অভিজিৎ নন্দীর চিত্রগল্প: বিয়ের ছবি কেন অন্যরকম হতে হবে
জল-জঙ্গল আর পাহাড়ের সাথে মানুষের মিতালির কাব্য ছবির ফ্রেমে তুলে ধরেন অভিজিৎ নন্দী। দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়ানোর খুব নেশা তার। সেই নেশাকে পেশার সাথে সমন্বয় করে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব ছবি তোলার ধরন। এখনকার ওয়েডিং ফটোগ্রাফির ধারণাকে পাল্টে দিয়েছে অভিজিতের চিত্রগল্প। বান্দরবানের নাফাখুম, খাগড়াছড়ির আলুটিলা থেকে শুরু করে হিমালয়ের অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্পের মতো দুর্গম জায়গায় ওয়েডিং ও কাপল ফটোশ্যুট করার নজির রয়েছে তার।
অভিজিতের ছবি তোলার শুরু
মা-বাবার চাকরিসূত্রে অভিজিৎ নন্দীর বেড়ে ওঠা গাজীপুরে। ছোটবেলা থেকেই অভিজিৎ ভালোবাসতেন ছবি তুলতে। অভিজিতের ভাষায়, "মানুষের যেমন বাচ্চাবেলা থেকেই স্বপ্ন থাকে ডাক্তার হবে, শিক্ষক হবে, তেমনি আমার স্বপ্ন ছিল ছবি তোলার।" পারিবারিক সূত্রে পাওয়া ইয়াশিকা ক্যামেরা দিয়ে পথেঘাটের নানা জায়গার ছবি তুলে বেড়াতেন সারাদিন। ক্লাস এইটে ওঠার পর বাসায় আসলো প্যানটেক্সের অটোফোকাস ক্যামেরা। সেসময়ের ক্যামেরায় আলাদা ফিল্ম লাগিয়ে ছবি তুলতে হত।
"স্কুলে যাওয়ার সময় মায়ের কাছ থেকে যে ২-৫ টাকা টিফিন খরচ পেতাম, ক্যামেরার ফিল্ম কেনার জন্য সেগুলো জমিয়ে রাখতাম আমি," বলেন অভিজিৎ।
কলেজে পড়ার সময় ডিজিটাল ক্যামেরা পান। সেসময় স্যামসাং ডি৬০০ মডেলের একটি ফোন চালাতেন তিনি। ফোনের ২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা দিয়েও ছবি তোলা চালিয়ে যান। ইন্টারনেটে ফটোগ্রাফি বিষয়ক নানা ব্লগ, ওয়েবসাইট থেকে ছবি তোলার খুঁটিনাটি শেখার চেষ্টা করতেন নিজে নিজেই।
ফটোগ্রাফির প্রতি অভিজিতের আগ্রহতে পরিবার বাঁধা দেয়নি কখনো।"বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার আগে বাসা থেকে আশ্বাস দেয়া হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলেই আমাকে ভালো ক্যামেরা কিনে দেয়া হবে। চান্স পাওয়ার পর বাসায় আবদার করলাম ডিএসএলআর ক্যামেরার, কিন্তু আমার মধ্যবিত্ত পরিবারে এত দামী ক্যামেরা কেনার বাজেট ছিল না তখন। সেকেন্ড ইয়ারে ওঠার পর আমার প্রথম ডিএসএলআর ক্যামেরা হাতে পাই। ক্যানন ৪০ডি মডেলের ক্যামেরা ছিল সেটি," বলেন অভিজিৎ নন্দী।
ক্যামেরা কেনার পর যুক্ত হন ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফিক সোসাইটি (ডিইউপিএস) তে। ফটোগ্রাফি নিয়ে বিস্তারিত শেখেন এই সংগঠনেই। প্রকৃতির নানা উপাদানকে ফোকাস করে ম্যাক্রো ফটোগ্রাফির শখ ছিল অভিজিতের। ডিইউপিএসের সাথে নানা জায়গায় ট্যুর ও ফটোওয়াকে যেতেন নিয়মিত।
"ঘুরাঘুরি করার টাকা জোগাড় করতেই ছাত্রজীবনে ছবি তোলার 'খ্যাপ' মারতে শুরু করি! প্রথমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছোট ভাইয়ের বোনের বিয়েতে ছবি তুলতে গিয়েছিলাম প্রফেশনালি। একদিনের শ্যুটে এক-দেড় হাজার টাকা পেতাম, সেগুলো দিয়েই হাত খরচ আর ঘুরাঘুরি চলে যেত," হেসেই জানান অভিজিৎ।
বন্ধুবান্ধব আর দাদা-বৌদিকে প্রায়ই বানাতেন নিজের কাজের গিনিপিগ। শাড়ি-পাঞ্জাবী পরিয়ে নানা জায়গায় ঘুরতে নিয়ে গিয়ে তাদের ছবি তুলে এক্সপেরিমেন্ট করতেন তিনি। পড়ালেখা ঠিক রাখায় পরিবারের মানুষের সমর্থনও পেয়েছেন সবসময়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ থেকে বিবিএ, এমবিএ শেষ করে মাস্টার্স করতে সুইডেন পাড়ি জমিয়েছিলেন। সুইডেনে তার পরিচিত পরিসরে ছবি তুলেই নিজের খরচ চালাতেন। সেখানকার নানা জায়গায় কাপল ফটোশ্যুটে নজর কেড়েছিলেন স্থানীয় নাগরিকদেরও।
চিত্রগল্প
সুইডেন থেকে অভিজিৎ দেশে ফিরেন ২০১৭ সালে। সে বছরের মাঝামাঝিতে ফটোগ্রাফার বন্ধু দোলন ও পুষানের সাথে শুরু করেন "চিত্রগল্প" নামে ওয়েডিং ফটোগ্রাফির প্রতিষ্ঠান। জাঁকজমক করে সাজানো বিয়ের স্টেজের সামনে গতানুগতিক ছবির বাইরে সাদাসিধে নান্দনিক ফ্রেমে প্রিয় মুহূর্তকে তুলে ধরা চিত্রগল্পের অনন্য বৈশিষ্ট্য।
প্রকৃতির সাথে মানুষের মেলবন্ধনকে ছবির ফ্রেমে ফুটিয়ে তুলতে একই সময়ে অভিজিৎ গড়েন "প্রকৃতিকাব্য", যেখানে শুধু আউটডোরের ছবি তোলা হত। পরবর্তীতে চিত্রগল্পের অংশ হিসেবেই অন্তর্ভুক্ত করেন একে।
নদী, পাহাড়, সমুদ্র, দ্বীপ, জঙ্গল, ঝর্ণা বা জলপ্রপাত, প্রকৃতির সব দৃষ্টিনন্দন কোণ ধরা পড়ে অভিজিৎ নন্দীর ক্যামেরায়। ভ্রমণপ্রিয় হওয়ায় আগে থেকেই দেশ বিদেশের নানা জায়গার ছবি গেঁথে রেখেছিলেন মনে। সেসব জায়গায় মানুষের ছবি তুললে কেমন হবে তারও পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন। তাই নানান দুর্গম জায়গায় ক্লায়েন্ট নিয়ে ছবি তুলতে গিয়ে মনমতো ফ্রেম খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে আগে থেকে খুব একটা সংশয় থাকে না অভিজিৎ নন্দীর।
ছবি তোলার ক্ষেত্রে কৃত্রিমতার চেয়ে 'ন্যাচারাল মোমেন্ট' ফ্রেমবন্দী করায় বেশি গুরুত্ব দেন অভিজিৎ। যেখানে ছবি তুলতে মাথা খাটানো যায়, নতুন ফ্রেম পাওয়া যায়, নতুন কনসেপ্ট পাওয়া যায় সেসব জায়গায় কাজ করায় বেশি আগ্রহী তিনি। তাই 'ডেস্টিনেশন ওয়েডিং' বা আউটডোর ফটোশ্যুটের কাজকেই প্রাধান্য দেন বেশি। নিজে প্রতিমাসে ৬-৭টা ইভেন্টের বেশি কাজ করেন না। পুরো চিত্রগল্প দল মাসে প্রায় ৩০টার মতো কাজ করে।
ইভেন্ট অনুযায়ী ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফির নানাধরনের প্যাকেজ আছে চিত্রগল্পের। ঢাকার ভেতরে ইভেন্টের জন্য ফটোগ্রাফি প্যাকেজ ২৮ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকার পর্যন্ত। ভিডিওগ্রাফি প্যাকেজ ১৬ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্রয়োজন অনুযায়ী এসব প্যাকেজ কাস্টমাইজ করে নেয়ার সুযোগ পান ক্লায়েন্টরা। এছাড়া ঢাকার বাইরে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে ছবি তুলতে সবসময় আগ্রহী অভিজিৎ নন্দী ও তার দল।
চিত্রগল্পের দলে এখন কাজ করেন প্রায় ২৫ জন। অভিজিতের কাছে ছবি তোলায় আনন্দটাই মূল। তাদের দলে যারা কাজ করতে আসেন সবাই যেন আনন্দ নিয়ে ছবি তুলতে জানেন তা নিশ্চিত হয়ে নেওয়া হয় আগেই। ফটোগ্রাফির প্রতি ভালোবাসা ছাড়া শুধু রোজগার করার পথ হিসেবে যারা ছবি তোলাকে বেছে নিতে চান তাদের থেকে চিত্রগল্পকে দূরেই রাখেন। অভিজিৎ বিশ্বাস করেন, "Buying a good camera doesn't make a good photographer."
"বেশিরভাগ ইভেন্টেই ক্লায়েন্টের বাড়ির মানুষের সাথে আমরা খুব সহজভাবে মিশে যাই৷ তারাও আমাদের পরিবারের মতোই আপ্যায়ন করে। ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে কখনো খারাপ অভিজ্ঞতা পাই না আমরা। ছবি তোলার কাজে আমাদের সুখস্মৃতিই তাই বেশি," জানান অভিজিৎ।
বিশেষ আয়োজনে ছবি তোলার জন্য চিত্রগল্পের সিনিয়র ফটোগ্রাফারদের শিডিউল পেতে চাইলে ক্লায়েন্টদের অন্তত ৬-৭ মাস আগে জানিয়ে রাখার পরামর্শ দেন অভিজিৎ। তার ভাষ্যে, "ডিসেম্বরের শেষের দিকে অনেক বেশি বিয়ের আয়োজন থাকে। তখন শিডিউল মেলানো কঠিন হয়ে যায়। এবছর ডিসেম্বরের শেষের বিয়ের আয়োজনের জন্য বছরের শুরুতেই বুকিং হয়ে গেছে।"
স্মরণীয় পাঁচ কাজ
অভিজিতের কাছে তার সব ইভেন্টের কাজই প্রিয়। নতুন জায়গা ও নতুন গল্প সবসময়ই আকর্ষণ করে তাকে। টিবিএসের অনুরোধে চিত্রগল্পের প্রায় পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতার পাঁচটি স্মরণীয় কাজের কথা উল্লেখ করেন এবার।
চিত্রগল্পের প্রথম কাজ: ২০১৭ সালে চিত্রগল্পের প্রথম কাজ ছিল দীপঙ্কর আর স্বাগতার বিয়ে। হিন্দু বিয়ের সব আচার আনুষ্ঠানের ছবি ফ্রেম বন্দী করতে প্রায় ৪৮ ঘন্টা টানা কাজ করতে হয়েছিল চিত্রগল্পের দলকে।
বরের বাড়ি ছিল মাগুরায় আর কনের বাড়ি নাটোরে৷ দুই জেলা মিলিয়ে কাজ করেছে পুরো দল৷ বিয়ের পর বর-কনে নিয়ে গিয়েছিলেন ঐতিহাসিক হার্ডিঞ্জ ব্রিজে। সেখানে কায়দা করে ছবি তোলার অনুমতি নেওয়ার অভিজ্ঞতাও ছিল বেশ স্মরণীয়।
আলুটিলা গুহায় চাকমা বিয়ের ছবি: ২০১৯ সালে খাগড়াছড়িতে শৈলী ও নিটোলের "চুউলাং" (চাকমা বিয়ে)-এর ছবি তোলা চিত্রগল্পের আরেক স্মরণীয় কাজ৷ কনে শৈলীর খুব ইচ্ছা ছিল আলুটিলা গুহায় ছবি তোলার৷
অভিজিতের বর্ণনায়, "গুহার ভেতর মোম জ্বালিয়ে ছবি তোলার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। কিন্তু গুহায় ঢোকার সময় মোম নিতেই ভুলে গিয়েছিলাম। ৩-৪ বার গুহার ভেতর-বাইরে দৌড়াদৌড়ি করে ছবি তোলার সব সরঞ্জাম আনলাম। কিন্তু গুহায় এত বেশি বাতাস ছিল যে মোম জ্বালাতেই পারছিলাম না। অনেকক্ষণ চেষ্টা করে কয়েকটা মোম জ্বালানোর পর ছবি তুলতে পেরেছিলাম।"
রাঙামাটির ধুপপানি ঝরণায় কাপলশ্যুট: ক্লায়েন্টের ইচ্ছা ছিল ঢাকায় ৩০০ ফিট বা পানাম সিটিতে ছবি তুলবেন৷ সেবার অনেকদিন ঘুরতে যাওয়া হয় না অভিজিতের। তাই তিনি প্রস্তাব দিলেন একই বাজেটে ধুপপানি ঝরণায় ছবি তোলার৷ ক্লায়েন্ট রাজি হয়ে গেলেন সানন্দেই। তবে বিপত্তি বাঁধলো লোকেশনে গিয়ে।
"পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টিতে ক্যামেরা বের করার উপায় ছিল না। পথে দুর্ঘটনায় টিমের একজনের কাঁধের হাড় ডিসলোকেট হয়ে যায়। তখন তাকে নিয়ে টিমের বাকিরা ইমার্জেন্সি ঢাকায় রওনা হয়।
"আমি তখন একা হয়ে যাই। মন খারাপ নিয়েই ভাবলাম এতদূর যখন আসলাম, যা পারি করে যাই৷ লাগলে পরে আবার আসবো। ১৬ কেজি ব্যাগ কাঁধে করে কাদাপানি মাড়িয়ে, ক্যামেরা পলিথিনে পেঁচিয়ে ছবি তুলতে লাগলাম। তখন মাথায় ছিল ক্যামেরা নষ্ট হলে হোক, ভালো কয়েকটা ছবি যেন পাই! ভাগ্য ভালো হওয়ায় ক্যামেরা নষ্ট হয়নি। নতুন ফ্রেমে মনমতো ছবিও পেয়েছিলাম," স্মৃতিচারণ করেন অভিজিৎ।
মুম্বাইয়ের মারাঠি বিয়ে: বেশ কয়েকবছর আগে চাকমা বিয়ের ফটোশ্যুটে গিয়ে একজন ভারতীয় বন্ধু জুটেছিল অভিজিতের। সেও ছবি তোলার পাগল। মহারাষ্ট্রে বাড়ি, চাকরির সূত্রে বাংলাদেশে থাকছিলেন। সেবারই বন্ধুর ভবিষ্যৎ বিয়ের দাওয়াত চেয়ে নিয়েছিলেন। তারও বছরখানেক পর সেই ভারতীয় বন্ধু সুয়োগের সাথে বিয়ে ঠিক হলো বাংলাদেশি মেয়ে নবনীতার। সেই বিয়েতে ছবি তোলার ভার পড়লো অভিজিৎ নন্দীর।
২০২১ এর শেষের দিকে ছিল বিয়ে। করোনার বিধিনিষেধ পেরিয়ে অনেক কাহিনী শেষে ভারতে গিয়ে পৌঁছালেন অভিজিত। মুম্বাই থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রের কাছে কেলভা নামের ছোট্ট এক গ্রামে ছিল বিয়ের আয়োজন।
সুয়োগের ১৭৫ বছর পুরোনো পৈতৃক ভিটায় বিয়ের ছবি, আচার-অনুষ্ঠান, পরিবারের মানুষের আন্তরিকতা সবই মনে গেঁথে আছে অভিজিতের।
হিমালয়ে অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্পে ছবি তোলা: নেপালের অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্পে কাপল ফটোশ্যুট অভিজিতের ছবি তোলার অভিজ্ঞতার এক অবিস্মরণীয় স্মৃতি। সেই ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, "পেইজ ওপেন করার পরে একদিন ঘোষণা দিলাম আমাকে কেউ নতুন এবং চ্যালেঞ্জিং জায়গায় ছবি তোলার সুযোগ দিলে, ছবি তোলা হবে ফ্রি। শুধু আসা-যাওয়া এবং বেঁচে থাকার মতো খাবার দিলেই হবে। এই ঘোষণা দেখার পরে একদিন আমার বিভাগের জুনিয়র সাফাত নক করে জিজ্ঞেস করলো, অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্পে তার স্ত্রীর সাথে কাপল ছবি তুলে দিব কি না?
"এমনিতেই আমি পাহাড় ভালোবাসি, আবার পাহাড়ে প্রিয় কাপল ছবির কাজ! সাথে সাথেই কবুল করে নিলাম। সাফাত, শিখা (সাফাতের স্ত্রী), দোলন আর আমি প্ল্যান করে রওনা হলাম।"
"মেঘের ভেতর হাঁটা, তুষারপাত দেখা, দুইদিনের হাঁটা পথে কোনো মানুষ না পাওয়াসহ অসংখ্য বিচিত্র অভিজ্ঞতায় অভিভূত হয়েছিলাম সে যাত্রায়। অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্পে ছবি তোলার জন্য সকালে মাত্র এক-দুই ঘণ্টা আকাশ ভালো পাওয়ার সুযোগ ছিলো। প্রায় আট দিনের হাঁটা শেষে ছবি তোলার জন্য সময় পেয়েছিলাম প্রায় এক ঘণ্টা। তার উপর ৪১৩০ মিটার উপরে ঠান্ডা, অক্সিজেন স্বল্পতা- এসব ব্যাপার ছিল। তাও আমরা দমে না গিয়ে এগিয়ে গিয়েছি। আমি আর দোলন প্রায় ৩০ কেজির মতো ব্যাগ নিজেরা বহন করেছি, ক্যামেরা, ফ্লাশ, লেন্সসহ। যারা এমন উচ্চতায় পাহাড়ে হাঁটে তারা জানে সেখানে ১ গ্রাম ওজন অনেক সময় ১ কেজি মনে হয়!"
এ পর্যন্ত দেশের আনাচে-কানাচে অসংখ্য দর্শনীয় স্থানসহ অভিজিত নন্দী ছবি তুলেছেন ভারত, নেপাল, শ্রীমঙ্গল, ভূটান, সুইডেনসহ নানা দেশে। ভবিষ্যতে আরোও বেশি আন্তর্জাতিক কাজ করার পরিকল্পনা তার। ছবির ফ্রেমে প্রকৃতি ও মানুষের গল্প তুলে ধরাতেই তার পরম আনন্দ।