ঘূর্ণিঝড় আম্পান: চুয়াডাঙ্গায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে চুয়াডাঙ্গায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। আম, কলা, ধান ও পানসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষীরা।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে, ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। তবে জেলা প্রশাসন বলছে, এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়া হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অফিস জানায়, চুয়াডাঙ্গার চার উপজেলায় ১৯৫০ হেক্টর জমিতে ৬৫২টি আম বাগান রয়েছে। এর মধ্যে ১১৭২ হেক্টর জমির আম ঝড়ের কারণে পড়ে গেছে। পান চাষ হয় ১৬১৭ হেক্টর জমিতে, নষ্ট হয়েছে ৬২৭ হেক্টর জমির পান। ১২১০ হেক্টর জমির সব মুগ ডাল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বিক্রির উপযুক্ত মাঠে থাকা কলা নষ্ট হয়েছে ৬৬৪ হেক্টর জমির। বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে দুই হাজার হেক্টর জমির। সবজির ক্ষতি হয়েছে ৭৩৭৫ হেক্টর জমির মধ্যে ১৭৭৪ হেক্টর জমির। তরমুজ, পাটসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
অফিসটি আরও জানায়, কয়েক দিন পর নষ্ট হওয়া ফসল ও আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নির্দিষ্টভাবে বলা যাবে।
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা হাটবোয়ালিয়া গ্রামের কৃষক সোহেল হুদা বলেন, মাঠে তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। কিন্তু ঝড়ের কারণে পাট গাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। পাটের ফলন ভাল হবে না। লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
চুয়াডাঙ্গা গাইদঘাট গ্রামের আম বাগান মালিক আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমার ছোট-বড় মিলিয়ে তিনটি আমের বাগান রয়েছে। রাতের ঝড়ে বাগানের প্রায় সব আম পড়ে গেছে। যার কারণে সম্পূর্ণ লোকসান হবে। কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হল এ মৌসুমে। কাঁচা আমের দাম নেই। তাই বাগানে ফেলে রাখতে হচ্ছে। কারণ যে টাকা খরচ করে আম বাজারে নিয়ে বিক্রি করবো তাতে ক্ষতি হবে।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা রামনগর কলাবাড়ি গ্রামের কৃষক রোকন মিয়া বলেন, মাঠে সাড়ে চার বিঘা জমিতে পাঁকা ধান রয়েছে। ঝড়ের কারণে মাটিতে পড়ে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ধান নষ্ট হয়ে যাবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলি হাসান বলেন, ঘূর্ণিঝড় চুয়াডাঙ্গায় আঘাত হানার সম্ভাবনা ছিল না। ঝড়ের কারণে আম, ধান, কলা, সবজিসহ বিভিন্ন ফসল আক্রান্ত হয়েছে। কত টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে এখন বোঝা যাবে না। কয়েক দিন সময় লাগবে। বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কৃষকদের তালিকা করে ক্ষতি পূরণ দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, ঝড়ের কারণে জেলায় অনেক ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের সহযোগিতা করা হবে। ক্ষতির পরিমাণটা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।