গণপরিবহনে ভাড়া ডাকাতির মহোৎসব চলছে: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় অর্ধেক যাত্রী বহনের নিদের্শনা উপেক্ষা করে গণপরিবহনগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ২ থেকে ৪ গুণ পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায়ের নামে ভাড়া ডাকাতির মহোৎসব শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এতে করে করোনায় সংকটাপন্ন নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ সংগঠনটির।
আজ রোববার (৪ এপ্রিল) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, গতকাল শনিবার লকডাউনের ঘোষণা আসার পর থেকে দেশে বাস-টার্মিনাল ও বাস কাউন্টারগুলোতে যাত্রী চাপ বাড়তে থাকে। করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ সাপেক্ষে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের শর্তে গণপরিবহন চালানোর সরকারি সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে দূরপাল্লার যাত্রাপথে অধিকাংশ গণপরিবহনে দ্বিগুণ ভাড়া নিয়ে যত সিট ততো যাত্রী বহন করেই দেশের যাত্রী সাধারণ অস্বাভাবিক ভাড়া ডাকাতির শিকার করা হচ্ছে।
সরকার বাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করলেও সিটি সার্ভিসের গণপরিবহন মালিকগণ সরকারি তালিকার পরিবর্তে তাদের ওয়েবিল নির্ধারিত পূর্বের ভাড়া উপর ১০০% যোগ করে ভাড়া আদায় করায় এই ভাড়া কোথাও কোথাও সরকারি নির্ধারিত ভাড়ার ১৮০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
গতকাল রাজধানীর মনঞ্জিল পরিবহনের বাসে শনির আখড়া থেকে মালিবাগ সাড়ে ৯ কিলোমিটার যাত্রা পথে ২৪ টাকার ভাড়ার স্থলে ৫০ টাকা ভাড়া আদায় হয়েছে। চট্টগ্রামে মুরাদপুর থেকে সিএন্ডবি রাস্তার মাথায় ৪ কিলোমিটার রাস্তায় মিনিবাসে পূর্বের ৫ টাকা ভাড়ার স্থলে ১৫ টাকা ভাড়া আদায় করা হয়েছে। চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ থেকে চন্দনাইশের কলেজ গেইট পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার দুরত্বে ৫০টাকার ভাড়ার যাত্রাপথে গতকাল ১৫০ টাকা ভাড়া আদায় করা হয়েছে। প্রতিটি হিউম্যান হলার, অটোটেম্পু, অটোরিকশায় বিদ্যমান ভাড়ার চেয়ে কোথাও দ্বিগুণ, আবার কোথাও তিনগুণ বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
স্বাস্থবিধি বা অর্ধেক যাত্রী বহনের সরকারি নির্দেশনার দোহাই দিয়ে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করলেও যাত্রী তোলার পর ভাড়া আদায় শেষে মাঝপথে গাদাগাদি করে যাত্রী তোলা হচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী চলমান গণপরিবহনে যাত্রী, পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যেও তর্কাতর্কি ও হাতাহাতি মারামারি মতো ঘটনা ঘটছে। সংকটে পতিত দেশের সাধারণ মানুষের উপর গণপরিবহনগুলোর এমন অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের জুলুম থেকে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব।