কোথায় গেলেন তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা আখুনজাদা
আফগানিস্তান দখলের পরে তালেবানের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের আনাগোনা বেড়েছে কাবুলে। আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন নেতৃত্বের একাংশ। কিন্তু ব্যতিক্রম তালেবান প্রধান হায়বাতুল্লাহ আখুনজাদা । তার অন্তরাল-যাপন নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে, বাড়ছে জল্পনা।
এই প্রথম নয়, বরাবরই আড়ালে থেকেছেন গোষ্ঠীটির সর্বোচ্চ নেতা। ২০১৬ সালে সংগঠনের সঙ্কটকালে তিনি হাল ধরেন। সেই সময়ে ক্ষমতার লড়াইয়ে টুকরো টুকরো হতে বসেছিল সংগঠন। মাথাচাড়া দেয় গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব। তবে দায়িত্ব নিয়েই গোটা সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন আখুন্দজাদা।
পরিকল্পিতভাবেই তার দৈনন্দিন কাজকর্ম জনসমক্ষে তেমনভাবে আনা হয়নি। শুধুমাত্র কিছু বিশেষ বিশেষ দিনে তার বার্তা সর্বসমক্ষে প্রচার করা হত। তালেবানের পক্ষ থেকে আখুনজাদা র একটি ছবি প্রকাশকে বাদ দিলে তার সম্পর্কে আর তেমন কিছু জানা যায় না। তিনি কোথায় রয়েছেন, কী করছেন— সবটাই ধোঁয়াশা। চলতি মাসের মাঝামাঝি কাবুল দখলের পরেও সেই ধারাই অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
তালেবান শীর্ষ নেতার বিশ্বের নজর থেকে আড়ালে থাকার রীতি অতীতেও ছিল। প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মহম্মদ ওমরও নিজেকে আড়ালে রাখতেন। নব্বইয়ের দশকে আফগান সিংহাসন দখলের পরে হাতেগোনা কয়েকবার তাকে কাবুলে দেখা গিয়েছে। কান্দাহারের আবাসে নিজেকে আটকে রেখেছিলেন তিনি। এমনকি কোনও বিশেষ প্রতিনিধি দল দেখা করতে চাইলে অধিকাংশ সময়েই ফিরিয়ে দিতেন তিনি।
আখুনজাদাও ওমরের সেই কৌশল নিয়েছেন বলে মনে করেন একটি আন্তর্জাতিক সংগঠনের এশিয়া বিষয়ক প্রধান লরেল মিলার। আখুনজাদার পূর্বসূরি মোল্লা আখতার মনসুর নিহত হয়েছিলেন আমেরিকান ড্রোন হামলায়। মিলারের মতে, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে নিরাপত্তাজনিত কারণেও তালেবান প্রধান এই কৌশল নিয়ে থাকতে পারেন।
এদিকে আখুনজাদার অনুপস্থিতিতে তার 'মৃত্যুর খবর' নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। যদিও চলতি সপ্তাহে তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, ''শীঘ্রই ওনাকে দেখতে পাবেন।''
পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইমতিয়াজ গুল মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ তালেবান। আমেরিকান সেনার আফগানিস্তান ছাড়ার প্রহর গুনছে তারা। তারপরেই হয়তো সামনে আসবেন আখুন্দজাদা।
- সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা