অবশেষে জামিন পেলেন ঝুমন দাস
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা সুনামগঞ্জের শাল্লার ঝুমন দাসকে ১ বছরের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ঝুমনের আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার তার জামিন আদেশ দেন।
অভিযোগ ওঠে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হককে নিয়ে ঝুমন দাস আপত্তিকর পোস্ট দিয়েছেন।
তার এ পোস্টের সূত্র ধরে গত ১৭ মার্চ সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে ৯০টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, হামলাকারীরা বাড়িগুলোতে লুটপাটও চালান।
গ্রামে সম্ভাব্য হামলা এড়াতে পুলিশ আগের দিনই (১৬ মার্চ) ঝুমনকে আটক করে, কিন্তু তাতে হামলার ঘটনা ঠেকানো যায় নি।
ঝুমনকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১৭ই মার্চ সুনামগঞ্জ আদালতে হাজির করা হয়। আদালত সেদিন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তখন থেকে কারাগারেই ছিলেন ঝুমন।
এই ঘটনা দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বকুল মজুমদার ও পুলিশ শাল্লা থানায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের করে।
হামলার পরের দুই দিনে অন্তত ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে ১৯ মার্চ, নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি শহিদুল ইসলামকে (৫০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
ঝুমন দাস এ পর্যন্ত সাতবার জামিন আবেদন করেছেন। তার আইনজীবী জানান, একাধিকবার জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ার পর, তিনি হাইকোর্টের কাছে জামিন চেয়ে নতুন আবেদন করেন।
প্রসঙ্গত, ঝুমনের গ্রেপ্তারের পর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠন তার মুক্তির সপক্ষে দাবি জানিয়ে আসছে।
ঝুমনের মুক্তির দাবিতে তার স্ত্রীও তাদের এক বছরের শিশুসন্তানকে সাথে নিয়ে শহরের বিভিন্ন সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত নানা কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।