ব্লেড ফ্যাক্টরি প্রকল্প: মেয়াদ শেষে জানা গেল নির্ধারিত স্থানে বাস্তবায়ন করা যাবে না
সরকারের মালিকানাধীন বাংলাদেশে ব্লেড ফ্যাক্টরিটি আধুনিকায়নে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল দুই বছর আগে, ২০১৮ সালে। বাস্তবায়ন শেষ করার কথা ছিল ২০২০ সালে। কিন্তু গত দুই বছরে প্রকল্পের কোনো কাজ হয়নি।
মেয়াদ শেষে জানা গেল, প্রকল্পে যে ভবনে কারখানাটি আধুনিকায়ন করার কথা বলা রয়েছে, সেটা এতই জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ, সেখানে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে না। এজন্য পুরাতন ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মাণ করতে হবে।
সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়া নেওয়া প্রকল্পটিতে কোনো কাজ না হলেও পরামর্শক ও বেতনভাতা বাবদ দুই কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি লিমিটেডে (বিবিএফএল) ডিসপোজেবল রেজর ব্লেড প্ল্যান্ট স্থাপনের প্রকল্পটি সম্প্রতি আবার সংশোধন করা হয়েছে। তাতে ব্যয় বেড়েছে ১৩ কোটি টাকা। সময় বেড়েছে তিন বছর।
বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের প্রতিষ্ঠান বিবিএফএল বর্তমানে 'সোর্ড' ব্র্যান্ডের ডাবল এজ স্টেনলেস স্টিল ব্লেড উৎপাদন ও বাজারজাত করে।
মূল প্রকল্প প্রস্তাবে বিবিএফএল-এ ডিসপোজেবল রেজর ব্লেড প্ল্যান্টটি যে ভবনে স্থাপন করার কথা, টঙ্গির সেই ভবন ৮১ বছরের পুরনো। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯৩৯ সালে ভবনটি নির্মাণ করা হয়। এই ভবনে নতুন প্ল্যান্ট বসানো যাবে না বলে সংশোধিত প্রকল্পে এটি ভেঙ্গে নতুন একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণের কথা বলা হয়েছে।
২৫ কোটি টাকার মূল প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে সংশোধনে এসে দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি টাকা।
এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডের (এবিএল) পরিত্যক্ত গোডাউনে ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরির কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু হয়। এর আগের বছর ব্লেড উৎপাদনের জন্য যুক্তরাজ্যের উইকিনসন সোর্ড কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন।
বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি উৎপাদনে যায় ১৯৮৫ সালে। পরের বছর প্রতিষ্ঠানটিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করা হয়।
বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি লিমিটেডে (বিবিএফএল) এ ডাবল এজ স্টেনলেস স্টিল ব্লেড- এই একটি মাত্র পণ্য উৎপাদন হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে বছরে গড়ে ৩ কোটি ৭৫ লাখ পিস ব্লেড উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও গত অর্থবছরে (২০১৯-২০) উৎপাদন করেছে ৫ কোটি পিস।
কারখানাটি আধুনিকায়নের জন্য নেওয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে, এখানে ডাবল এজ সাধারণ ব্লেডের পাশাপাশি ডিসপোজেবল রেজর ব্লেডও উৎপাদন হবে। প্রাথমিকভাবে ডিসপোজেবল রেজর ব্লেডের অ্যাসেসব্লিং প্লান্ট স্থাপন করা হবে। পরে সেটাকে শতভাগ ম্যানুফেচারিং প্লান্টে রূপান্তর করা হবে।
বিবিএফএল-এর প্রকৌশলী সুমন রেজা জানান, দেশে বর্তমানে ডিসপোজেবল রেজর ব্লেডের চাহিদা প্রায় পাঁচ কোটি। এই ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন করা যাবে ১ কোটির মতো ডিসপোজেবল রেজর ব্লেড। পাশাপাশি সাধারণ ডাবল এজ ব্লেডের উৎপাদন সক্ষমতা বেড়ে দাঁড়াবে ৮ থেকে ১০ কোটি।
দেশে বিবিএফএল ছাড়াও তিনটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ডাবল এজ স্টেইনলেস ব্লেড উৎপাদন করছে।