আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রে জড়িত বাংলাদেশীকে ৪৬ মাস কারাদণ্ড দিল আমেরিকার আদালত
ভ্রমণের বৈধ কাগজপত্রহীন ব্যক্তিদের মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের পরিকল্পনা করায় এক বাংলাদেশী নাগরিককে ৪৬ মাস কারাদণ্ড দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালত।
আজ বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ রায় দেওয়া হয়।
মার্কিন বিচার বিভাগের সাইটে প্রকাশিত আদালতের নথি অনুযায়ী, ৪১ বছর বয়সী আসামীর নাম মোহাম্মাদ মিলন হোসেন। বাংলাদেশের এই নাগরিক একসময় মেক্সিকোর ট্যাপাচুলা এলাকায় থাকতেন। মিলন ২০১৭ সালের মার্চ থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ, দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার সক্রিয় মানব পাচারকারী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা করে এবং তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের পরিকল্পনা করে।
তাদের পরিকল্পনা ছিল, টাকার বিনিময়ে বৈধ নথিহীন ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রের সীমানায় নিয়ে আসা।
দীর্ঘদিন ধরেই সরেজমিনে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছিলেন মিলন,ট্যাপাচুলায় তিনি এমন একটি হোটেলে ছিলেন যেখানে যুক্তরাষ্ট্রগামী অবৈধ অভিবাসীরা বিশ্রামের জন্য আসতো। এসব অভিবাসীদের প্লেন টিকেটসহ মেক্সিকোর মন্টেরে পর্যন্ত যাওয়ার অন্যান্য সহায়তা দেওয়া হতো। মন্টেরে পৌঁছানোর পর মিলনের আরেক সহযোগী মোক্তার হোসেন অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে পাড়ি দিতে সহায়তা করতেন।
মার্কিন বিচার বিভাগের ক্রিমিনাল ডিভিশনের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কেনেথ এ পোলাইট জুনিয়র বলেন, "এই চক্রান্ত এক বৈশ্বিক মাত্রায় কাজ করেছে এবং হাজারো বাংলাদেশী অভিবাসীর জীবন বিপন্ন করেছে। মিলনের মতো অপরাধীদের শনাক্ত করতে ও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণে মার্কিন বিচার বিভাগ অন্যান্য দেশের সঙ্গেও একযোগে কাজ করবে। সুবিচার নিশ্চিত করে এসব অপরাধী চক্র ভেঙ্গে দেওয়াই আমাদের মূল উদ্দেশ্য, যারা অনেক অভিবাসীকে বিশ্বের দূরতম প্রান্ত থেকেও এনেছে।"
এব্যাপারে সাউদার্ন ডিস্টিক্ট অব টেক্সাসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনিফার বি লোয়ি বলেন, "এসব অপরাধী মানব জীবনের চেয়ে মুনাফাকেই বড় করে দেখে। মিলনের মতো পাচারকারীরা অভিবাসীদের এমন বিপদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে, যা তাদের গুরুতর আহত করে বা অনেকক্ষেত্রে মৃত্যুরও কারণ হয়। এই বাস্তবতা আর আমাদের কাছে অজ্ঞাত নয়, এখন থেকে আমরা শুধু অভিবাসীদের পরিবহনকারীদের নয়, বরং যারা মূল পরিকল্পনাকারী তাদের বিচার কাঠগড়ায় দাড় করাতেও সক্রিয় হব।