবিধাও পাই না। আমরা আবর্জনা থেকে রেমিট্যান্স আনছি, অথচ এর জন্য তেমন কোনো সুযোগ সুবিধা পাই না। তবে হ্যাঁ, আমাদের এখানেও সম্ভাবনাময় ভালো একটি বাজার আছে," বলেন তিনি।
বলে রাখা ভালো, ক্যাশ ইনসেন্টিভ বলতে মূলত সরকারি প্রণোদনাকে বোঝায়। পণ্য রপ্তানি ও পরিষেবা হতে যে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়, তার থেকে একটা নিদিষ্ট অংশ সরকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারীদের বা রপ্তানিকারীদের নগদ সহায়তা দিয়ে থাকে। এই সুবিধাটিকে ক্যাশ ইনসেন্টিভ বলা হয়। সাধারণত ৪৩টি সেক্টরে সরকার এই সুবিধা দিচ্ছে।
পরচুলা রপ্তানিতে বাজিমাত
পরচুলা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পণ্য তালিকার অপ্রচলিত পণ্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। ইপিবির তথ্য অনুসারে, অপ্রচলিত এই পণ্যটি রপ্তানি করে প্রথমবার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে। ওই সময় পরচুলা রপ্তানি করে ১ কোটি ১৪ লাখ মার্কিন ডলার আয় করেন উদ্যোক্তারা।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে পরচুলা রপ্তানি করে আয় হয় ১ কোটি ৯৫ লাখ ৫৮ হাজার ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২ কোটি ৩০ লাখ ডলার, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা বেড়ে ৩ কোটি ২৫ লাখ ডলার হয়।
করোনা মহামারির মধ্যেও ২০২০-২১ অর্থবছরে পরচুলা রপ্তানির আয় এক লাফে বেড়ে ৫ কোটি ৭১ লাখ ডলার হয়, ২০২১-২২ অর্থবছরে তা পৌঁছায় ১০ কোটি ৫৮ লাখ ডলারে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ছিল প্রায় সাড়ে ৬৫ শতাংশ বেশি।
বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১২ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলারের পরচুলা রপ্তানি হয়েছে। সেই হিসেবে এক বছরে ১৬ শতাংশ পরচুলা রপ্তানির সুযোগ বেড়েছে।
মিলনের মতে, পরচুলা রপ্তানি গ্রীষ্মকালের তুলনায় শীতকালে কম হয়। শীতকালে বিভিন্ন টুপি পরিধান করে মানুষ। যার কারণে বছরের শেষ থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চাহিদা কম থাকে। মার্চ থেকে পুরোদমে বাড়তে থাকে চাহিদা।
মিলন বলেন, "আমি একটি জরিপে পড়েছিলাম যে, বাংলাদেশের কেবল ২ শতাংশ চুল সংগ্রহ করা হয়। অবশিষ্ট ৯৮ শতাংশ চুল আবর্জনা হিসেবে ফেলে দেওয়া হয়। ২ শতাংশের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ২০ টন চুল সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং দেশের বাইরে রপ্তানি হচ্ছে। সেটাকে যদি আমরা ৫০ শতাংশে নিয়ে যেতে পারি, তাহলে আমাদের গার্মেন্টস শিল্পের মতো পরচুলা শিল্পও সম্ভাবনাময় একটি শিল্প হয়ে উঠতে পারে।"
সরকার এখান থেকে লাভবান হতে পারবে এবং দেশের মানুষও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবে বলে জানান মিলন।
মহামারি থেকে জনপ্রিয়তা পাওয়া পরচুলা
বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় পরচুলার উৎপত্তিস্থল মিশরে। উষ্ণ আবহাওয়া, সংক্রামক চর্মরোগ এবং অত্যধিক তাপের হাত থেকে বাঁচার জন্য মিশরীয়রা চুল কামিয়ে ফেলতো। সেই টাক মাথা ঢাকার জন্য তারা ব্যবহার করতো পরচুলা।
তবে একে জনপ্রিয় করে ফরাসিরা। মজার বিষয় হচ্ছে, যৌনব্যাধি সিফিলিসের হাত ধরে ইউরোপে জনপ্রিয়তা পায় পরচুলা। তখন সিফিলিস এতটাই ভয়াবহ ব্যাধি ছিল যে, এই রোগে আক্রান্ত হলে অঙ্গহানি বা মৃত্যুর মতো ঘটনা বেশ স্বাভাবিক ছিল।
অষ্টাদশ শতকে সিফিলিসের চিকিৎসা ব্যবস্থা নতুন মোড় নেয়। চিকিৎসা মাধ্যম হিসেবে যুক্ত হয় পারদ। তাতে অবশ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়ানো যায়নি। অঙ্গের বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি রোগীর মাথায় দগদগে ঘা দেখা যাওয়া, চুল পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতো। সামাজিকভাবে যাতে তাদের হেয় হতে না হয়, তার জন্য পরচুলা ব্যবহার শুরু করে তৎকালীন ইউরোপীয়রা।
ফ্রান্সের রাজা চতুর্দশ লুই-ও পরচুলা জনপ্রিয় করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। যৌবনে মাথা ভরা চুল ছিল রাজা চতুর্দশ লুই-এর। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সেগুলো ঝরতে শুরু করে এবং রাজাও পরচুলা ব্যবহার করতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে এটি হয়ে ওঠে আভিজাত্যের প্রতীক।
একসময় বিচারালয়ের বিচারকের মাথায়ও শোভা পেতে শুরু করে পরচুলা। ফরাসি অভ্যুত্থানের পর অবশ্য পরচুলাকে 'বুর্জোয়া' প্রতীকরূপে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। এরপর থেকেই ফ্রান্সে কমতে শুরু করে পরচুলার ব্যবহার।
মহামারি কিংবা রাজকীয়তা— পরচুলা প্রচলনের পর থেকে এর ব্যবহারও বাড়তে থাকে ধীরে ধীরে। তাই এখন কেবল আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে নয়, ফ্যাশন সচেতনতা থেকে শারীরিক প্রয়োজনে পরচুলার ব্যবহার এখন সর্বত্র।