বাংলাদেশসহ দক্ষিণপূর্ব এশিয়াকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুসারে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত করা গেছে ৪৮০ জনের মাঝে। আর এতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আটজন।
গত মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এই অঞ্চলের দেশগুলোকে ভাইরাসটির বিস্তার রোধে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহব্বান জানিয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
দক্ষিণপূর্ব এসব দেশের তালিকায় বাংলাদেশও আছে। এই অঞ্চলের যে কয়টি দেশে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশে শনাক্ত করা হয়েছে মাত্র আটজন। শুধুমাত্র নেপাল এবং ভূটানই এরপরের অবস্থানে আছে। দেশদুটিতে যথাক্রমে একজন করে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
শীর্ষে আছে থাইল্যান্ড, সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭৭ জন আর মারা গেছেন একজন। ইন্দোনেশিয়ায় আক্রান্ত ১৩৪ এবং প্রাণহানি হয় ৫ জনের। বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতে ১২৫ জন আক্রান্ত, মৃত্যু হয়েছে বাকি ৩ জনের। কোনো মৃত্যুর ঘটনা ছাড়া শ্রীলংকা এবং মালদ্বীপে যথাক্রমে; ২৮ এবং ১৩ জনের সংক্রমিত হওয়ার কথা জানা গেছে।
এই অবস্থায় গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক ডক্টর পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, 'পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। ভাইরাস যেন আরো মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে না পারে তা নিশ্চিত করতে আমাদের অতিস্বত্ত্বর কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।'
তিনি বলেন, 'বেশি সংখ্যক মানুষের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এটি যদিও একটি ইঙ্গিত যে ভাইরাস সংক্রমণ বিষয়ক নজরদারি কার্যকরভাবে হচ্ছে, তবে কোভিড-১৯ প্রতিহত করতে যে আমাদের আরো আগ্রাসীভিত্তিতে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে সেটিও স্পষ্ট।'
এই অঞ্চলের জন্য ঝুঁকি আরও বেশি হওয়ার কারণ দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশে বিশ্বের একচতুর্থাংশ জনগোষ্ঠীর বসবাস। এই জনসংখ্যা ঘনত্বের কারণেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বরাবর এই অঞ্চলকে ভাইরাস সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের কাতারে ফেলেছে। খবর বিবিসি ও ইউএন নিউজের।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে শনাক্তকরণ, পরীক্ষা, চিকিৎসা, আইসোলেশন ও রোগীর সাথে কারা মেলামেশা করেছিলেন তাদের শনাক্তের ওপর।
পাশাপাশি দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, প্রশাসনিক অলসতা সব মিলিয়ে এখানে একবার করোনার প্রাদুর্ভাব ছড়ালে তা সহজেই মহামারিতে রুপ নিতে পারে।
ডক্টর পুনম ক্ষেত্রপাল সিং জানান, এই অঞ্চলের বেশ কিছু দেশে ইতোমধ্যেই করোনার সামাজিক সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার হুমকি দেখা যাচ্ছে। এমনটা হলে তা মোকাবেলায় সকল কর্তৃপক্ষকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে এর মহামারি রোধ করতে হবে।
হু'র আঞ্চলিক পরিচালক হাত ধোয়া, হাঁচি ও কাশি নিয়ন্ত্রণ এবং সামাজিকভাবে মানুষ থেকে দূরে থাকার ওপর অতিরিক্ত গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, 'শুধু এগুলো মেনে চলার মাধ্যমে সংক্রমণ কমানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়।'