বন্দুকযুদ্ধে রোহিঙ্গা নিহত, সেনা পোশাক ও অস্ত্র উদ্ধার
সোমবার (২মার্চ) র্যাবের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' রোহিঙ্গা ৭ ডাকাত নিহতের চারদিনের মাথায় এবার পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' আরও এক রোহিঙ্গা ডাকাত নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (৬ মার্চ) বিকালে কক্সবাজারের টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবিরছড়া মাটি ছিড়া পাহাড়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত অজিউল্লাহ (৩০) টেকনাফের নিবন্ধিত নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সিরাজুল ইসলামের ছেলে এবং ক্যাম্পের ত্রাস হিসেবে কুখ্যাত ডাকাত জকির আহমদের ভাগিনা ও বিশ্বস্ত সহযোুগী বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ সময় ঘটনাস্থল থেকে সেনাবাহিনী, র্যাব ও মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাকসহ তিন ডাকাতকে আটক করা হয়। তারা হলেন টেকনাফের হ্নীলা নয়াপাড়া ক্যাম্পের মৃত আবু তাহেরের ছেলে খুরশেদ আলম (৩৯), জাদিমুরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আবদুর রহিমের ছেলে মো. আমিন (২৫) ও টেকনাফ সদরের রাজারছড়া এলাকার নজির আহমদের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২০)। এ ঘটনায় ওসি তদন্তসহ তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, শুক্রবার বিকালে টেকনাফের হাবিরছড়া মাটিছিড়া পাহাড়ে রোহিঙ্গা শীর্ষ ডাকাত জকিরের অবস্থানের গোপন খবরে সেখানে টেকনাফ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এবিএমএস দোহার নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযানে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদল গুলি শুরু করে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলিতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়। এক পর্যায়ে ডাকাতদল পিছু হটলে ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ৪ রাউন্ড গুলি, তিনটি দেশীয় এলজি, ১০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ২৩ রাউন্ড খালি খোসা ও ২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। এ সময় বিভিন্ন বাহিনীর পোশাকসহ গুলিবিদ্ধ ৪ ডাকাতকে আটক করা হয়।
ওসি বলেন, গুলিবিদ্ধ ডাকাতদের টেকনাফ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গুরুত্ব আহত একজনকে কতব্যরত চিকিৎসক কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, নিহত অজি উল্লাহ ডাকাত জকির গ্রুপের সক্রিয় সদস্য এবং মাদক কারবারে জড়িত ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে তারা বিভিন্ন বাহিনীর পোশাকের আদলে পোশাক বানিয়ে একের পর এক অপরাধ করছিলেন। অপরাধ নির্মূলে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি। বন্দুকযুদ্ধ, অস্ত্র ও ইয়াবা এবং আইনশৃংখলাবাহিনীর পোশাক উদ্ধারের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইনে পৃথক মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে, মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গত নভেম্বরের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে ২০১৮ সালের মে মাসে মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বেড়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় ৭৫ রোহিঙ্গা 'বন্দুকযুদ্ধে' মারা গেছেন। এর মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ৩১, বিজিবির অভিযানে ২২ এবং র্যাবের সঙ্গে ২২ জন 'বন্দুকযুদ্ধে' প্রাণ হারিয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।