করোনার মধ্যেও সচল পেট্রোপোল-বেনাপোল সীমান্ত
করোনা ভাইরাসের বিশ্ব মহামারি রোধে দেশজুড়ে 'লকডাউন' পালন করছে প্রতিবেশী দুই দেশ বাংলাদেশ ও ভারত। এই অবস্থায় দুই দেশে আটকে পড়া নাগরিকদের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া পেট্রোপোল-বেনাপোল স্থলবন্দর।
বাংলাদেশ ও ভারতের একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গণমাধ্যমটি জানায়, গত সোমবার থেকেই স্থলবন্দর দুটি জরুরি পারাপারের জন্য খোলা রাখা হয়েছে।
(গতকাল) শুক্রবার নাগাদ পেট্রোপোল দিয়ে মোট দুই হাজার ৪০০ মানুষ বাংলাদেশে এসেছেন। আর ভারত গিয়েছেন ৪০০ জন।
দুই দেশের মধ্যে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় এখন এটাই একমাত্র উন্মুক্ত চলাচলের পথ।
পেট্রোপোল বন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখেই এই সীমান্ত পারাপারের পথ খোলা রাখা হয়েছে। এটি ব্যবহার করে গত বুধবার এক বাংলাদেশির মৃতদেহ ফেরত পাঠানো হয়।
মৃত ব্যক্তির নাম ছিল আশরাফ হোসেইন, তিনি দক্ষিণ কলকাতার একটি হাসপাতালে ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর তার আত্মীয়-স্বজন কলকাতা পুলিশের অনুমতিপত্র নিয়ে মৃতদেহ বাংলাদেশে আনেন।
পেট্রোপোল বন্দরের অন্যান্য কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ ভারতে চিকিৎসার জন্য আসেন। এজন্য প্রতি সপ্তাহেই আমাদের অনেক লাশ ফেরত পাঠানোর অনুমতি দিতে হয়। তবে বুধবারের ঘটনাটি একটু ভিন্ন, দেশজুড়ে লকডাউন চলাকালে আমরা এমন অনুমতি দিয়েছি।
তারা আরও জানান, করোনা আক্রান্ত হয়ে কোনো বাংলাদেশি রোগী ভারতে মারা গেলে তার দেহ ফেরত না পাঠিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হতে পারে।
এদিকে উত্তর২৪ পরগণার বনগাঁ এলাকায় বাংলাদেশগামী আড়াইশ'টি পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকা পড়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশগামী ১৮শ ট্রাককে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
মূলত ট্রাকে থাকা পণ্য নষ্ট হলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এমন আশঙ্কা থেকেই তিনি ওই নির্দেশ দেন।
তবে শুধু পণ্য নয়, কলকাতায় নানা কাজে গিয়ে লকডাউনে আটকে পড়া অসংখ্য বাংলাদেশি এখন দেশে ফিরতে চাইছেন।
ভারতের চলমান লকডাউনের কারণে এখন অনেক হোটেল বাংলাদেশি অতিথিদের দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। এই অবস্থায় স্থানীয় বন্ধুবান্ধবের বাসায় থাকতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে।
ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি হাই কমিশনার জানান, তাদের কাছে প্রচুর আবেদন এসেছে এবং পর্যায়ক্রমে সব বাংলাদেশিকে তারা দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের হেড অব চ্যান্সিরি জামাল হোসেইন বলেন, লকডাউনের মাঝেও তারা সপ্তাহের ৭ দিন এবং ২৪ ঘণ্টা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ভারতে আটকা পড়া বাংলাদেশিরা কোনো প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে না বলেও তিনি দাবি করেন।