গাজীপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২৭ পোশাক শ্রমিক
গাজীপুরে এক দম্পতিসহ আরও ১১ পোশাক শ্রমিকের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৬ জন একই পোশাক কারখানার কর্মী। এ নিয়ে জেলায় বিভিন্ন পোশাক কারখানার ২৭ জন শ্রমিক কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলেন। তারা হাসপাতাল ও বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন। শনিবার জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর ইসলাম হোসেন জানান, সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর থানার নয়াপাড়ার আলীম নিট ওয়্যার লিমিটেড কারখানার দুই নারীসহ ৬ জন কর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবারের নমুনা পরীক্ষার প্রাপ্ত ফলাফলে তাদের দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়।
এর আগে, করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় পরীক্ষার জন্য সোমবার তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তারা নিজেদের ভাড়া বাসায় হোম আইসোলেশনে রয়েছেন।
আক্রান্ত ওই ৬ শ্রমিকের মধ্যে দুজনের বাড়ি বগুড়া জেলার নন্দিগ্রামের উপসাগরি গ্রামে। অন্যদের বাড়ি নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া, শেরপুরের নালিতাবাড়ি ও টাঙ্গইলের গোপালপুর থানা এলাকায়।
তিনি আরও জানান, মহানগরের টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন সাতাইশ রোড এলাকার এল উসান ফ্যাশন পোশাক কারখানার এক কর্মী তার স্বামীকে নিয়ে স্থানীয় বাচ্চু মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তার স্বামী স্থানীয় এসিউর নিট ওয়্যার কারখানায় চাকরি করেন। তাদের গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের খালিসাকুরি এলাকায়। লক্ষণ দেখা দেওয়ায় শুক্রবার টঙ্গীর গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হলে রিপোর্টে কোভিড-১৯ পজিটিভ আসে। তাদেরকে ওই হাসপাতালে আসোলেশনে রাখা হয়েছে।
এছাড়াও ভাইরাসটির উপসর্গ দেখা দেওয়ায় সোমবার কোনাবাড়ির আমবাগ এলাকার এমএম নিট ওয়্যার লিমিটেড কারখানার এক কর্মী এবং রোববার কালিয়াকৈর উপজেলার পূর্ব মৌচাক এলাকার লিরিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সুয়িং কোয়ালিটি সেকশনের এক কর্মী ও স্থানীয় সফিপুর এলাকার পান্ডা ফুট ওয়্যার লিমিটেড কারখানার ফিনিশিং সেকশনের এক কর্মীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা শেষে বৃহস্পতিবারের প্রাপ্ত ফলাফলে তাদের দেহেও কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গেছে। আক্রান্ত ওই চার শ্রমিক গাজীপুরে তাদের ভাড়া বাসায় হোম আইসোলেশনে রয়েছেন।
জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম জানান, গাজীপুরের বিভিন্ন পোশাক কারখানার নারীসহ মোট ২৭ জন শ্রমিকের দেহে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সর্বশেষ ১৪ মে'র প্রাপ্ত ফলাফলে ৫টি কারখানার যে ১১ জন পোশাক শ্রমিকের দেহে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে ৯ জন গাজীপুর মহানগরের, আর বাকি দুজন কালিয়াকৈর উপজেলায় শ্রমিক।
এদের মধ্যে তিনজন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে, একজন কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে এবং তিনজন টঙ্গীর গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে আইসোলেশনে রয়েছেন। বাকিরা যার যার বাড়িতে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন।
গাজীপুরে কারখানাগুলোর মধ্যে গত ২৬ এপ্রিল প্রথম কোনো পোশাকশ্রমিকের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।