জামিনে মুক্ত রূপপুরের বালিশ কাণ্ডের ঠিকাদার
'বালিশ কাণ্ড' হিসেবে আলোচিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের আবাসন প্রকল্পে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার প্রকল্প ঠিকাদার শাহাদাত হোসেন জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার পাবনা জেলা ও দায়রা জজ মকবুল আহসানের আদালত তার আবেদন মঞ্জুর করেন। এদিন বিকেলেই তিনি কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্ত হন।
চারদিন আগে জামিন পেলেও সাজিন কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের সত্ত্বাধিকারী ও আলোচিত ঠিকাদার শাহাদাত হোসেনের মুক্তির বিষয়টি সোমবার গণমাধ্যমে আসে।
শাহাদতের জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন। তবে এখনো তার হাতে জামিনের কাগজপত্র আসেনি বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, গত বছরে মামলা হওয়ার পর থেকেই তারা জেলে ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তারা হাই কোর্টসহ আদালতে জামিন আবেদন করলেও আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।
দুদক সূত্র জানিয়েছে গত বৃহস্পতিবার পাবনা জেলা ও দায়রা জজ মকবুল আহসানের আদালতে জামিন আবেদন করলে বিচারক নথি যাচাই-বাছাই শেষে তার জামিন মন্জুর করা হয়। এ সময় দুদকের আইনজীবী হিসেবে ওবাইদুল হক ও আব্দুজ জাহিদ রানা এবং বাদী পক্ষে আইনজীবী হিসেবে সনৎ কুমার সরকার ও সাহাবুদ্দিন সবুজ উপস্থিত ছিলেন।
দুদকের এজাহারে বলা হয়েছে, প্রকল্পের দুইটি ভবনের জন্য কেনা বালিশের মধ্যে একটি বালিশের পেছনে ব্যয় দেখানো হয়েছে ছয় হাজার ৭১৭ টাকা। এর মধ্যে বালিশের দাম পাঁচ হাজার ৯৫৭ টাকা এবং সেই বালিশ ফ্ল্যাটে ওঠানোর খরচ ৭৬০ টাকা দেখানো হয়। রূপপুরে ভবনের জন্য অস্বাভাবিক দামে আসবাবসহ এসব অন্যান্য সামগ্রী কেনায় দুর্নীতি এবং কেনাকাটার অনিয়মের অভিযোগে ৩১ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় গত ১৩ ডিসেম্বর ১৩ জনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে পৃথক চারটি মামলা করে দুদক। দুদকের উপ-পরিচালক নাসির উদ্দিন ও উপ-সহকারী পরিচালক শাহজাহান মিরাজ বাদী হয়ে পাবনা দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাগুলো করেছিলেন। এর মধ্যে দুইটি মামলায় শাহাদতের নাম রয়েছে বলে জানায় পাবনা দুদকের সংশ্লিষ্টরা। মামলার পরপরই ১৩ আসামিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
শাহাদতের জামিনের সময় আদালতে উপস্থিত থাকা দুদকের আইনজীবী ওবাইদুল হক বলেন, আদালতের জামিন মঞ্জুর হওয়ার পরপরই আমরা সার্টিফাইড কপির জন্যে আবেদন করেছি। কপি পেলে আমরা দুদক ঢাকা কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেব। সেখান থেকে যে নির্দেশনা আসবে সেটাই আমরা ফলো [অনুসরণ] করব। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর পাবনায় দুদক এ দুই মামলা হয়। তারপর থেকে কারাগারেই আছেন শাহাদত হোসেন। এই জামিনের পর যোগাযোগ করা হলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, এটা নিয়ম যে—উচ্চ আদালত কারো জামিন আবেদন না মঞ্জুর করলে নিম্ন আদালত তা মঞ্জুর করতে পারে না।