নিলামের অপেক্ষায় ৩০ বছর, ক্ষয়ে যাচ্ছে ৭টি গাড়ি
দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে নিলামের অপেক্ষায় আছে ৭টি দামি গাড়ি। খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে গাড়িগুলো এখন আবর্জনায় পরিণত হয়েছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এসব গাড়ির মালিক। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এতোদিনেও নিলাম প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় ঝোপ-জঙ্গলে পড়ে নষ্ট হয়েছে গাড়িগুলো। গাড়ির ভেতরে নিশ্চিন্তে বাসা বেঁধেছে ইঁদুর। অথচ সময়মতো নিলাম হলে সরকারের কোষাগারে জমা হতো কয়েক লাখ টাকা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ব্যবহার অনুপযোগী ও অকেজো গাড়িগুলো খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। গাড়ির ভেতর ও বাইরের সব কলকব্জা মরিচা ধরে ক্ষয়ে গেছে গাড়িগুলো। এখন এসব গাড়ির কোনো যন্ত্রাংশই কাজে লাগানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৮৯-৯০ সালের দিকে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে ৭টি জিপ গাড়ি মেরামত অযোগ্য হয়ে পড়ে। ল্যান্ড রোভার, ইসুজু ও ভিটারাসহ বিশ্বের নামি দামি কোম্পানির গাড়ি ছিল এগুলো। এগুলোর নিলামের ক্ষেত্রে এ দীর্ঘ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন অফিসে চিঠি চালাচালি ছাড়া আর কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। বৈদেশিক সংস্থার ৩টি গাড়ি থাকায় নিলাম প্রক্রিয়া শেষ করতে এতো সময় লাগছে বলে অজুহাত দেখালেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
নিলামের উদ্যোগ নেয়ার পর থেকে চলতি বছরের গোড়ার দিকে কুড়িগ্রাম বিআরটিএ অফিস চারটি জিপ গাড়ি অকেজ ঘোষণা করে প্রতিবেদন দেয়ার আগে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কোনো ফাইলও ছিল না। প্রান্তিক ও খামার পদ্ধতিতে শস্য নিবিড়করণ প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্প থেকে পাওয়া এসব গাড়ি কর্মকর্তারা ব্যবহার করতেন।
এরমধ্যে তিনটি গাড়ি বৈদেশিক সংস্থার হওয়ায় স্থানীয় বিআরটিএ অকেজ বা মেরামত অযোগ্য ঘোষণার প্রতিবেদন দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। তবে কমিটির মাধ্যমে অকেজ ঘোষণা করা যেতে পারে বলে মতামত দেন তারা। এ নিয়ে গত ২৯ এপ্রিল রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালককে এসব বিষয় জানিয়ে কমিটি গঠনের অনুরোধ জানালেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানান কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান।
তিনি বলেন, কমিটি গঠন না হওয়ায় নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিআরটিএ নিলাম প্রক্রিয়ার জন্য মূল্য নির্ধারণ করবে।
গাড়িগুলো নিলামের দীর্ঘসূত্রিতার কারণ সম্পর্কে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান বলেন, "আমি যোগদানের পর বিভিন্ন বাধা সত্বেও ঢাকা অফিসে কথা বলে মোটরযান পরিদর্শককে এনে প্রতিবেদন নিয়েছি। এরপর একটি কমিটি গঠন ও ঢাকা অফিস থেকে নিলাম আহ্বানের অনুরোধ জানিয়ে চার মাস আগে চিঠি দিয়েছি। তবে এর কোনো প্রতি উত্তর এখনো আসেনি।"