নোয়াখালীতে মন্দিরে হামলার ঘটনায় জামায়াত-বিএনপি নেতাসহ আরো ১১ জন গ্রেপ্তার
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ গৌর নিত্যানন্দ বিগ্রহ (ইসকন) মন্দির, শ্রী শ্রী রামঠাকুর চন্দ্র মন্দির ও শ্রী শ্রী রাধামাধব জিউর মন্দিরসহ বিভিন্ন মন্দিরে হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় আরো ১১জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বিএনপি, জামায়াত, স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা রয়েছে।
সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম।
গ্রেপ্তারকৃত নেতারা হচ্ছেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ফয়সাল ইনাম কমল (৩৯), বিজবাগ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা মো. হারুনুর রশিদ (৪৮), জেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রায়হান (৩৮), চরমটুয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ফয়সাল বারী চৌধুরী (৪৫), ছাত্রদলের সদস্য সচিব বেলায়েত হোসেন (২৬)।
অপর গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন, বেগমগঞ্জের মীরওয়ারিশপুরের আলাউদ্দিন (২৮), নরোত্তমপুরের ফজলুর করিম সুমন (৩২), চরহাজারীর মিন্টু (২৩), ছয়ানী টগবার পারভেজ হোসেন (২৯), দক্ষিণ পেয়ারাপুরের আব্দুল বারেক (৫৫) এবং হাজীপুরের আব্দুল বাকী শামীম (৪১)।
পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম জানান, রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত জেলার বিভিন্নস্থানে গোয়েন্দা সহায়তায় পুলিশ ও ডিবি অভিযান চালিয়ে মন্দিরে হামলার সাথে বিভিন্নভাবে জড়িত আরও ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ফয়সাল ইনাম কমল ও হারুনুর রশিদ কুমিল্লার ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক পোস্ট, গোপন বৈঠকসহ বিভিন্ন উসকানিমূলক কার্যক্রম করে আসছিল। এছাড়াও অপরদের ওইদিনের ধারণকৃত সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সেচ্ছাসেবক দলের নেতা কমলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হবে। তার বিরুদ্ধে আগের ৩২টি মামলা রয়েছে এবং বেগমগঞ্জে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোতে তাকে শীঘ্রই গ্রেপ্তার দেখানো হবে। ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি নেওয়ার পর রিমান্ডের আবেদন করা হবে। বেগমগঞ্জের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১টি মামলায় ১৩৫জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারমধ্যে এজাহারভুক্ত ৬৪ জন আসামি রয়েছে।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে গত ১৫ অক্টোবর শুক্রবার বেগমগঞ্জের বিভিন্ন মন্দিরে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ৪ আসামি হামলায় নিজেদের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। ঘটনা তদন্তে পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে একটি, চট্টগ্রাম ডিআইজি কার্যালয় থেকে একটি, জেলা পুলিশ থেকে একটি এবং জেলা প্রশাসক থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।