প্রথমদিন মানিকগঞ্জে চলছে ঢিলেঢালা লকডাউন
করোনা সংক্রমণ রোধে মানিকগঞ্জসহ দেশের সাতটি জেলায় নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ ভোর ৬টা থেকে লকডাউন চলছে মানিকগঞ্জে। তবে তা অনেকটাই ঢিলেঢালাভাবে চলছে। যাত্রীবাহী বাসসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তিন চাকার অটোরিকশা।
মঙ্গলবার সকালে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাসের জন্য অপেক্ষমাণ থাকতে দেখা যায় শতাধিক যাত্রীকে। যাত্রীবাহী কোন পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায় ইঞ্জিনচালিত অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান করে গন্তব্যে যাচ্ছিল এসব যাত্রী।
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ঢাকা-আরিচা মহসড়কের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে সীমাহীন ভোগান্তিতে রয়েছে হাজারো যাত্রী। সীমিতভাবে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে। ব্যক্তিগত ছোট গাড়ির চালক ও যাত্রীদেরকে পড়তে হচ্ছে পুলিশি জেরার মুখে।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডসহ ঢাকা আরিচা-মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় ব্যস্ত রয়েছেন একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট। স্বাস্থ্যবিধি অম্যান্য করে চলাফেরা করার দায়ে জরিমানা গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আলাপ হলে সাভারমুখী যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, সাভারের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন তিনি। জরুরী প্রয়োজনে সোমবার রাতে বাড়ি আসেন। এর মধ্যেই মঙ্গলবার থেকে লকডাউনে চলে আসে মানিকগঞ্জ জেলা। তবে পোশাক কারখানা খোলা থাকায় কর্মস্থলে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই বলে জানান তিনি।
ধামরাইমুখী মধ্যবয়স্ক একজন যাত্রী সাইদুর রহমান বলেন, হঠাৎ করেই লকডাউন ঘোষণা করায় বিপাকে পড়তে হয়েছে। লকডাউনের বিষয়টি অন্ততপক্ষে দুই দিন আগে ঘোষণা করলে এমন ভোগান্তিতে পড়তে হতো না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
যানবাহন চলাচলের বিষয়ে জানতে চাইলে গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশের পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশের টহল টিম কাজ করছে। জেলার প্রবেশমুখ বারবারিয়া থেকে মানিকগঞ্জমুখী সকল যানবাহন আগত পথেই ফেরত পাঠানো হচ্ছে। তবে জরুরী ক্ষেত্রে কিছু যানবাহন ছাড় দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে মানিকগঞ্জ শহর এলাকায় সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। খোলা রয়েছে ব্যাংকিং কার্যক্রম ও জরুরী সেবার আওতামুক্ত দোকানপাট।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, স্বাস্থ্য বিধিসহ অন্যান্য বিষয়ে জনসাধারণদের সচেতন করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিধি অমান্য করে চলাফেরার দায়ে বেশ কিছু ব্যক্তিদেরকে জরিমানা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে এসব অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।
করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে মানিকগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছেন মোট ২২ হাজার ১০৩ জন্য। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ দুই হাজার ৪৩৭ জনের। যার মধ্য থেকে এরই মধ্যে সুস্থ হয়েছে দুই হাজার ২৯৭ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৪৮ জন। বাকিরা জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।