কমলাপুর থেকে ৬০০ টাকায় ফার্মগেট!
রাজধানীর কমলাপুর থেকে ফার্মগেটের দূরত্ব মাত্র ছয় কিলোমিটারের মতো। কমলাপুর থেকে প্রতিদিনই এ পথ পাড়ি দিয়ে ফার্মগেটে নিজের অফিসে যান আব্দুস সোবহান। পরিবহন ধর্মঘট চলতে থাকায় সড়কে আছে শুধু বিআরটিসির বাস। সেই বাসের জন্য এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও পাননি কমলাপুরের আব্দুস সোবহান। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে ডাকেন রাইড শেয়ারিং অ্যাপ উবার। কিন্তু ভাড়া দেখায় দ্বিগুণ।
সোবহান দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ডকে বলেন, 'এখন উবারেও ভাড়া বেড়ে গিয়েছে। বিআরটিসির জন্য প্রায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে উবার ঠিক করে ফার্মগেট এসেছি। ভাড়া লেগেছে প্রায় ৬০০ টাকা, যেখানে আগে ৩০০-৩৫০ টাকা লাগত।'
ছেলের বাইসাইকেল চালিয়ে অফিসে
গত বুধবার রাতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করে সরকার। এ ঘোষণার পর ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে শুক্রবার থেকে সারা দেশে বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন মালিকেরা। এতে সাধারণ মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে।
ছেলের বাইসাইকেল চালিয়ে মোহাম্মদপুর থেকে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দূরে বাংলামোটরে অফিস করতে এসেছেন মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা আবুল।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আবুল টিবিএসকে বলেন, 'আমার যা বেতন, সেখানে মোহাম্মদপুর থেকে রিকশা বা সিএনজি দিয়ে আসলে যে খরচ উঠবে তাতে আসলে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে যাবে। তাই ছেলের সাইকেল নিয়েই বের হয়েছি।'
সড়কে বিআরটিসির বাস চললেও তাতে খুব কম যাত্রীই উঠতে পারছেন। এ কারণে অসহায় হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা হচ্ছে অনেক যাত্রীকে।
বিআরটিসির চালক নাজমুল টিবিএসকে বলেন, 'এত যাত্রী শুধুমাত্র বিআরটিসি বাস দিয়ে সামাল দেওয়া সম্ভব না। প্রায় ৬ মাস এ বাসটি ডিপোতে পড়ে ছিল, আজকে সকালে অল্প কিছু মেরামত করে বের করলাম।'
বাস না পেয়ে রিকশা নিয়েও গন্তব্যে যাচ্ছেন অনেকে। কিন্তু তাদের কাছ থেকেও বেশি ভাড়া হাঁকছেন রিকশাচালকরা।
রিকশাচালক জসিম টিবিএসকে বলেন, 'মেইন রোডে আমার গাড়ি চালানো হয় না। পান্থপথে গলির মধ্যেই চালাই, কিন্তু গতকাল থেকে মেইন রোডে দূরের যাত্রীই পরিবহন করছি। অন্য দিনের থেকে গত দুদিন ধরে ইনকামও ভালো হচ্ছে। সবাই ভাড়া বাড়িয়ে নিচ্ছে, তাই আমিও নিচ্ছি।'
আরেক রিকশাচালক বলেন, 'রিকশা চালানো গত দুই মাস ধরে বন্ধ রেখে ছোট একটা ব্যবসা করলেও বাস বন্ধ থাকায় আবার চালাচ্ছি। দিনে প্রায় দেড় হাজার টাকা উপার্জন হচ্ছে। তবে আজকে মেইন রাস্তায় রিকশা অনেক বেড়ে গিয়েছে, ফলে যানজটেও পড়তে হচ্ছে।'