বগুড়ায় ১ লাখ দোকান কর্মচারী পরিবার নিয়ে সংকটে
বগুড়ায় কর্মহীন দোকান কর্মচারীদের অধিকাংশই মার্চ মাসের বেতন না পাওয়ায় সংসার চালাচ্ছেন ধার দেনা করে। করোনা ভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে বগুড়ায় বড় বড় মার্কেটের পাশাপাশি ছোট দোকানগুলো সরকারি নির্দেশে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছেন অন্তত ১ লাখ দোকান ও বাণিজ্যিক কর্মচারী।
প্রশাসনিক কর্মকর্তারা জানান, এসব সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বগুড়া সদর উপজেলা দোকান ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শ্রী রতন রায় জানান, গত ২৬ মার্চ এর পর থেকে বগুড়ার ১২টি উপজেলায় বেকার হয়ে আছেন দোকান ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করা প্রায় ১ লাখ কর্মচারী। এদের একটি বড় অংশই সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার টাকা নেন বেতনের অংশ হিসেবে। গত তিন সপ্তাহ ধরে এ শ্রেণীর শ্রমিকদের অধিকাংশই সংসার চালিয়েছেন জমানো টাকায়। এখন তাদের হাতে আর টাকা নেই চলতে হচ্ছে ধার দেনা করে।
ওই সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ এনামুল হক জানান, বগুড়া শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথার এক বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে মার্কেট আছে অন্তত ৫০টি। আর ছোট বড় দোকান আছে কমপক্ষে ৩ হাজার। এসব মার্কেট আর দোকানের অন্তত ২০ হাজার কর্মচারী অধিকাংশই এখনো মার্চ মাসের বেতন পাননি।
"শাড়ী প্যালেস, মামুন এন্ড ব্রাদার্স, রুপসী বাংলা, লাকী ক্লথ স্টোর, আচঁল ও বীণা ক্লথ স্টোর" এর মত কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কর্মচারীদেরকে ডেকে তাদের মার্চে মাসের বেতন দিয়েছে বললেন মোঃ এনামুল হক।
বগুড়া ছহির উদ্দিন নিউ মার্কেটে প্রায় ২৮ বছর ধরে কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন মোঃ বুলবুল আহম্মেদ। মক্কা ক্লথ স্টোরের এ কর্মচারী জানান, গত তিন সপ্তাহ ধরে তিনি কোন বেতন পাননি। সাধারণত সপ্তাহের শেষে বেতন নিয়ে তিনি সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনেন।
"আমার সংসার এখন চলছে ধার দেনা করে। বেতন না পাওয়ায় খুব কষ্টে আছি পরিবারের লোকজন নিয়ে" বললেন, মোঃ বুলবুল আহম্মেদ।
আরেক দোকান কর্মচারী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি মাসিক বেতনের অংশ নেন শনি থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে। কিন্তু গত তিন সপ্তাহ ধরে তার হাতে কোন টাকা আসেনি প্রতিষ্ঠান থেকে।
বগুড়া কোর্ট চত্ত্বর এলাকার চশমার দোকান দৃষ্টিদান- এ কাজ করেন কর্মচারী রতন কুমার সিংহ। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে তার কোন কাজ না থাকায় পরিবার সদস্য নিয়ে সংকটে আছেন। তার পরিবারের সদস্যদের চাওয়া এখন ত্রাণ।
বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ জানান, দোকান মালিকরা যেন মার্চ মাসের বেতন খুব দ্রুত কর্মচারীদের দেন এ বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য বগুড়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাট্রিজ নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, "আমরা আশা করছি মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে দোকান কর্মচারীদের মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করবেন প্রতিষ্ঠান ও মালিক পক্ষ।"