কক্সবাজারের ৩০ ভূমি কর্মকর্তার একযোগে বদলি
কক্সবাজারে চলমান মেগা প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে ভূমি মালিকদের জিম্মি করে আদায় করা হচ্ছে কমিশন, এমন অভিযোগ প্রকল্প শুরুর পর থেকেই। এরই সূত্র ধরে, সম্প্রতি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার একজন সার্ভেয়ার 'ঘুষের কোটি টাকা'সহ আটক হন। এরপর এই অফিসের ৩০ ভূমি কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে এই অফিসের চারজন অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, সাতজন কানুনগো ও ১৯ জন সার্ভেয়ারকে বদলি করে আদেশ জারি করা হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার একজন সার্ভেয়ারকে বিপুল পরিমাণ অর্থসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করে। এ ঘটনায় আরও দুই সার্ভেয়ার এখনও পলাতক রয়েছেন, যাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া র্যাব-১৫ জানায়, তারা ঘুষ লেনদেনের জন্য একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের সন্ধান পেয়েছে।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী কক্সবাজার জেলার ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সব কর্মচারীকে তাৎক্ষণিক বদলি নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের তিনটি আদেশের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কর্মরত ৩০ জন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, 'বদলি হওয়া কর্মকর্তারা আগামী ৫ মার্চের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হবেন। অন্যথায় ওইদিন বিকেলে তারা বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) বলে গণ্য হবেন।'
এছাড়াও পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে সার্বিক দায়-দায়িত্ব নিরূপণ করে প্রতিবেদন দিতে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারকে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ওয়াসিম আটক হবার পর আমরাই মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলাম কর্মরত সবাইকে একযোগে বদলি করে নতুন জনবল দিতে। মন্ত্রণালয় বদলির আদেশ দিয়েছে শুনেছি। এখনও কাগজ হাতে আসেনি। অর্ডারে লোকবল পদায়ন করেছে কম। ধীরে ধীরে লোকবল পূর্ণ হবে বলে আশা করছি।
বদলি হওয়া অভিযুক্তদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, এমন প্রশ্নে ডিসি বলেন, মামলায় অভিযুক্তদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তাদের স্বীকারোক্তিতে যাদের নাম আসবে তাদের বিষয়েও খোঁজ নিবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমরাও বিভাগীয় মামলা করে ব্যবস্থা নেব।