কিডনিসহ যেকোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিকাত্মীয় ছাড়াও অন্যদের দান করা যাবে : হাইকোর্ট
মানবিক বিবেচনায় কিডনিসহ মানবদেহের যেকোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিকটাত্মীয় ছাড়াও অন্য কাউকে দান করা যাবে কিন্তু কেনাবেচা করা যাবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এছাড়াও নিকটাত্মীয় ছাড়া অন্য কাউকে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করার সুযোগ না থাকা সংক্রান্ত ‘মানবদেহ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন’ এর তিনটি ধারা সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
অবৈধভাবে কিডনি ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইন ব্যবস্থা নিতেও সরকারের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) এই রিটের ওপর জারি করা রুলের নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না।
২০১৭ সালের ২৪ আগস্টে এই রিটের শুনানি শেষে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনের ৩টি ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।
মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন, ১৯৯৯-এর এই তিনটি ধারা হলো ২(গ), ৩ ও ৬।
এছাড়াও ১৯৯৯ সালের আইনের কয়েকটি বিধি প্রণয়নে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছিলেন আদালত।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এসব রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।
রায়ের পর ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন-১৯৯৯-এর ২(গ) ধারায় দাতার সংজ্ঞা দেওয়া রয়েছে। সংজ্ঞায় দাতা হিসেবে নিকটাত্মীয়দের কথা বলা আছে। আর নিকটাত্মীয় বলতে বাবা-মা, ভাই-বোন, পুত্র-কন্যা, চাচা, ফুফু, মামা, খালা ও স্বামী-স্ত্রীকে বলা হয়েছে।
কিন্তু ভারতে এ বিষয়ক আইনে নিকটাত্মীয়ের সংজ্ঞায় ওই ক’জন ছাড়াও নানা-নানি, দাদা-দাদি, খালাতো, মামাতো, চাচাতো ভাই-বোনের কথা বলা আছে।
তিনি বলেন, হাইকোর্ট এই বিধান সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে রাশনা ইমাম বলেছিলেন, ভারতের আইনে বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষ পরিস্থিতিতে নিকটাত্মীয় ছাড়াও অন্যরা দাতা হতে পারবেন। এক্ষেত্রে ওই আইনে নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে কারা বিশেষ পরিস্থিতিতে দাতা হতে পারবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।