ইউরোপ এবং আফ্রিকান দেশগুলোর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট 'ওমিক্রন' নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়তে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ইউরোপ এবং আফ্রিকান দেশগুলোর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মন্ত্রী স্বাস্থ্য বিভাগকেও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।
আজ সকালে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিতব্য একটি সভায় অংশ নিতে যাত্রাকালে এক অডিও বার্তায় এসব কথা জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
ভাইরাসটি নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে দেশবাসীকে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, "আফ্রিকান নতুন ভ্যারিয়েন্ট বিষয়ে আমরা অবহিত হয়েছি এবং এই ভাইরাসটি খুবই এগ্রেসিভ। সে কারণে আফ্রিকার সাথে আমাদের যোগাযোগ এখন স্থগিত করা হচ্ছে।
সকল এয়ারপোর্ট, ল্যান্ডপোর্টে বা দেশের সকল প্রবেশপথে স্ক্রিনিং আরো জোরদার করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একই সাথে সারা দেশেই স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে ও মুখে মাস্ক পড়তে উদবুদ্ধ করতে সকল জেলা শহরের প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।"
ভাইরাসের এই নতুন প্রকরণ দক্ষিণ আফ্রিকায় সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত হয়; এরপর বেলজিয়াম, বতসোয়ানা, ইসরায়েল এবং হংকংয়ে এটি শনাক্ত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা এখনো এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে গবেষণা করছেন। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান ভ্যাকসিনগুলো নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে ব্যর্থ হবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত মূল করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের ওপর ভিত্তি করে গবেষকরা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করেন। কিন্তু নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের স্পাইক প্রোটিন মূল ভাইরাসের মতো নয় বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক স্বাস্থ্য সংস্থা হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, প্রাথমিকভাবে বি.১.১.৫২৯ নামে পরিচিত এই ভ্যারিয়েন্ট দক্ষিণ আফ্রিকার প্রায় সমস্ত প্রদেশে বাড়ছে বলে মনে হচ্ছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টটির সংক্রমণ প্রতিরোধে এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলো কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পরিকল্পনা করছে। সিঙ্গাপুর এবং ভারত ইতোমধ্যে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ এবং করোনা পরীক্ষা জোরদারের ঘোষণা দিয়েছে।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) থেকে দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আটটি দেশের ফ্লাইটে নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শুধুমাত্র মার্কিন নাগরিক এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দাদেরকে এই দেশগুলো থেকে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে।
ব্রিটেন সাময়িকভাবে দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া, বতসোয়ানা, জিম্বাবুয়ে, লেসোথো এবং এসওয়াতিনি থেকে আসা ফ্লাইটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কিছু দেশ এবং সুইজারল্যান্ডও সাময়িকভাবে দক্ষিণ আফ্রিকান দেশগুলো থেকে ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে।