এবার উখিয়া থানার ওসিসহ ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা
কক্সবাজারের উখিয়া থানার ওসি মর্জিনা আকতারসহ চার পুলিশ সদস্যের বিরদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এ মহেশখালীর এক তরুণী (২২) মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
নারী নির্যাতন আইনের ৯ (১)সহ মামলায় ৩২৩/৩২৪/৩৪২/৩৭৯/৫০৬ দণ্ডবিধি মতে অভিযোগ আনা হয়েছে। নারী ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট একরামুল হুদা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, কনস্টেবল মো. সুমন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নুরুল ইসলাম ও এএসআই মো. শামীম। আর মামলার বাদী মহেশখালী উপজেলার কালারমারছরার ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি কক্সবাজারের একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থী।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, কনস্টেবল মো. সুমনের (বর্তমানে রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কর্মরত) সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ সুবাদে বিয়ের কাবিনের কথা বলে গত ৭ জুলাই বেলা দুইটার দিকে ওই তরুণীকে খুনিয়াপালং চেকপোস্ট সংলগ্ন তার কক্ষে নিয়ে যান সুমন। কাজি আসার অপেক্ষার অজুহাতে কক্ষে বসিয়ে রাখেন। পরে ধর্ষণ করেন।
এরপর চেকপোস্টের পার্শ্ববর্তী একটি দোকানে বসিয়ে রেখে জরুরি কাজের বাহানা দিয়ে পালিয়ে যান সুমন। অবশেষে রাত এগারোটার দিকে বিষয়টি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে ফোনে জানান ভুক্তভোগী তরুণী।
আরও উল্লেখ করা হয়, পুলিশ কর্মকর্তার কথামতো উখিয়া থানায় গেলে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেন উখিয়া থানার ওসি মর্জিনা আকতার। এরপর অভিযুক্ত অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তার সহযোগিতায় তাকে কক্ষে আটকিয়ে রেখে ব্যাপক মারধর ও নির্যাতন চালানো হয়।
এমনকি পায়ে রশি ও পরনের হিজাব দিয়ে চোখ বেঁধে একটি কক্ষে ঢুকিয়ে রাখারও অভিযোগ আনেন ভিকটিম। মামলার আর্জির সঙ্গে নির্যাতনের কিছু ছবিও যোগ করেন তিনি।
নারী ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট একরামুল হুদা বলেন, বাদিনীর অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ সম্পর্কে জানতে উখিয়া থানার ওসি মর্জিনা আকতারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে, ৭ জুলাইয়ের ঘটনাটি প্রকাশের পর গণমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, ওই তরুণীকে তার থানায় নির্যাতন করার তথ্যটি সঠিক নয়।
মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর স্টেশনে থেকে দায়িত্বপালন করা যায় কি না বা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে- এমন প্রশ্নে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, মামলার কাগজপত্র হাতে পেলে আইনের বিধিমতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।